সমকালীন প্রতিবেদন : মোটা বেতনের চাকরি চান? "সার্ভিস কালী" সহায়! ৮২ বছর ধরে করে চলেছেন মনস্কামনা পূরণ! চাকরির বাজারে যত মন্দা, ততই "সার্ভিস কালী"র নাম ডাক বেড়ে চলেছে হু হু করে। কিন্তু কিভাবে হবে আপনার ইচ্ছে পূরণ? কেনই বা এই দেবী মূর্তির কদর বাড়লো "সার্ভিস কালী" হিসেবে? নেপথ্যে লুকিয়ে কোন কাহিনী? মানত তো করবেন, জানেন কোথায় দেবেন মায়ের পুজো?
বাঁকুড়ার সোনামুখী। এই কালীমন্দিরে মানত করলেই আপনার চাকরি পাকা। না একথা মনগড়া নয়। আসলে এমনটাই বিশ্বাস করে গোটা বাঁকুড়ার মানুষ। এখন তো দেশ থেকে দেশান্তরেও ছড়িয়েছে "সার্ভিস কালী"র নাম। বেড়েছে মায়ের কদর। হওয়াটাই স্বাভাবিক নয় কি? এক দুই নয়, ৮২ বছর ধরে মা একের পর এক চাকরি দিয়েই চলেছেন ভক্তদের। ফেরাননা খালি হাতে। এই বিশ্বাস নিয়েই লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয় বাঁকুড়ার সোনামুখীর 'সার্ভিস কালী' মন্দিরে।
কথিত আছে, আজ থেকে বহু বছর আগে সোনামুখীর ধর্মতলায় একটা কালী পুজো হতো। কিন্তু এক সময় বিবাদের জেরে সেই পুজো দুভাগে ভাগ হয়ে যায়। জানা যায়, ওই সময় স্থানীয় এক পরিবহণ ব্যবসায়ী বাসের রুট পারমিট সংক্রান্ত সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন। ঠিক সেই সময় এলাকায় চালু হওয়া পুজোয় কালীর কাছে মানত করেন তিনি ষোলো আনা দিয়ে। হাজার চেষ্টাতেও পারমিট সংক্রান্ত যে সমস্যা থেকে মুক্তি সম্ভব হচ্ছিল না, পুজো মিটতেই সেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
এরপরেই এই কালীর মহিমা ছড়িয়ে পড়ে। শোনা যায়, এলাকার যুবকদের চাকরির মনস্কামনাও পূর্ণ করেন দেবী। এর পর থেকেই ওই কালীর নাম লোকমুখে ষোলো আনা সার্ভিস কালী হয়ে যায়। আবার কারো কারো কাছে শুধুই "সার্ভিস কালী"! দেবীর গা ভর্তি কত সব দামী গয়না। সরকারি চাকরির মনোবাঞ্ছা পূরণ হওয়ার পর ভক্তরা সেইসব গহনা উপহার দিয়েছেন মাকে।
বিশেষ দিনগুলো ছাড়াও গোটা বছর ভক্তদের ভিড় লেগে থাকে ‘সার্ভিস কালী’ মন্দিরে। দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের চাকরির মানত পূরণ করে সোশ্যাল মিডিয়াতেও এখন বহুল পরিচিত ‘সার্ভিস কালী’। চাকরির বাজার যখন কার্যত ধুঁকছে, তখন "সার্ভিস কালী"র চাহিদা ভক্তদের কাছে রীতিমতো আকাশছোঁয়া। বর্তমানে কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই থেকেও বহু মানুষ চাকরির মনস্কামনা নিয়ে ছুটে আসেন সোনামুখীর এই "সার্ভিস কালী"র কাছে।
সোনামুখী শহরের প্রাচীন কালীপুজোগুলোর মধ্যে অন্যতম এই "সার্ভিস কালী"। যে মায়ের কাছে নিষ্ঠাভরে পুজো করলে শুধু চাকরি নয়, রুজি রোজগারের ব্যবস্থাও করে দেন, এমনই জনশ্রুতি রয়েছে সোনামুখী শহরে। স্থানীয়রা বলেন, দেবী জাগ্রত। দেবীর কাছে চাকরি পাওয়া ও ব্যবসায় সমৃদ্ধির মনস্কামনা নিয়ে শুধু এ রাজ্যের মানুষ নয়, অন্য রাজ্য থেকেও বহু মানুষ আসেন। দেবী তাঁদের সকলের মনস্কামনা পূরণ করেন এটাই আমাদের বিশ্বাস।
আর মনস্কামনা পূর্ণ হলে তাঁরা ফের মন্দিরে এসে পুজো দিয়ে যান। পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যেও অনেকের মনস্কামনা পূরণ করেছেন দেবী। এখানেই তো "সার্ভিস কালী"র মাহাত্ম্য। তাই আপনিও চাকরি চাইলে এই কালী মাতার দরবারে ঠেকাতে পারেন মাথা। হয়তো আপনার বেকারত্বও কাটাবেন মা সার্ভিস কালী। ওই যে কথায় বলে না? "বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর"!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন