Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫

নেতাজি ইন্ডোরের সভায় চাকরিহারাদের কি আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী?

 

SSC-Teacher-with-C.M

সমকালীন প্রতিবেদন : 'নোটিস না পাওয়া পর্যন্ত কাজ করুন', চাকরিহারাদের উদ্দেশ্যে বড় বার্তা মমতার। কিন্তু ভলেন্টারি সার্ভিসে টাকা কোথায়? সত্যিই কি আজ নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরিহারাদের দেখাতে পারলেন বিকল্প দিশা? সত্যিই কি ৬০ দিন ভলেন্টারি সার্ভিস দিলে, সামনের ২০ টা বছর নিশ্চিন্তে থাকা যাবে? কি হলো আল্টিমেটলি আজ নেতাজি ইনডোরে?


সুপ্রিম কোর্টে চাকরি বাতিলের রায়ের ‘পরিবর্তন’ চেয়ে আজই আবেদন জানালো মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক, শীর্ষ আদালতে এমনটাই আবেদন করল পর্ষদ। তাহলে কি কথা দিয়ে কথা রাখার পথে হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী শীঘ্রই? কি হয়েছে আজ সমাবেশে?


দুর্নীতির অভিযোগে এসএসসির ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এক কলমের আঁচড়ে চাকরিহারা প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। আদালতের রায়ের পর রাজ্যজুড়ে শুরু চাকরিহারাদের হাহাকার। যোগ্য বনাম অযোগ্য লড়াইয়ে উত্তপ্ত শহর। তাঁদের বিকল্প দিশা দেখাতে আজ নেতাজি ইন্ডোরে চাকরিহারাদের সমাবেশে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১১:৪৭ এ শুরু হয় চাকরিহারাদের সমাবেশ। 


মুখ্যমন্ত্রী সেই সমাবেশ থেকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বললেন, "যোগ্যদের চাকরি কাড়তে দেব না, এটা আমার চ্যালেঞ্জ। শিক্ষাব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত চলছে। যাঁরা ভালো রেজাল্ট করে এসেছেন তাঁদের চোর বলছেন?" কিন্তু তখনও চাকরিহারাদের মন শান্ত হচ্ছে না। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীর বড় ঘোষণা, "স্কুলে যান, কে বারণ করেছে? সার্ভিস ব্রেক হবে না। ২ মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে সব কিছু করব। কারা যোগ্য আর কারা যোগ্য নয়, আমাদের হাতে তালিকা তুলে দিন। শিক্ষাব্যবস্থাকে ভাঙার অধিকার কারও নেই। আপনাদের কারও কাছে ভিক্ষা করে খেতে হবে না। পড়াশোনা করুন। বাচ্চাদের মানুষ করুন। ভলান্টিয়ারি সার্ভিস দিন। আমরা চাই আইন আপনাদের সুরাহা দিক। মমতাকে শায়েস্তা করতে গিয়ে শিক্ষকদের চাকরি কেড়ে নেবেন না। কারও উসকানি, প্ররোচনা শুনে প্ররোচিত হবেন না।" 

কিন্তু ভলান্টিয়ারি সার্ভিসে টাকা কোথায়? বেতন কোথায়? কিভাবে চলবে চাকরিহারাদের পরিবার? সংসার? সেই প্রসঙ্গে মমতা এদিন বললেন, "গায়ের জোরে ফোর্সফুলি তর্ক করে কিছু হয় না। দু'মাস কষ্ট করলে, ২০ বছর নিশ্চিন্তে থাকবেন।" মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট কথা, "আগে যোগ্যদেরটা ঠিক করতে দিন। আস্থা রাখুন। অযোগ্যদের নথিপত্র দেখব। সেটা নিয়ে আলোচনা করব। প্রথমে আগে যোগ্যদেরটা দেখব। চিন্তা করবেন না। নিশ্চিন্তে থাকুন। যোগ্য-অযোগ্যদের গন্ডগোল লাগাবেন না। বাচ্চাদের শিক্ষা দিন। আমি নিশ্চয় সকলের কথা শুনব। আগে আমাকে তদন্ত করতে দিন। আমি ক্ল্যারিফিকেশন চাইব। আইনের ধারা অনুযায়ী কাজ করব। কারও চাকরি যাক চাই না।" 


কিন্তু স্বেচ্ছাশ্রমের বিষয়টাকে কিভাবে দেখছেন চাকরিহারারা? স্বেচ্ছাশ্রম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতেই মমতা বলেন, "আদালত বলছে বেতন বন্ধ। আমরা দিলে প্রশ্ন করবে। তাই বলছি নোটিস না পাওয়া পর্যন্ত স্কুলে যান। সুস্থ থাকবেন। কাজ চালিয়ে যান।"



এছাড়াও এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন "আমাদের সংকটের মধ্যে এসে দাঁড় করিয়েছেন। আপনাদের শোকে আমরা পাথর হয়ে গিয়েছি। একথা বলার জন্য আমাকে জেলে ভরাও হতে পারে। আই ডোন্ট কেয়ার। আমি লাল, নীল, হলুদ, সবুজ দেখি না। আমি কারও দায় ঝেড়ে ফেলতে পারি না। আমি কেস স্টাডি করে দেখছিলাম। এখনও সুপ্রিম কোর্ট যোগ্য ও অযোগ্য বলতে পারেনি। আসুন আমরা বঞ্চিত ও যোগ্য দু'ভাগে ভাগ করি। চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই। চাকরি কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা আছে। মুখ মুখোশ বুঝতে হবে। প্রথমে সিঙ্গল বেঞ্চে একাদশ-দ্বাদশ বাতিল করে দেওয়া হয়। এরপর ডিভিশন বেঞ্চে যাই। সিবিআইকে কেসটা দেওয়া হয়। আমরা বলেছিলাম বাছুন কে যোগ্য কে অযোগ্য। সহযোগিতা করেছিলাম। যোগ্য ব্যক্তির যাতে চাকরি না যায়, তা আমরা সবসময় চাই।" 


একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা তিনি কারো চাকরি খান নি। বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে নিয়েও বললেন বড় কথা। এদিন তিনি বলেন, "চ্যালেঞ্জ করে বলছি আমি জেনেশুনে কাউকে শাস্তি দিইনি। কারও চাকরি খাইনি। আমি বলেছিলাম, বদলা নয়। বদল চাই। কেন মামলা করলেন? ভুল হতে পারে। ভুল সংশোধনের জন্য সময় দিন। ভুল করা অধিকার। ২০২৪ সালে নির্বাচনের সময় দুর্গাপুরে মিছিল করছিলাম। আমার কাছে খবর এল সুপ্রিম কোর্টে আমরা যখন আপিল করেছিলাম হাই কোর্টের রায়টাকে স্থগিতাদেশ দিতে। বিচারপতি চন্দ্রচূড় করে দেন। আরেকজন প্রধান বিচারপতি এলেন যোগ্য, অযোগ্য না দেখে প্যানেল বাতিল করে দিলেন। বিকাশ ভট্টাচার্যকে আইসোলেট করা উচিত।" 


সবমিলিয়ে এখন দেখার চাকরিহারাদের ভবিষ্যৎ কি? স্বেচ্ছাশ্রম এর কথা মেনে সবাই কি শুরু করবেন তাহলে বিদ্যালয়ে যাওয়া? উত্তর দেবে সময়।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন