Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫

সুনীতাদের পৃথিবীতে ফেরার অপেক্ষায় গোটা বিশ্ব

 ‌

International-Space-Station

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌নাসার ঘড়ি অনুযায়ী তখন মঙ্গলবার ভোর ৫ টা ৫ মিনিট, আর ভারতীয় সময় অনুযায়ী তখন সকাল ১০টা ৩৫ মিনিট। ৯ মাস আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে কাটিয়ে স্পেস স্টেশনকে বিদায় জানিয়ে পৃথিবীর পথে পাড়ি দিয়েছেন দুই নভোচর সুনীতা উইলিয়মস, বুচ উইলমোর। সব কিছু ঠিক থাকলে স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৫৭ মিনিটে আমেরিকার ফ্লোরিডা উপকূলে নামবেন মহাকাশচারীরা। ভারতীয় সময় অনুযায়ী তখন বুধবার ভোর সাড়ে ৩টে। গোটা সফর শেষ করতে সময় লাগার কথা ১৭ ঘণ্টা।

২০২৪ সালের জুন মাসে মার্কিন সংস্থা স্টারলাইনারের রকেটে চড়ে মহাকাশ স্টেশনে পাড়ি দিয়েছিলেন নাসার দুই অভিজ্ঞ নভোচর সুনীতা উইলিয়মস এবং বুচ উইলমোর। কথা ছিল, আটদিন পরই ফিরবেন। কিন্তু রকেটে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সেই ৮ দিন গড়াল ৯ মাসে! সবশেষে মহাশূন্যে বন্দিদশা কাটিয়ে এলন মাস্কের পাঠানো ফ্যালকন নাইন রকেটে করে সুনীতা এবং বুচ পৃথিবীর পথে পাড়ি দিলেন। তার আগে চার নভোচরের হাতে তুলে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের সমস্ত কাজের দায়িত্ব।

সুনীতাদের ফেরাতে রবিবার সকালে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছোয় স্পেসএক্সের ড্রাগন যান। তাতে ছিলেন নাসার অ্যান ম্যাক্লেন, নিকোল আইয়ার্স, জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সার প্রতিনিধি টাকুয়া ওনিশি এবং রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমসের প্রতিনিধি কিরিল পেসকভ। তাঁদের মহাকাশ স্টেশনের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে পৃথিবীতে ফিরছেন সুনীতা এবং বুচ।

সোমবার সকাল থেকেই গোটা অবতরণ প্রক্রিয়ার সরাসরি সম্প্রচার করছে নাসা। গোটা বিশ্বের মানুষ সুনীতাদের ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। এক এক মিনিট, যেন এক এক ঘণ্টা! তবুও সকলের একটাই প্রার্থনা, নির্বিঘ্নে পৃথিবীতে ফিরে আসুক ড্রাগন, ফিরে আসুন সুনীতারা! তবে অনেকেরই কৌতূহল, এই ১৭ ঘণ্টা কী কী প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে সুনীতাদের ফিরতে হবে?

মহাকাশ থেকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের আগেই মহাকাশযান তার ডানা খুলে ফেলবে। যানের একটি অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে ড্রাগন থেকে। কিন্তু বায়ুমণ্ডলের তাপ সহ্য করার মতো অনুকূল পরিস্থিতিও তৈরি করতে হবে ড্রাগন যানটিকে। সেই কারণে ওই যানের মধ্যে থাকা বিশেষ তাপ ঢাল খুলবে। তা তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে সুনীতাদের রক্ষা করবে। 

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পরই গতি কমিয়ে ফেলবে যানটি। সেই কারণে চারটি প্যারাশুট খুলে দেবে ড্রাগন যান। তাতে ভর করেই যানটি নেমে আসবে পৃথিবীর বুকে, ফ্লরিডার সমুদ্রে! সেখানে সেই যানকে উদ্ধার করার জন্য থাকবে বিশেষ জাহাজ। তাতে চাপিয়েই উপকূলে ফিরিয়ে আনা হবে সুনীতাদের। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারতীয় সময় ভোর ৩টে ২৭ মিনিট নাগাদ পৃথিবীর মাটি ছোঁবেন তাঁরা।

নাসার সময় সরণী অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাত ৯ টা ১১ নাগাদ অর্থাৎ ভারতীয় সময় রাত ২ টো ৪১ মিনিটে পৃথিবীর কক্ষপথে ঢুকে আবর্তন শুরু করার কথা সুনীতাদের রকেটের। এরপর রাত প্রায় ৯ টা ৫৭ মিনিটে অর্থাৎ ভারতীয় সময় রাত ৩ টে ২৭ মিনিটে ফ্লোরিডার উপকূলে জলভাগে ধীরে ধীরে নামবে ফ্যালকন নাইন ক্যাপসুল। সব ঠিক থাকলে সময় ধরে সফলভাবেই রকেট থেকে বেরিয়ে ভূপৃষ্ঠে পা রাখবেন দুই নভোচর। তাঁদের নিয়ে উৎসবে মাততে তৈরি সহকর্মীরা।

পৃথিবীতে অবতরণের পরেও সুনীতাদের পরীক্ষা শেষ হচ্ছে না। এত দিন মহাকাশে থাকার পর পৃথিবীতে ফিরলে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে নভশ্চরদের। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ দিন ধরে মহাকাশে শূন্য মাধ্যাকর্ষণে থাকার কারণে নানা শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় হেরফের ঘটে। মহাকাশের ‘মাইক্রোগ্র্যাভিটি’ পরিস্থিতি শরীরের মধ্যস্থ তরল ও রক্তচাপের উপর প্রভাব ফেলে। যার ফলে মস্তিষ্কে তরল জমা হতে থাকে। শরীরের রোগ প্রতিরোধশক্তিও দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমতে থাকে ওজন। 





  


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন