সমকালীন প্রতিবেদন : পেট্রাপোল সীমান্তে পালিত হল না ভারত–বাংলাদেশের যৌথ ভাষা উৎসব। সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডে হয়নি শহীদ বেদী। স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ ভাষাপ্রেমীদের। যদিও পেট্রাপোল সীমান্তে স্থানীয় উদ্যোগে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষজন।
বাংলা ভাষার জন্য আত্ম বলিদান দেওয়া বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর বাংলাদেশের ঢাকায় ভিড় আছড়ে পড়ে ভাষাপ্রেমীদের। সারা রাত জেগে নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালন করা হয় আবেগের এই অনুষ্ঠানটিকে। শুধু ঢাকা নয়, গোটা বাংলাদেশ জুড়ে এই দিনটি অন্যভাবে পালিত হয়।
আবেগের এই ঢেউ এসে পড়ে এপার বাংলাতেও। এপার বাংলার ভাষাপ্রেমীরাও এই দিনটিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। আর এই দিনটিতে বিশেষ মুহূর্ত তৈরি হয় ভারত–বাংলাদেশের পেট্রাপোল–বেনাপোল সীমান্তে। দুই দেশের মৈত্রীর সম্পর্ককে আরও একবার উসকে দেয় এই বিশেষ দিনটি।
বহু বছরের রীতি মেনে সীমান্তের দুই পাড়ের বাংলা ভাষাপ্রেমীদের যৌথ উদ্যোগে সীমান্তের দুপারেই পালিত হয় এই শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান। আর দুটি অনুষ্ঠানেই উপস্থিত থাকেন দুই পাড়ের বাছাই করা প্রতিনিধি এমনকি সাধারণ ভাষাপ্রেমীরাও। সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডে তৈরি হওয়া অস্থায়ী ভাষা শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানান দুই পাড়ের মানুষ।
কিন্তু এবছর ছবিটা সম্পূর্ণ অন্যরকম। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে অভ্যন্তরে যে অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার আঁচ লেগেছে ২১ ফেব্রুয়ারীর এই বিশেষ দিনটিতে। আগে থেকেই এই দিনটি পালনের ব্যাপারে হুমকি বার্তা দিয়ে রেখেছিল সেদেশের একশ্রেণীর চরমপন্থীরা। ফলে সেদেশের প্রশাসনও এব্যাপারে বেশি সাহস দেখাতে চায় নি।
আর তাই এবছর এই দিনটি আর যৌথভাবে পালনের ক্ষেত্রে অনুমতি দেয় নি দুদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীও। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তে নিজেদের মতো করে ভাষা শহীদদের স্মরণ করলেন এপার বাংলার ভাষাপ্রেমীরা। ব্যবস্থাপনায় বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতি এবং ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত। উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতির ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্নস্তরের মানুষ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বনগাঁর চিত্রশিল্পী শঙ্কর মন্ডলের মতো অনেক ভাষাপ্রেমীই নিজেদের আক্ষেপের কথা শোনালেন। ভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে সীমান্তে প্রতি বছর যে আবেগ তৈরি হয়, তা অনেকটাই কম অনুভব করেন তাঁরা। তবে তাঁরা আশাপ্রকাশ করেন, সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে আগামী বছর সীমান্তের ভাষা দিবসের শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান নিজের অবস্থানে ফিরবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন