Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫

‌'‌এভিল আই' কি ভাগ্য বদলাতে পারে? কী এই এভিল আই?

Evil-Eye

সমকালীন প্রতিবেদন : এভিল আই কি সত্যিই ভাগ্যের নিয়ন্তা? নেকলেস কিম্বা ব্রেসলেট এর সঙ্গে, অথবা ইয়ার রিং এ আপনিও কি ঝোলাচ্ছেন এভিল আই? গুচ্ছ গুচ্ছ অভিনেতা অভিনেত্রীর গলা থেকে ছবির ক্যাপশন এর ইমোজিতে দেখা যাচ্ছে এভিল আই! কুনজর থেকে বাঁচাতে পারে কি এই ছোট্ট সিম্বলটা? ফেং শ্যুই কি বলছে? কোথায়, কেন, কিভাবে ব্যবহার করা যাবে এই এভিল আই কে? আসলে কী এই এভিল আই?

ঘন নীল রঙের, গোলাকার কাচের একটি বস্তু। যার মাঝখানটা দেখতে অনেকটা চোখের মতো। এই এক চোখেতেই মন মজেছে সকল তারকার! হলিউডের মডেল, অভিনেত্রী কিম কার্দাশিয়ান থেকে বলিউডের বাদশা শাহরুখ খান, সকলেই মজেছেন এই চোখে। বলিউডের তরুণ ব্রিগেড কিয়ারা, আলিয়া, জাহ্নবী থেকে অনন্যা। আবার দীপিকা, ক্যাটরিনা, প্রিয়াঙ্কা, শিল্পা শেট্টি কুন্দ্রা‌– ইদানীং সকলের গয়নাতেই ‘এভিল আই’-এর ছোঁয়া রয়েছে। 

বিশ্বের তাবড় তাবড় শিল্পপতি থেকে সাধারণ ব্যবসায়ী সকলের শরীরেই এভিল আই। তা দেখে কলেজপড়ুয়া থেকে পাশের ফ্ল্যাটের কিশোরীরাও সেই চিহ্ন দেওয়া গয়না খুঁজছেন। গয়নায় ‘এভিল আই’-এর ব্যবহার শুধুই কি ফ্যাশন ট্রেন্ড? না কি এই বস্তুটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস? কেন সকলেই পরছেন এভিল আই ঝোলানো গয়না?

বেসিক্যালি অন্যের নজর যাতে না লাগে, তা নিশ্চিত করাই কাজ এই ‘এভিল আই’-এর। শিশুদের হাত-পায়ে কালো কার, কোমরে কিংবা গলায় জালকাঠি পরানোর যেমন চল ছিল নজর কাটানোর জন্য, এটাও তেমন। কুনজর তাড়ানোর প্রাচীন এই চিহ্নই এখন ফ্যাশনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। হলিউড, বলিউড হয়ে পৌঁছে গিয়েছে টলিপাড়ার তারকাদের কাছেও। গোটা বিশ্ব এখন একই চোখের দিকে তাকিয়ে।

তবে ইতিহাস বলছে গয়নায় ‘এভিল আই’ ব্যবহারের হুজুগ খুব বেশি দিনের না হলেও এই ‘এভিল আই’ আসলে ৫০০০ বছরেরও বেশি পুরোনো একটি ধারণা। মিশরীয় সভ্যতায় তার আবির্ভাব। পরে পূর্ব ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা, ক্যারিবিয়া, লাতিন আমেরিকা হয়ে এক সময়ে ভারতীয় সংস্কৃতিতেও ঢুকে পড়ে এই বিশেষ চোখ। কুনজর থেকে রক্ষা পেতে ফেং শ্যুই মতে এই এভিল আই ভীষণ কার্যকরী। 

আবার বাস্তুশাস্ত্র মতে, নেতিবাচকতা দূর করে ইতিবাচক শক্তির যোগাযোগ বাড়ায় এভিল আই। কুদৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য বাড়ির বাইরেও লাগানো হয় এটা। অনেকের মতে হার, অ্যাঙ্কলেট, ব্রেসলেট, গলার চেইন, কানের দুল, আংটি, ওয়াচ চেন, চাবির রিং ছাড়াও অফিসেও কারো কুনজর থেকে বাঁচতে ডেস্কে রাখতে পারেন এভিল আই। এমনকি ব্যক্তিগত সুরক্ষা, নতুন গাড়ি বাড়ি ইত্যাদি থেকে খারাপ নজর কাটাতে এভিল আই দারুন ভূমিকা পালন করে বলে মনে করা হয়। 

আর ঠিক এই বিশ্বাস থেকেই ভৌগোলিক কাঁটাতার, ধর্মীয় রীতি রেওয়াজ পেরিয়ে বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে যেতে যেতে ‘এভিল আই’ হয়ে উঠেছে বাঙালির বসার ঘরে কাচের আলমারিতে সাজানো ‘শোপিস’, গাড়ির ‘রিয়ার ভিউ মিরর’ এ ঝুলতে থাকা ‘নজর বাট্টু’, অফিসের ডেস্কে রাখা ‘লাকি চার্ম’। বিশ্ব জুড়ে একটা চিহ্ন নিয়ে এমন উৎসাহ দেখে নড়েচড়ে বসেছে ‘সোয়ারোভস্‌কি’, ‘শ্যানেল’, ‘পিপা বেলা’ র মতো আন্তর্জাতিক ফ্যাশন সংস্থাগুলো। 

লক্ষ কোটি টাকা মূল্যের ‘ইভিল আই’ গয়না এ দেশের মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে এনে দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে ‘ক্যারেটলেন’, ‘ব্লু স্টোন’, ‘মিয়া’র মতো শৌখিন গয়না প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোও। ‘কুনজর’ থাকুক বা না থাকুক, নতুন ধরনের একটি চিহ্ন তো পাওয়া গিয়েছে। গয়না না কিনলেও কেউ কিনছেন সেই চোখের আকারে তৈরি সুগন্ধি মোমবাতি, তো কেউ কিনছেন টেবিল ক্লথ, কোস্টার, টোট ব্যাগ। আর এভাবেই নজর কাড়ছে নজর কাটানোর চিহ্ন।‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন