সমকালীন প্রতিবেদন : পিশাচের দুনিয়া! হাসিনার আমলের যে আয়নাঘর নিয়ে এতো বিতর্ক, তার কি আদৌ কোনও অস্তিত্ব আছে বাংলাদেশে? কী হতো সেখানে? পুরোটাই রহস্য! ‘আয়নাঘর’ সত্যিই ‘গুমখানা’? যাদেরকে গুম করে রাখা হতো আয়না ঘরে, কি করা হতো তাদের সাথে? ইউনুস খুঁজলেন "আয়নাঘর", জানেন কি মিলল সেখানে? পুরোটা জানলে ছিটকে যেতে বাধ্য।
শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের ‘আয়নাঘর’ ফের আলোচনায় উঠে এসেছে। বিভিন্ন সময়ে গুম হওয়া মানুষের খোঁজে যে আয়নাঘর খুঁজে বেরিয়েছে মানুষজন, জানা যায় বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাউন্টার-টেরোরিজম ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো দ্বারা পরিচালিত একটা গোপন আটক কেন্দ্রই আসলে সেটা। ধারণা করা হয়, এখানে কমপক্ষে ১৬টি কক্ষ রয়েছে, যেখানে একসঙ্গে ৩০ জন বন্দিকে রাখা যায়।
তবে শুধু মুখের কথায় নয়, হঠাৎ ইউনূস জানালেন তিনি ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করবেন। করেও এলেন। কিন্তু ঢাকার সাংবাদিকদের ডাকা হল না। কেন? জানেন, এই পরিদর্শন থেকে যা সামনে উঠে এলো, সেটা কিন্তু সত্যিই ভয়ানক। উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব সমাজমাধ্যমে যে সব ছবি দিলেন, তা সাধারণ লক আপের মতোই দেখতে। কিন্তু, একটি স্টিলের চেয়ার গোটা সিনারিও যেন বদলে দিল।
হ্যাঁ, জাস্ট একটা স্টিলের চেয়ার রেখে বলা হল, বন্দিদের বৈদ্যুতিক শক দিতে সেটি ব্যবহার করা হতো। কিন্তু তা নিয়েও সমালোচনার ঝড়। কারণ, সেই চেয়ারে বসিয়ে শক দিলে বন্দির ঝলসে মারা যাওয়া উচিত। পর দিন ইউনূসের প্রেস সচিবকে প্রশ্ন করা হল, কোথায় এই গোপন আয়নাঘর পাওয়া গেল? তিনি জানালেন, উত্তরা, কচুক্ষেত ও আগারগাঁওয়ে র্যাব ও ডিজিএফআই-এর দফতরেই এই ‘আয়নাঘর’। তাদের লক আপই পরিদর্শন করেছেন ইউনূস।
যদিও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য বলছে, আয়নাঘর আসলে গোয়েন্দাদের একটি গোপন বন্দিশালা বা ডিটেনশন ক্যাম্প ছিল। হাসিনার আমলে একের পর এক মানুষকে গুম করে এই আয়নাঘরে রাখা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। আলো বাতাসহীন একটা কক্ষ। সেখানে সারাক্ষণ ঘড়ঘড়িয়ে চলে ফ্যান।
একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, তাদেরকে তুলে নেওয়ার পরপর ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন করা হতো ওই গুমখানার ভেতরে। কাউকে কাউকে মাঝেমধ্যে নিয়ে যেত টর্চার সেলে। চোখ বেঁধে ও হাতকড়া পরা অবস্থায় শৌচাগারে আনা-নেওয়ার পথে নির্যাতনের শিকার অন্যদের কান্নার আওয়াজ পাওয়া যেত।
যারা দীর্ঘদিন গুম থাকার পর ফিরে আসেন, তারা গুমের ব্যাপারে একটা কথাও বলেননা। কারোর অভিযোগ, মুখমন্ডলে পলিথিন বেঁধে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে বন্দিদের। আবার কারো অভিযোগ, পেট কেটে মৃতদেহের সঙ্গে সিমেন্ট বা ভারী বস্তু বেঁধে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
কি কি করা হয়েছে গুম করে রাখা বন্দীদের সাথে? জল্পনা অনেক। সাথে "আয়নাঘর" এর পরতে পরতে রহস্যের জট, খোলা গেল না এখনো। কারণ, ইউনুসের পরিদর্শনের পর সামনে আসা ছবি আর এতোদিনের জল্পনা। সবটা মিললো কোথায়? মানুষ বলছে, রহস্যভেদ হলো কই? বাড়ছে জানার কৌতূহলও। আসল "আয়নাঘর" তা হলে কোথায়?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন