সমকালীন প্রতিবেদন : পলাশ ফুল ডায়াবেটিসের যম! হ্যাঁ, পলাশে শুধু রাঙানোর দিন শেষ! আজকের এই প্রতিবেদনে থাকবে পলাশ ফুলের বিভিন্ন উপকারিতা। আগুন রঙা পলাশ ফুল থেকে ভেষজ আবির তৈরি করে তা দিয়ে রং খেলা তো আছেই, তবে আজ শেয়ার করব পলাশ ফুল কিভাবে মন থেকে শরীর– সবটাই চাঙ্গা করে এক নিমেষে।
এই বসন্তে পলাশ ফুলের বাহার দেখলেই মন চাঙ্গা হয়ে যায়। দোলের দিন আপনার প্রিয় বা ভালবাসার মানুষকে পলাশ ফুল দিয়ে তৈরি অর্গ্যানিক রঙে রাঙানোর মত ভালো অপশন আর কিছু নেই। কিন্তু পলাশের আয়ুর্বেদিক ব্যবহার! সে কথা কি জানা আছে? এটাও কি জানেন, পলাশের মাধ্যমে অনেক রোগ নিরাময় হয়।
তাহলে জেনে নিন চিকিৎসকদের একাংশ কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে পলাশ ফুলকে একটা দুর্দান্ত অপশন হিসেবে মনে করছেন। আসলে পলাশে রয়েছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য, যা গাঁটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে কার্যকর। এছাড়াও চর্মরোগ, পেটের কৃমি, ডায়াবেটিস ও ক্ষত সারাতেও এটা খুবই উপকারী। এমনকি যাঁদের মূত্র বা মূত্রনালী সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে তাঁরাও পলাশ ফুল ব্যবহার করতে পারেন।
তবে ঘরে বসে নিজেরা চিকিৎসা করতে যাবেন না। হিতে বিপরীত হতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কাজ করবেন। আর মনে রাখবেন শুধু ফুল নয়, চিকিৎসকরা বলছেন পলাশের ফুল ছাড়াও এর পাতা ও বাকলেও নানা উপকারী উপাদান রয়েছে, যা খাওয়ার জন্য রয়েছে বিভিন্ন উপায়। মানে ধরুন, কারও পেটে কৃমি হয়েছে। সেক্ষেত্রে এটা গুঁড়ো করে মধু সহ খালি পেটে খেলে মিলবে উপকার।
এছাড়া ক্ষত নিরাময়ের জন্য পাতা ও বাকল পিষে ক্ষতস্থানে পেস্ট করে লাগালে মেলে আরাম। পলাশ পাতার রস খেলে ডায়াবেটিস থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। ত্বক সংক্রান্ত সমস্যায় এই ফুলের পেস্ট যথেষ্ট ভালো কাজ করে। এর পেস্ট চুলকানি ও শুষ্কতার সমস্যা নিরাময়েও কার্যকর। এতে উপস্থিত অ্যাস্ট্রিনজেন্ট ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। অর্থাৎ এই গাছের ফুল, পাতা, ফল বা বীজ চর্মরোগে দারুন কাজ করে।
এই গাছের বিভিন্ন অংশে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি, অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এমনকি ডায়ারিয়ার বিরুদ্ধেও দারুনভাবে কার্যকর পলাশ। এছাড়াও যাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে, তাঁরাও কিন্তু পলাশ ফুল ব্যবহার করতে পারেন। পলাশ ফুলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও পলাশে এমন কিছু খনিজ উপাদান রয়েছে, যা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
ভুলে গেলে চলবে না পলাশ ফুলের নির্যাস পিগমেন্টেশন কমায়। কমায় চুল পড়াও। একইসঙ্গে মনে রাখবেন, পলাশ ফুলের পাতা হজমে সহায়তা করে। গনোরিয়া প্রতিরোধী এবং এতে অ্যান্টিলেপ্রোটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
পলাশ ফুলের রস ঠান্ডা, কাশি, ডিসপেপসিয়া, পেট ফাঁপা এবং কুষ্ঠরোগের জন্যেও ব্যবহার করা হয়। তবে আবারও বলবো, কোনওভাবে পলাশ বা এই গাছের পাতা কিংবা বাকল ব্যবহারের আগে বিশেষজ্ঞের থেকে পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন