Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫

তীব্র গরমে বাইরে ঘরে কর্মরতরা সুস্থ থাকতে কি করবেন?

 ‌

Staying-healthy-in-the-intense-heat

সমকালীন প্রতিবেদন : ধরুন এই তীব্র গরমে বাইরে বেরিয়ে জ্ঞান হারালেন! কি করবেন? এপ্রিল মাসেই এই অবস্থা। এরপর কি হবে? ঘরে বাইরে যারা কাজ করছেন, তারা কিভাবে নিজেদের টেককেয়ার করবেন? কি করবেন গরমে সুস্থ থাকতে? খাওয়া-দাওয়া থেকে লাইফ স্টাইল, সবকিছু কেমন হবে? না, আমরা না। উপায় বলছেন বিশিষ্ট চিকিৎসকেরা। আজকের এই প্রতিবেদনে থাকছে এমনই কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস। 

প্রথম পরামর্শ থাকবে যাঁরা বাইরে কাজ করেন তাঁদের জন্য। বিভিন্ন রকমের কাজের জন্য অনেককেই রোদে পুড়ে ঘুরতে হয়। প্রচণ্ড গরমের কারণে তাঁদের নানা সমস্যার মধ্যেও পড়তে হয়। যেমন খুব ঘাম হয়। ফলে শরীর থেকে প্রচুর ফ্লুইড বেরিয়ে যায়। কেবল জল নয়, সোডিয়াম, পটাশিয়াম সহ ইলেকট্রোলাইট বেরিয়ে যায়। শরীরে যতটা জল থাকা প্রয়োজন, ততটা থাকে না। শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে তাপমাত্রাজনিত একাধিক সমস্যা দেখা যেতে পারে। যেমন হিট ক্র্যাম্প। মাংসপেশীতে কামড় ধরে ডিহাইড্রেশনের কারণে। 

আবার কখনো কখনো মাথা ঘুরে যায়। হতে পারে হিটস্ট্রোকও। সেক্ষেত্রে বাইরে বেরোনোর সময় অবশ্যই বেশি করে জল ক্যারি করুন। তবে শুধু জল খাওয়াই যথেষ্ট নয়। খেতে হবে ইলেকট্রোলাইট। এর একটা ভালো উৎস ডাবের জল। ওআরএসও সঙ্গে রাখতে পারেন। আর ছাতা ব্যবহার করতে ভুলবেন না। সম্ভব হলে সানগ্লাস পরুন। সানস্ক্রিন মেখে বেরোন। ট্যানের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। মাঝে মাঝে মুখে জলের ঝাপটা দিন। এতে আরাম পাবেন। মুখ কাপড়ে ঢেকে বেরোন। সিল্কের জিনিস বা নাইলনের জিনিস পরে বেরবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। রাস্তার ধুলো ধোঁয়া এড়িয়ে চলতে মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। আর বাইরে ঘুরে কাজ করতে হলেও চেষ্টা করবেন ছায়ায় থাকতে।

তবে এই তীব্র গরমে যাঁরা বাইরে বেরিয়ে কাজ করেন তাঁদের খাওয়া দাওয়ার দিকটাও কিন্তু খুব গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। কী খাবেন? ফ্লুইডযুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। যেমন শসা, তরমুজ, আম, লিচুর মতো ফল। এতে শরীরে খনিজ মৌলের ভারসাম্য বজায় থাকবে। আর গরমে রুটির চেয়ে ভাত খাওয়া বেশি উপকারী। এই সময় অতিরিক্ত তেল মশলা দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলা ভালো বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। আর হ্যাঁ, দই বা ঘোল খেতে পারেন। তবে কোল্ড ড্রিঙ্কস ভুলেও নয়। বরং বেশি করে জল খান।  হাইড্রেটেড থাকাটা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।

এবার বলবো অফিসের চার দেওয়ালের মধ্যে কাজ করেন যাঁরা, তাঁদের কথা। বা কিছু মানুষকে ওয়ার্ক ফ্রম হোমও করতে হয়। সারাদিন এসির মধ্যেই কাটান তাঁরা। রোদে ঘুরে কাজ করার মতো অস্বস্তিতে তাঁদের পড়তে হয় না ঠিকই, কিন্তু সারাদিন এসির মধ্যে কাটালেও কিন্তু শারীরিক নানা জটিলতা দেখা যেতে পারে। অতিরিক্ত ঠান্ডার মধ্যে থাকলে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমে যায়। 

আবার অনেক সময় অনেকে একসঙ্গে একটি এসির মধ্যে থাকেন। ফলে কোনও একজনের অ্যালার্জি বা সংক্রমণ থাকলে রোগটা অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। আবার ঠান্ডার মধ্যে অনেকের শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়। হাড়, পেশির ব্যথা বাড়তে পারে। সারাদিন এসির মধ্যে বসে থাকলে ওবেসিটির মতো সমস্যা হয়। ত্বকও শুষ্ক হতে পারে। কিন্তু যে পরিমাণ গরম পড়েছে তাতে এসি ছাড়া থাকাটাও মুশকিল। সে ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। প্রয়োজন বুঝে খাওয়া দাওয়া করুন। হালকা খাবার খান। সঠিক সময়ে ওষুধ খান। 

এসির মধ্যে থাকলেও জল খাওয়া মাস্ট। নইলে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হতে পারে। পারলে ওআরএস এর জল খান। ধূমপান, মদ্যপান, ফাস্ট ফুড অ্যাভয়েড করুন। রাতে বেশিক্ষণ জাগবেন না। সারারাত এসি চালিয়ে রাখতে পারেন। তবে টেম্পারেচার খুব কমাবেন না। যাঁদের অফিসে এসি রয়েছে কিন্তু বাড়িতে নেই, তাঁরা জানলায় ভিজে কাপড় মেলে রাখতে পারেন। এতে ঘর ঠান্ডা হবে। ঘুমও হবে ভালো। ট্রাই করে দেখতে পারেন। 

আর একটা জিনিস অনেকেই করেন যে, গরমে শরীর চর্চা করতে চান না। ভুল করছেন। জেনে রাখুন, শরীরচর্চা করলেই গরমে সুস্থ থাকা যায়। তাই শরীরচর্চা করুন। যারা জিম করেন, তারা জিমে যেতে পারেন। শুধু চোখ কান খোলা রাখবেন। নিজের শরীরের যত্ন নেবেন। একটু নিয়মমাফিক চলবেন। লাইফস্টাইল এর কন্ট্রোল যেন থাকে আপনার নিজের হাতে।‌‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন