সমকালীন প্রতিবেদন : জাস্ট পাঁচটা উপায় মানলেই, আপনি হবেন বড়লোক। আগে ঠিক করুন, কোন ধরনের বড়লোক হতে চান আপনি? চাকরি নাকি ব্যবসা? প্রথমে স্বপ্ন দেখতে শিখুন। চোখ কান খোলা রাখুন। এই প্রতিবেদনে থাকবে এমন কিছু উপায়, যা মানলে আপনি টাকার পেছনে নয়, টাকা আপনার পেছনে ছুটবে। আপনার ধনী হওয়া কেউ রুখতে পারবে না। নির্দিষ্ট কোনো বয়সের দরকার পড়ে না। ভাগ্যের উপরেও নির্ভর করতে হবে না। পদ্ধতি হোক একেবারে আপনার নিজের।
এক্ষেত্রে ধনী হওয়ার জন্য প্রথম যে পয়েন্টটাতে ফোকাস করব, সেটা হলো অল্প বয়সেই একজন বিনিয়োগকারী বা ইনভেস্টর হয়ে ওঠা এবং কনটিনিউইটি বজায় রাখা। হ্যাঁ, যত দ্রুত সম্ভব নিজেকে বিনিয়োগকারী হিসেবে প্রস্তুত করে তুলুন। প্রয়োজনে ছোট কিছু দিয়েই এই বিনিয়োগের হাতেখড়ি করা যায়। আস্তে আস্তে স্টক, বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড এবং অন্যান্য আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
দ্বিতীয়তঃ এই বোকামিটা একদম করবেন না। ভুলেও আয়ের একটা উৎসর উপর নির্ভর করবেন না। আয়ের একাধিক উৎস তৈরি করুন। শুধুমাত্র চাকরি কিংবা একটি নির্দিষ্ট ব্যবসার ওপর নির্ভর করে থাকলে ধনী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ সম্ভব নয়। আয়ের উৎস বাড়াতে হবে। সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। আশপাশের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাড়তি আয় করা যায় কিনা, সেদিকে সবসময় লক্ষ্য রাখতে হবে। সব সময় চোখ কান খোলা রাখুন। যে কোনও আলোচনা থেকে বড় কোনও রোজগারের একটা দিশা তৈরি হতে পারে। কখনও ভাববেন না ওটা আমার কাজ নয়।
ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকেরবার্গ পর্যন্ত বলেছেন, চোখ কান খোলা না থাকলে তিনি কখনই ফেসবুক খুলতে পারতেন না। ইন্টারনেটটা খুব ভালো করে ঘেঁটে ফেলুন। চাকরির পাশাপাশি একটা ছোট ব্যবসা করা যেতে পারে, ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা যায়, অন্যান্য সম্পদ যেমন জমি, ফ্ল্যাট, ঘর ইত্যাদি ভাড়া দিয়ে আয়ের উৎস বাড়ানো যায়। পাশাপাশি লভ্যাংশ দিচ্ছে, এমন যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর শেয়ার বাজারে টাকা লাগানো যেতে পারে।
তিন নম্বর, বড়লোক হব এমন স্বপ্ন দেখা ভালো। ছেঁড়া কাঁথাতে শুয়ে থেকেও লাখ টাকার স্বপ্ন দেখুন। কারণ, আগে কোনও কিছু করতে হলে স্বপ্ন দেখতে হয়। কিন্তু মনে রাখবেন, আগে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে। ডায়েরিতে সেইসব প্ল্যানিং লিখে রাখুন। ধরুন লিখলেন এক বছরের মধ্যে এক লাখ টাকা জমাতে চান। তারপর স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ। দশ মাস পর হিসেব করে দেখুন পরিকল্পনা ঠিক দিকে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না। এবার ধরুন মাসে আপনার বেশি টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে মাসিক খরচ কমাতে একটা বাজেট তৈরি করা যেতে পারে।
বাজেট থাকলে সহজেই প্রতি মাসের বা নির্দিষ্ট সময়ের সমস্ত খরচ এবং খরচ কমিয়ে টাকা জমানোর উপায়গুলো খুঁজে বের করা সম্ভব। বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে মূল প্রাধান্য থাকা উচিত খরচ কমিয়ে টাকা সঞ্চয় এবং অন্য কোনো ব্যবসায় ইনভেস্ট করা। দিনের ২৪ ঘণ্টাকে ভাগ করে নিন। রোজগার করতে হলে পরিশ্রম করতে হবে। কিন্তু তার চেয়েও বেশি করতে হবে সময় পরিকল্পনা। ধরা যাক আপনি চাকরি করেন। মানে ৯-১০ ঘণ্টা আপনি কাজে ব্যস্ত, তারপরের সময়টা কাজে লাগান। ছোট কোনও ব্যবসা থেকে শুরু করুন।
এই বড়লোক হওয়ার জার্নিতে আর একটা জিনিস খুব ইম্পর্টেন্ট। নিজের উপর ইনভেস্ট করুন। দক্ষতা ও জ্ঞান বাড়াতে নিজের ওপরও বিনিয়োগ করতে হবে। অতিরিক্ত আয় করার জন্য যে মেধা ও জ্ঞান প্রয়োজন, তা বাড়াতে পড়াশোনা, ট্রেনিং, যে কোনো ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করা যেতে পারে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত মাস্টার্স করা, বিভিন্ন কর্মশালায় অংশ নেওয়া এবং নতুন কোনো কিছু শিখতে কোর্সে ভর্তি হওয়া, এগুলোর মাধ্যমে নিজের গুণ বাড়ানোর চেষ্টা করুন। এতে কিন্তু ভবিষ্যতে আয় বাড়ানোর পথ আরও প্রশস্ত হবে।
পাঁচ নম্বর খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। দায়িত্ব নিতে শিখুন। রিস্ক নিতে জানতে হবে। প্রথমে নিজের পরিবারকে দিয়ে শুরু করুন। একটু একটু করে দায়িত্বশীল হোন। সুযোগ খুঁজুন, আরো কি কি বা কিসের কিসের দায়িত্ব নেওয়া যায়। ভয় পেয়ে দায়িত্ব থেকে পালানোর চেষ্টা করবেন না। সঙ্গে রিস্ক নিতে শিখতে হবে। সফলতাকে ছুঁতে গেলে বড় পদক্ষেপ বা রিস্ক নেওয়া শুরু করুন। বসে থাকলে বা চিন্তা করলে কখনোই সফল হওয়া যাবে না।
ব্যর্থতাকে জয় করুন। ফেল করবেন, কিন্তু সেটাকে অভিজ্ঞতা হিসেবে ভাবুন। আবার চেষ্টা করুন। ভুল থেকে শিক্ষা নিন। তবে স্বপ্নের মতো রাতারাতি কেউ ধনী হয়ে ওঠে না। যে কেউ এই প্রতিবেদনে আলোচিত পরামর্শগুলো গ্রহণ করে, চেষ্টার মাধ্যমে ধৈর্য্যের পরিচয় দিলে, তার সফলতা আটকে রাখা অসম্ভব। সর্বপরি সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করুন। পরিমিত ব্যয়ের আর্থিক অভ্যাস গড়ে তুলুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন