সমকালীন প্রতিবেদন : ২০১৬ সালের এসএসসির শিক্ষক নিয়োগের আটটি কাউন্সিলিং এর মধ্যে পাঁচটি অবৈধ বলে জানালো স্কুল সার্ভিস কমিশন। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা তৈরি হলো বিধাননগরের স্কুল সার্ভিস কমিশনের মূল কার্যালয়ের সামনে। দাবি উঠলো চেয়ারম্যান এবং শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের। একইভাবে আন্দোলন শুরু হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্যদের অফিস ডিরোজিও ভবনের সামনেও।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়ে গেছে। এই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে তুমুল অস্থিরতা তৈরি হয়। এই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠক করেন চাকরিহারা শিক্ষকেরা। সেই সময় শিক্ষামন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেন যে ২১ এপ্রিলের মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন তাদের নিজস্ব ওয়েব সাইটে যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করবে।
আজই ছিল সেই দিন। আজ সন্ধে ছটার মধ্যে সেই তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল এসএসসির। তার আগে এদিন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে এসএসসির কার্যালয় আচার্য ভবনে বৈঠকে বসেন চাকরিহারা শিক্ষকদের ১৩ জনের এক প্রতিনিধি দল। বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন চাকরিহারা কয়েক হাজার শিক্ষক শিক্ষিকা।
বৈঠক শেষে প্রতিনিধিরা বাইরে অপেক্ষারত চাকরিহারা শিক্ষকদের ফোন মারফত জানিয়ে দেন যে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে তাদেরকে জানানো হয়েছে, ২০১৬ সালে শিক্ষক নিয়োগের জন্য মোট যে আটটি কাউন্সেলিং করা হয়েছিল, তার মধ্যে তৃতীয় কাউন্সিলিং পর্যন্ত যারা চাকরি পেয়েছেন। তারাই যোগ্য শিক্ষক। বাকি পাঁচটি কাউন্সিলিংয়ে যারা চাকরি পেয়েছেন তারা অযোগ্য। অর্থাৎ এদিন চাকরিহারা শিক্ষক প্রতিনিধিদের কাছে এসএসসি স্বীকার করে নেয় যে, আর মোট আটটি কাউন্সিলিং এর মধ্যে মাত্র তিনটি কাউন্সেলিং পর্যন্ত বৈধভাবে নিয়োগ হয়েছে।
এই খবর বাইরে এসে পৌঁছাতেই তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয় এসএসসি অফিসের সামনে। আন্দোলনরত চাকরিহারা শিক্ষকেরা এরপর এসএসসি অফিসের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের বাধা দেয় পুলিশ বাহিনী। নতুন করে আরো বেশি পুলিশ কর্মী সেখানে নিযুক্ত করা হয়। একটা সময় পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন চাকরিহারা শিক্ষকেরা। এই মুহূর্তে তারা এসএসসি ভবনের সামনে রাস্তার উপরে বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
চাকরিহারাদের অভিযোগ, 'যদি ৩ নম্বর কাউন্সেলিং এর পর বাকি কাউন্সেলিংগুলি অবৈধ ছিল, তাহলে কেন বাকিদেরকে নিযোগ দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। গোটাটাই গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে এসএসসি। একটা গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত সঠিক তালিকা এসএসসি প্রকাশ করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত চেয়ারম্যানকে তাঁর দপ্তরে আটকে রাখা হবে।' চেয়ারম্যান, শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন আন্দোলনরত চাকরিহারারা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন