সমকালীন প্রতিবেদন : বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল, কিন্তু তারপরেও হাজার হাজার দর্শকের বেগুনি উছ্বাস বলে দিচ্ছিল, নাইট রাইডার্সের জোয়ার কোনও বাধা মানেনা। কিন্তু সেই বিপুল সমর্থনের মাঝেই হারতে হল নাইটদের। শ্রেয়স-গম্ভীরের হাত ধরে যে ম্যাজিকের সূত্রপাত ঘটেছিল, তার খানিকটা হলেও ফিকে লাগল রাহানে-ব্র্যাভোর আমলে। এদিকে জয় দিয়ে শুরু করে এবছর চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাসী বিরাট কোহলি, রজত পতিদাররা। আর ফিল সল্ট, তিনি আজ ইডেনের মাঠে খেলে গেলেন ট্র্যাজিক হিরোর ভূমিকায়।
ইডেনে টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন আরসিবি অধিনায়ক রজত পাতিদার। শুরুতে কুইন্টন ডি’ককের উইকেট হারালেও নাইটদের ইনিংসের হাল ধরেন অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে ও সুনীল নারিন। দুজনের জুটিতে ১০০-র উপর রান উঠে যায়। কিন্তু তারপরই ভেলকি দেখাতে শুরু করেন আরসিবি স্পিনার ক্রুণাল পাণ্ডিয়া।
প্রথমে রশিখ দার ফেরান নারিনকে। হাফসেঞ্চুরি করার পরই ক্রুণালের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রাহানে। তারপর মিডল অর্ডার কার্যত ধসে যায়। ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও রিঙ্কু, দুজনকেই বোল্ড করেন ক্রুণাল। ‘মাসল পাওয়ার’ দেখাতে পারেননি আন্দ্রে রাসেল। প্রাক্তন নাইট স্পিনার সুয়াশ শর্মার বলে আউট হন তিনি। ১০৭ রানে ১ উইকেট থেকে ১৫০ রানে ৬ উইকেট হয়ে যায় নাইটরা।
শেষের দিকে অঙ্গকৃষ রঘুবংশী কিছুটা সামাল দেন। অবশেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রানে থামে নাইটদের ইনিংস। গতবার ইডেন ছিল ব্যাটারদের স্বর্গ। সেখানে ১৭৫ রানের লক্ষ্য একেবারেই বড় কিছু নয়। সেটাকে দেখতে আরও ছোট করে আনলেন দুই ওপেনার ফিল সল্ট ও বিরাট কোহলি। প্রথম জন নাইট প্রাক্তনী।
আরও স্পষ্ট করে বললে গতবার কেকেআর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কারিগর। এবার নিলাম টেবিল থেকে তাঁকে কিনেছে আরসিবি। আর নাইটদের বিরুদ্ধে যেন জানিয়ে দিলেন কেকেআর কী ভুল করেছে! অন্যদিকে কোহলি। টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন। ফর্ম নিয়েও মাঝেমধ্যে কটাক্ষ শুনতে হয়। সেই সব কিছু বাউন্ডারির বাইরে পাঠালেন তিনি।
যে বরুণকে দিনকয়েক আগেও রহস্যময় মনে হচ্ছিল, তিনি যেন রানের প্যান্ডোরার বক্স খুলে দিলেন। তাঁর এক ওভারে সল্ট মারলেন তিনটি চার, একটি ছক্কা। যে হর্ষিত রানা গতবার আগুন ঝরিয়েছিলেন, তাঁকে কার্যত অসহায় মনে হচ্ছিল। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বৈভব অরোরার। তাঁর এক ওভারে উঠল ২০ রান।
প্রথম ৬ ওভারে উঠল ৮০ রান। ওখানেই তো ম্যাচ প্রায় ‘অর্ধেক’ জেতা হয়ে গিয়েছিল। সল্ট ৫৬ করে ফিরে গেলেও রয়ে গেলেন কোহলি। কেন তাঁকে ‘চেজমাস্টার’ বলা হয়, সেটা আবারও প্রমাণ করে দিলেন। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ৫৯ রানে। আরসিবি ম্যাচ জিতল ৭ উইকেটে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন