সমকালীন প্রতিবেদন : নির্মাণের আগে নির্মাণের সামগ্রী পরীক্ষা হবে ল্যাবরেটরিতে। তাও আবার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে। আর সেখানে গুণগতমান ঠিক থাকলে তবেই নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত হবে সেই সামগ্রী। অভিনব এই উদ্যোগ বাগদা ব্লকের সিন্দ্রানী গ্রাম পঞ্চায়েতের।
উন্নয়নের কাজে রাজ্যের পঞ্চায়েত এবং পুরসভাগুলির খামতি ও অসঙ্গতির অভিযোগ বার বার উঠে আসে। সেখানে মূলত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সরকারি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার অভিযোগ ওঠে। যার জেরে সরকারি টাকা খরচ হলেও অনেক ক্ষেত্রে কাজের মান নিয়ে দেখা দেয় প্রশ্ন।
আর এব্যাপারে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্বেগপ্রকাশ করতে দেখা গেছে বহুবার। এব্যাপারে তিনি স্থানীয় পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলিকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন। সেক্ষেত্রে যে এলাকায় সরকারি প্রকল্পের কাজ হচ্ছে, সেখানে স্থানীয় পুরসভা বা পঞ্চায়েত সঠিকভাবে নজরদারি চালালে নিম্মমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণকাজ করা অনেকটাই বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য।
এবার জেলায় এই সর্বপ্রথম বনগাঁ মহকুমার সিন্দ্রানী গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে সরকারি নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্মাণ সামগ্রীর গুণগত মান পরীক্ষার জন্য চালু করা হল অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি। এবার থেকে ব্লক স্তরে যেকোনো সরকারি নির্মাণের ক্ষেত্রে যাচাই করতে হবে নির্মাণ সামগ্রীর গুণগতমান।
এদিন সিন্দ্রানী গ্রাম পঞ্চায়েতে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হল প্রায় ৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠিত এই অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরির। ২০২২ - ২৩ অর্থবর্ষের টাকা থেকেই এই ল্যাবরেটরি করা হয়েছে বলে জানান সিন্দ্রানী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শম্পা মন্ডল। প্রাক্তন প্রধান ও বর্তমান উপপ্রধান সৌমেন ঘোষ এর সময়কালে দেওয়া প্রস্তাবে অবশেষে সিলমোহর পরল।
এই ল্যাবরেটরি আগামীদিনে সরকারি নির্মাণের কাজের ক্ষেত্রে গুণগতমান পরীক্ষার ফলে রাস্তা, সরকারি ভবন, নালা নির্মানে ব্যবহৃত বালি, পাথর, সিমেন্ট, ইট, লোহা, পিচ প্রভৃতির মান যাচাই করতে পারবে। গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে এই সিভিল মেটেরিয়াল টেস্ট ল্যাবরেটরি যাতে আগামী দিনে বনগাঁ মহকুমা সহ জেলার অন্যত্র চালু করা যায়, সে বিষয়েও বিশেষ ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানান বনগাঁর মহকুমা শাসক উর্মি দে বিশ্বাস।
শুধু সরকারি নির্মাণের ক্ষেত্রেই নয়, ব্যক্তিগত বাড়ি বানানোর ক্ষেত্রেও প্রয়োজনে নির্মাণ সামগ্রীর গুণগতমান পরীক্ষা করে নিতে পারেবেন পঞ্চায়েতের এই ল্যাবরেটরি থেকেই। তাই আর শখের বাড়ি বানানোর ক্ষেত্রে থাকবে না ঠকে যাওয়ার ভয়। নিত্য প্রয়োজনে সাধারণ মানুষের ব্যবহারের সরকারি নির্মানও এবার হবে পাকাপোক্ত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন