Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

রাজ্য বাজেটে ডিএ বাড়ল, বাড়ল না লক্ষ্মীর ভান্ডার এর টাকা

 ‌

State-Budget

সমকালীন প্রতিবেদন : ডিএ বাড়ল, কিন্তু বাড়ল না "লক্ষ্মীর ভান্ডার" প্রকল্পের ভাতা। মন ভাঙলো বাংলার মহিলাদের। রাজ্য বিধানসভায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের পেশ করা বাজেটে একের পর এক চমক। পথশ্রী থেকে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান, স্মার্টফোন থেকে বাংলার বাড়ি প্রকল্প, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে কোথায় কত বরাদ্দ? কেন্দ্রের সঙ্গে ফারাক থাকলই, সরকারি কর্মীদের আন্দোলন জলে গেল? নদী কেন্দ্রিক মানুষের দিকে মুখ তুলে চাইল সরকার। আনা হলো "নদী বন্ধন"! ২৬ এর আগে রাজ্য বাজেট থেকে কি কি প্রাপ্তি বাংলার? বাজেট অধিবেশন ওয়াক আউট বিজেপির। একের পর এক ইস্যু তুলে রাজ্য বাজেটের বিরোধিতা করে প্রতিবাদে সরব শুভেন্দু অধিকারী।

 

রাজ্য সরকারি কর্মী থেকে বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের উপভোক্তা, সকলের নজর ছিল বাজেটের দিকে। আলাদা করে নজর ছিল ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প, সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ-র পরিমাণের দিকে। কিন্তু বুধবার বিকেল চারটে নাগাদ রাজ্য বিধানসভায় যখন বাজেট পেশ করলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, তখন সেখানে "আনটাচড" থাকলো লক্ষ্মীর ভান্ডার। অপরিবর্তিত থাকলো রাজ্যের মহিলাদের জন্য এই বিশেষ প্রকল্পের ভাতা। যে লক্ষ্মীর ভান্ডার ভোট বাক্সে বারবার সাফল্য দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে, সেই প্রকল্পে বাংলার মহিলারা রীতিমতো বঞ্চিতই থাকলো এবারের পূর্ণাঙ্গ বাজেটে। 

তবে, রাজ্য সরকারি কর্মীদের ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করা হয়েছে। পয়লা এপ্রিল ২০২৫ থেকে যা কার্যকর করা হবে। তবে এতে খুশি নন দু বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলনরত সরকারি কর্মীরা। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকার দিচ্ছে ৫৩ শতাংশ ডিএ। রাজ্য সরকার দিচ্ছিল ১৪ শতাংশ। চার শতাংশ বেড়ে দাঁড়ালো মোট ১৮ শতাংশ। ৩৫ শতাংশ ঘাটতি রয়েই গেল। আর সেই কারণেই খুশি নন সরকারি কর্মীরা। 

কোন খাতে কত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এবারের বাজেটে দেখব এক নজরে : 

১) ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান এ ৫০০ কোটি বরাদ্দ। 

২) নদী ভাঙ্গন রোধে ২০০ কোটি বরাদ্দ। পাশাপাশি, নদী কেন্দ্রিক মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে "নদী বন্ধন" নামে নতুন প্রকল্পের ঘোষণা রাজ্য বাজেটে। 

৩) পথশ্রী প্রকল্পের জন্য দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ।

৪) বাংলার বাড়ি প্রকল্পে অতিরিক্ত ১৬ লক্ষ যোগ্য গরিব মানুষের জন্য ৯৬০০ কোটি বরাদ্দ।

৫) গঙ্গাসাগর সেতুর জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ। 

৬) ৩৭ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তার জন্য বরাদ্দ হাজার কোটি টাকা।

৭) আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের মোবাইল ফোন দিতে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ। 

৮) আরো ৩৫০ টি সুফল বাংলা স্টল তৈরির জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ। 

৯) ৪৪ হাজার কোটি টাকা গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতে। 

১০) উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য আগামী অর্থবর্ষে ৬,৫৯৩.৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যালয় শিক্ষায় ৪১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ। 

১১) ধান কেনার জন্য নতুন কেন্দ্র তৈরি হবে ২০০ কোটি টাকায়।

এগুলো সমেত বাজেটে নারী ও শিশু কল্যাণে বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে রাজ্য সরকার। বাজেটে সেকথাও ঘোষণা করেন চন্দ্রিমা। তবে চন্দ্রিমার বাজেট পেশের শুরুতেই বিধানসভায় ‘চাকরি চাই’, ‘চাকরি চাই’ স্লোগান দিতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়কেরা। স্লোগান ওঠে আরজি কর নিয়েও। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা একটি কবিতা পাঠ করে বাজেট ঘোষণা শেষ করেন চন্দ্রিমা। 

এদিন, বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়কেরা। বাজেট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কেন্দ্রীয় সরকারি ডিএ-র সঙ্গে রাজ্যের ফারাক তুলে ধরে বিধানসভায় সরকার বিরোধী স্লোগান দেওয়া হয়। শেষে ওয়াক আউট করেন তাঁরা। এই আচরণের সমালোচনা করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বাজেট পেশের পর রাজ্য বাজেটের বিরোধীতা করে শুভেন্দু অধিকারী এদিন স্পষ্টভাবে বলেন, "মহিলাদের জন্য একটা শব্দও খরচ করা হলো না বাজেটে। এটা কৃষক বিরোধী বাজেট। রাজ্য সরকার দেউলিয়া, তা ছত্রেছত্রে প্রমাণিত।"‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন