Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৫

বিশ্বের সর্বোচ্চ রেল সেতু বিস্ফোরণেও ‌থাকবে অটুট

 ‌

The-world-highest-railway-bridge

সমকালীন প্রতিবেদন : সেতু তো নয়, যেন চোখের মণি। বৃষ্টি বা ধসের সময় বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতুর উপর দিয়ে চলাফেরা করা কতটা রিস্কের? জানেন? বিস্ফোরণেও থাকবে একইরকম? আইফেল টাওয়ারের চেয়েও উঁচু বিশ্বের সর্বোচ্চ রেল সেতু উদ্বোধনের দিনক্ষণ এলো সামনে। পাহাড়ে যেন উৎসবের আমেজ।‌ এখনই এই সেতু পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। কি দিয়ে তৈরি এই? এর বিশেষত্বই বা কি? নির্মাণ আর পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষ! প্রধানমন্ত্রীর মোদির হাতেই হবে উদ্বোধন। দেখলেই চোখ ধাঁধিয়ে যেতে বাধ্য।

প্রথমেই জানাই জায়গাটা। জম্মু-কাশ্মীর। তাইতো বরফের রাজ্যে এলেই মানুষ এখন ছুটছে এই সেতু দেখতে। ভারতীয় রেল চেনাব নদীর উপরেই তৈরি করছে বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতু। যার ওজন ১০,৬১৯ মেট্রিক টন। প্রায় ১.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু জম্মু ও কাশ্মীরের রিয়াসি জেলায় তৈরি হয়েছে। শ্রীনগর-বারামুল্লা রেল লিঙ্ক প্রকল্পের অধীনে কাটরা এবং বানিহালের মধ্যে ১১১ কিলোমিটার প্রসারিত রেলপথের সংযোগকারী এই সেতু অলরেডি পর্যটকদের কাছে ভীষণ রকম প্রিয় হয়ে উঠেছে। 

উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেল লিঙ্ক প্রকল্পের অন্তর্গত এই সেতুর উচ্চতা সমূদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩১৫ মিটার। প্রায় ৪৯০ মিটারের সেতুটি ইউএসবিআরএল রেল প্রকল্পের ৯২৭টি সেতুর মধ্যে তৃতীয় দীর্ঘতম। এবার জানুন কিভাবে ডিজাইন করা হয়েছে সেতুটি কে? জম্মু থেকে উত্তরে কাটরা হয়ে দুর্গম পার্বত‍্য পথ বেয়ে উপত‍্যকার প্রবেশপথে রয়েছে সেতু লাগোয়া উচ্চতম স্তম্ভ। 

উপত‍্যকার প্রবেশদ্বার রিয়াসি স্টেশনের একাংশও ওই ১০৫ মিটারের স্তম্ভ বহন করছে। অঞ্জি নালার উপরে তৈরি কংক্রিটের ওই বিরাট স্তম্ভের চারপাশের পাথর আলাদা করে ইস্পাতের জাল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়েছে। যাতে বৃষ্টি বা ধসের কারণে স্তম্ভের ভিতের মাটি আলগা না হয়ে যায়। সেতু নির্মাণের সঙ্গে জড়িত প্রযুক্তিবিদদের দাবি, মাঝারি মাত্রার বিস্ফোরণেও ক্ষতি হবে না এই সেতুর। কারণ, নাশকতা প্রতিরোধের দিকে বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হয়েছে। 

তাছাড়া এই সেতুর নিজস্ব নিরাপত্তাবেষ্টনীও থাকবে। সেতুটা রিখটার স্কেলের ৮ ম্যাগনিচ্যুড পর্যন্ত তীব্রতার ভূমিকম্পও সহ্য করতে পারবে বলে জানিয়েছিলেন তাঁরা। প্রতিকূল আবহাওয়া ও হিমালয়ের রুক্ষ ভূখণ্ডের কারণে সেতুটিকে প্রবল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে, ঠিক সেই বিষয়টাতে মাথায় রেখে নির্মাণ করা হয়েছে বিশ্বের এই সর্বোচ্চ সেতু। 

ওই রেল সেতু তৈরি করতে আনুমানিক ২৮ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে রেলমন্ত্রক সূত্রের খবর। যা প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের থেকেও ৩৫ মিটার উঁচু। ২০০৪ সাল থেকে এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। আর এবার সেই সেতু উদ্বোধনের পালা। ইতিমধ্যেই নির্মাণ এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষানিরীক্ষার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাংলা নববর্ষের পরেই মানে আগামী ১৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বহু প্রতীক্ষিত জম্মু ও কাশ্মীরের রিয়াসিতে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতু উদ্বোধন করবেন। 

উল্লেখ্য, যোগযোগ পরিষেবাকে আরও উন্নত করতে রেল ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে মোদি সরকার। আর বিশ্বের সর্বোচ্চ এই সেতু নির্মাণ তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। একইসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের আশা, এই সেতু কাশ্মীর অঞ্চলকে আরও বেশি উন্নত করবে। শিল্প ও কৃষি পণ্যের বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। এমনকি অর্থনৈতিক উন্নতিরও প্রবল সম্ভাবনা থাকছে।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন