সমকালীন প্রতিবেদন : ২০২৩ সালের একদিনের বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হারের ক্ষত এখনও ভুলতে পারেনি ভারতীয় দল। তবে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেই অতীত ভুলিয়ে দিল রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল। ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে অপরাজিত থেকেই ট্রফি জিতল তারা।
গোটা প্রতিযোগিতাতেই অপ্রতিরোধ্য ছিল ভারত। কী কারণে এতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল দল? আসুন দেখে নেওয়া যাক এর কয়েকটি কারণ। ভারতের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অন্যতম কারণ বিরাট কোহলির ধারাবাহিকতা। এই প্রতিযোগিতায় পাঁচ ম্যাচে ২১৮ রান করেছেন বিরাট। যদিও ফাইনালে মাত্র ১ রানেই আউট হন, তবে গ্রুপ পর্ব এবং নকআউট পর্যায়ে তাঁর ব্যাটই ভারতকে ভরসা দিয়েছে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর শতরান এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ৮৪ রানের ইনিংস দলকে বড় জয়ে সাহায্য করে। তবে চার স্পিনারের দাপটকে ভুলে গেলে চলবে না। ভারতের স্পিনাররা গোটা টুর্নামেন্টে দাপট দেখিয়েছেন। রবীন্দ্র জাদেজা, কুলদীপ যাদব, অক্ষর প্যাটেল এবং বরুণ চক্রবর্তী মিলে নিয়েছেন ২৬টি উইকেট।
মিডল ওভারে রান আটকে রাখার পাশাপাশি নিয়মিত উইকেট তুলে নেওয়ায় প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটাররা সহজে খেলতে পারেননি। তবে সবকিছুর পাশাপাশি ভারতীয় দলের ব্যাটিং গভীরতাও জয়ের অন্যতম কারণ। ভারতীয় দলের ব্যাটিং গভীরতা অন্য দলগুলোর চেয়ে অনেকটাই বেশি ছিল। আট নম্বরে রবীন্দ্র জাদেজার মতো ব্যাটার ছিলেন, যা দলকে অতিরিক্ত শক্তি দিয়েছে।
রোহিত শর্মা, শুভমন গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আইয়ার—এই চার অভিজ্ঞ ব্যাটারই শক্ত ভিত গড়েছেন। সেই সঙ্গে পাঁচ নম্বরে অক্ষর প্যাটেলকে খেলানো ভারতের অন্যতম বড় চমক। তিনি ধারাবাহিকভাবে রান করেছেন, যার ফলে মিডল অর্ডার আরও শক্তিশালী হয়েছে। ফিনিশারের ভূমিকায় ছিলেন লোকেশ রাহুল, হার্দিক পান্ডিয়া ও জাদেজা, যারা শেষ দিকে ঝড় তুলে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে গিয়েছেন।
মহম্মদ শামির দায়িত্বশীল বোলিং ভারতের ট্রফি জয়ের আরও একটি অন্যতম কারণ। ভারতের পেস আক্রমণের মূল ভরসা ছিলেন মহম্মদ শামি। জসপ্রীত বুমরাহ চোটের কারণে দলে না থাকায় শামির উপর বাড়তি দায়িত্ব ছিল। তিনি সেটি দারুণভাবে সামলেছেন। গোটা প্রতিযোগিতায় ৯ উইকেট নিয়েছেন শামি।
এছাড়াও সব ম্যাচ দুবাইয়ে হওয়াতে ভারত অনেকটা সুবিধা পেয়েছে। প্রতিযোগিতায় অন্য দলগুলিকে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে ঘুরতে হয়েছে, কিন্তু ভারত পুরো সময় একই শহরে থেকেছে। এতে যাতায়াতের ধকল কমেছে এবং খেলোয়াড়েরা ফিট থেকেছেন। একই মাঠে প্রতিটি ম্যাচ খেলায় পিচ সম্পর্কে ভালো ধারণা পেয়েছে দল, যা স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণে সাহায্য করেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন