সমকালীন প্রতিবেদন : আজ, মঙ্গলবার পহেলগাঁও হামলার এক সপ্তাহ পূরণ হল। এই হামলার প্রত্যাঘাতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে সোমবারের পর মঙ্গলবারও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ফের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হল, যা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। জানা গেছে, এই বৈঠকে সেনাবাহিনীকে খোলা ছাড় দিলেন প্রধানমন্ত্রী। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কখন, কিভাবে হামলা চালানো হবে, সেব্যাপারে সেনাবাহিনী নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে কাশ্মীর। তবে এখনও সেখানকার পরিস্থিতি থমথমে। কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে উপত্যকা। হামলার পর সাত দিন অতিক্রান্ত হলেও অধরা জঙ্গিরা। পহেলগাঁওয়ের পরিস্থিতি নিয়ে পৃথক বৈঠকে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
মঙ্গলবার বিকেলে হঠাৎই শীর্ষস্তরীয় বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর সরকারি বাসভবনে ডাকা ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ অনিল চৌহান। অন্যদিকে, এদিনই প্রায় একই সময়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আরও একটি গোপন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহের মন্ত্রকের সচিব সহ বিভিন্ন শীর্ষ সারির আধিকারিকরা। মোদীর সঙ্গে বৈঠকে সিডিএস ছাড়াও ছিলেন সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী, নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠী ও বায়ুসেনা প্রধান অমরপ্রিত সিং।
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পরে কী জবাব দেবে ভারত? এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে গোটা দেশে? আগামী দিনের রণকৌশল স্থির করতে বুধবারও হাই প্রোফাইল বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী। সূত্রের খবর, এই বৈঠকেও থাকতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, সেনা সর্বাধিনায়ক অনিল চৌহান প্রমুখ। জানা গিয়েছে, মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ বৈঠকে বসবে। এরপর নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটি এবং রাজনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভার কমিটি প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বে বৈঠক করবে।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার পর থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। প্রথমে এই ঘটনার দায় স্বীকার করেছিল জঙ্গিগোষ্ঠী ‘লষ্কর-ই-তৈবা’র ‘ছায়া সংগঠন’ টিআরএফ। যদিও পরে দায় অস্বীকার করে তারা। তবে ভারত পহেলগাঁও হামলার জন্য পাকিস্তানকে কাঠগড়ায় তুলেছে।
শুধু তাই নয়, পড়শি দেশের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপও করেছে নয়াদিল্লি। সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। ভারত থেকে চলে যেতে বলা হয়েছে পাকিস্তানিদের। পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে যোগ প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছে পাকিস্তান। তারা দাবি করছে, পহেলগাঁও কাণ্ডের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। পাশাপাশি ‘নিরপেক্ষ তদন্তেরও’ দাবি জানিয়েছে তারা। ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানও কিছু পদক্ষেপ করেছে। ভারতীয় বিমানের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ।
অর্থাৎ বুধবার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হতে চলেছে দিল্লিতে। তার ঠিক আগে আগে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মঙ্গলবারের হাই প্রোফাইল বৈঠক ভারতের বড়সড় কোনও পদক্ষেপের জল্পনা বাড়াচ্ছে। তাহলে কি সেনাকে প্রস্তুত করার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী? নাকি সেনাকর্তা এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকে তিন সেনার অবস্থান জেনে নিলেন প্রধানমন্ত্রী? বৈঠক শেষে সূত্র মারফত জানা গেছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন