সমকালীন প্রতিবেদন : ত্বক থেকে দোলের রং দূর করুন এক নিমেষে। তাও আবার প্রাকৃতিক উপায়। রাসায়নিক-যুক্ত স্ক্রাব বা ক্লিনজার নয়, বরং ঘরোয়া উপায়ে তৈরি করুন বডি স্ক্রাবার। আজ এই প্রতিবেদনে আমরা শেয়ার করব চার চারটে পদ্ধতি। রং হবে দূর, বাড়বে জেল্লা! শুধু হাতের কাছে থাকতে হবে ঘরোয়া কয়েকটা জিনিস।
দোলের দিন রং খেলার পর ত্বকের পরিচর্যার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন ক্ষতিকারক ও জেদি রঙ যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব তুলে ফেলা। আর রং তোলার ক্ষেত্রে বাজারচলতি কোনও পণ্য ব্যবহার না করে ত্বকের যত্নের জন্য ঠান্ডা শসা ব্যবহার করতে পারেন। এটা কিন্তু বেশ উপকারী। কিন্তু কিভাবে এটা ব্যবহার করবেন?
শসার পাল্প তৈরি করুন। তাতে পেঁপে, বেসন, কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এরপর সেই প্যাক সারা মুখে আর শরীরে ব্যবহার করুন। তারপর উজ্জ্বল ও লাবন্য চেহারার ত্বকের জন্য বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তা ধুয়ে ফেলুন। ত্বককে আরাম দিতে, উজ্জ্বল দেখাতে, ত্বক যাতে নিখুঁতভাবে পরিস্কার থাকে, ফুসকুড়ির মতো কোনও র্যাশেসও যাতে বের না হয়, তার জন্য এই বডিস্ক্রাব অত্যন্ত উপকারী।
আর একটা জিনিস মাথায় রাখবেন, গায়ে রং লাগার পর সেটা তোলার জন্য যা সামনে পাবেন, সেটা দিয়েই ঘষবেন না। এতে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। বরং প্রাকৃতিক উপায়ে কিভাবে রং তোলা যাবে, ওই সময় সেদিকে নজর দিন। শসার মতোই আরো একটা জিনিস ত্বকের ক্ষেত্রে খুব উপকারী। অ্যালোভেরা। ত্বকের জন্য খুব ভালো এবং ত্বকে কোনও রাসায়নিকভিত্তিক পণ্যের প্রভাব না দিয়ে সঠিক পদ্ধতিতে ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে।
হোলির পরে ত্বককে ময়শ্চারাইজ করা খুবই প্রয়োজন। কারণ, ক্ষতিকারক রং আপনার ত্বককে শুষ্ক করে তোলে। সেক্ষেত্রে একটা পাত্রের মধ্যে এক চা চামচ তাজা অ্যালোভেরা জেলের সাথে কলা এবং চন্দনের গুঁড়ো, গোলাপের পাপড়ির গুঁড়ো এবং এক চিমটি হলুদ আর দই নিন। প্যাকটি ভালো করে মিশিয়ে মুখে, ঘাড়ে লাগান। কমপক্ষে আধঘণ্টা অপেক্ষা রেখে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন। মুখের মধ্যে ফুটে উঠবে সতেজ ও উজ্জ্বলভাব। তবে, শুধু হোলিতেই নয়, সপ্তাহে একবার এই স্ক্রাবার এমনিও ব্যবহার করলে আপনি উপকার পাবেন।
এবার বলব রান্নাঘরের একটা জিনিস দিয়ে ত্বকের পরিচর্যার কথা। না, হলুদ নয়, ডাল। দোলের পর ত্বকের যত্ন ও রঙ তোলা একসঙ্গে করতে চাইলে ডালের বডিস্ক্রাব দারুন কার্যকরী। এবার প্রসেসটা বলছি। একটা পাত্রের মধ্যে এক টেবিল চামচ উরদ-ডালের ময়দা, এক টেবিল চামচ লাল মসুর ডালের পাউডার নিন। তাতে হালকা গরম জল দিয়ে কয়েক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার চেষ্টা করুন। সারারাত রেখে দিলে ভালো হয়।
এরপর এই ডালের মিশ্রণের সঙ্গে এক টেবিল চামচ ক্যালামাইন পাউডার, দুই টেবিল চামচ দই আর এক চা চামচ বাদাম তেল দিন। এই স্ক্রাবের অতি-পুষ্টিকর বৈশিষ্ট্য জাস্ট কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপনার ত্বকের শুষ্কতা দূর করবে। এবার বলব তাদের কথা, যারা দোলের দিন খুব বিচ্চিরি রকমভাবে আবির ও রঙ খেলতে পছন্দ করেন। তাদের জন্যও রয়েছে সঠিক ও উপযুক্ত ফেসপ্যাক এবং স্ক্রাবার। তাহলে চটপট প্রসেসটা নোট করে নিন।
একটা পাত্রের মধ্যে এক টেবিল চামচ বেসন, দুই টেবিল চামচ চালের গুঁড়ো, দুই টেবিল চামচ চন্দন গুঁড়ো, এক টেবিল চামচ ফ্রেশ ক্রিম, এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল এবং দুই টেবিল চামচ কমলালেবুর রসের সাথে কিছু পোস্ত দানা ও সামান্য হলুদ গুঁড়ো মেশান। স্নানের আগে সারা শরীর ও মুখে অ্যাপ্লাই করুন। তবে একটা জিনিস খুব ভালো করে মাথায় রাখবেন, এই প্যাকটা ব্যবহারের পর ময়েশ্চারাইজিং ও এক্সফোলিয়েটিং প্যাক ব্যবহার করতে একদম ভুলবেন না।
অতএব এবার আর চিন্তার কিছু নেই। রাসায়নিক যুক্ত ও ক্ষতিকারক রং যেমন ত্বক ও চুলের ক্ষতি করতে পারবে না, তেমনই হোলির রং তোলার জন্য রাসায়নিক যুক্ত ক্লিনজার বা ফেসপ্যাক কিংবা বডিস্ক্র্যাবারও ব্যবহার করতে হবে না আপনাকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন