সমকালীন প্রতিবেদন : 'নোটিস না পাওয়া পর্যন্ত কাজ করুন', চাকরিহারাদের উদ্দেশ্যে বড় বার্তা মমতার। কিন্তু ভলেন্টারি সার্ভিসে টাকা কোথায়? সত্যিই কি আজ নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরিহারাদের দেখাতে পারলেন বিকল্প দিশা? সত্যিই কি ৬০ দিন ভলেন্টারি সার্ভিস দিলে, সামনের ২০ টা বছর নিশ্চিন্তে থাকা যাবে? কি হলো আল্টিমেটলি আজ নেতাজি ইনডোরে?
সুপ্রিম কোর্টে চাকরি বাতিলের রায়ের ‘পরিবর্তন’ চেয়ে আজই আবেদন জানালো মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক, শীর্ষ আদালতে এমনটাই আবেদন করল পর্ষদ। তাহলে কি কথা দিয়ে কথা রাখার পথে হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী শীঘ্রই? কি হয়েছে আজ সমাবেশে?
দুর্নীতির অভিযোগে এসএসসির ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এক কলমের আঁচড়ে চাকরিহারা প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। আদালতের রায়ের পর রাজ্যজুড়ে শুরু চাকরিহারাদের হাহাকার। যোগ্য বনাম অযোগ্য লড়াইয়ে উত্তপ্ত শহর। তাঁদের বিকল্প দিশা দেখাতে আজ নেতাজি ইন্ডোরে চাকরিহারাদের সমাবেশে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১১:৪৭ এ শুরু হয় চাকরিহারাদের সমাবেশ।
কিন্তু ভলান্টিয়ারি সার্ভিসে টাকা কোথায়? বেতন কোথায়? কিভাবে চলবে চাকরিহারাদের পরিবার? সংসার? সেই প্রসঙ্গে মমতা এদিন বললেন, "গায়ের জোরে ফোর্সফুলি তর্ক করে কিছু হয় না। দু'মাস কষ্ট করলে, ২০ বছর নিশ্চিন্তে থাকবেন।" মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট কথা, "আগে যোগ্যদেরটা ঠিক করতে দিন। আস্থা রাখুন। অযোগ্যদের নথিপত্র দেখব। সেটা নিয়ে আলোচনা করব। প্রথমে আগে যোগ্যদেরটা দেখব। চিন্তা করবেন না। নিশ্চিন্তে থাকুন। যোগ্য-অযোগ্যদের গন্ডগোল লাগাবেন না। বাচ্চাদের শিক্ষা দিন। আমি নিশ্চয় সকলের কথা শুনব। আগে আমাকে তদন্ত করতে দিন। আমি ক্ল্যারিফিকেশন চাইব। আইনের ধারা অনুযায়ী কাজ করব। কারও চাকরি যাক চাই না।"
কিন্তু স্বেচ্ছাশ্রমের বিষয়টাকে কিভাবে দেখছেন চাকরিহারারা? স্বেচ্ছাশ্রম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতেই মমতা বলেন, "আদালত বলছে বেতন বন্ধ। আমরা দিলে প্রশ্ন করবে। তাই বলছি নোটিস না পাওয়া পর্যন্ত স্কুলে যান। সুস্থ থাকবেন। কাজ চালিয়ে যান।"
একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা তিনি কারো চাকরি খান নি। বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে নিয়েও বললেন বড় কথা। এদিন তিনি বলেন, "চ্যালেঞ্জ করে বলছি আমি জেনেশুনে কাউকে শাস্তি দিইনি। কারও চাকরি খাইনি। আমি বলেছিলাম, বদলা নয়। বদল চাই। কেন মামলা করলেন? ভুল হতে পারে। ভুল সংশোধনের জন্য সময় দিন। ভুল করা অধিকার। ২০২৪ সালে নির্বাচনের সময় দুর্গাপুরে মিছিল করছিলাম। আমার কাছে খবর এল সুপ্রিম কোর্টে আমরা যখন আপিল করেছিলাম হাই কোর্টের রায়টাকে স্থগিতাদেশ দিতে। বিচারপতি চন্দ্রচূড় করে দেন। আরেকজন প্রধান বিচারপতি এলেন যোগ্য, অযোগ্য না দেখে প্যানেল বাতিল করে দিলেন। বিকাশ ভট্টাচার্যকে আইসোলেট করা উচিত।"
সবমিলিয়ে এখন দেখার চাকরিহারাদের ভবিষ্যৎ কি? স্বেচ্ছাশ্রম এর কথা মেনে সবাই কি শুরু করবেন তাহলে বিদ্যালয়ে যাওয়া? উত্তর দেবে সময়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন