Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

‌২০২৬ এর ভোটের আগে লক্ষ্মীর ভান্ডারের ভাতার পরিমাণ বাড়বে?

Lakshmi-Bhandar-allowance

সমকালীন প্রতিবেদন : বাজেটের পরেই লক্ষ্মীর ভান্ডারে টাকা ডাবল? বাংলার মহিলাদের মন রাখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টারস্ট্রোক। রাজ্য বাজেটে যে লক্ষ্মীর ভান্ডার কার্যত "আনটাচড" থাকলো, ভাতা বৃদ্ধি নিয়ে টু শব্দ খরচ করা হলো না, প্রত্যাশা পূরণ না হ‌য়ে যখন মন ভাঙলো গোটা রাজ্যের মহিলাদের, যখন বিরোধীরা এই ইস্যুটাকে হাতিয়ার করে মহিলাদের জন্য বাজেটে একটা শব্দও খরচ করা হয়নি বলে প্রতিবাদের ঝড় তুললো। ঠিক তখন বাজেট শেষের পর সাংবাদিক বৈঠকে লক্ষ্মীর ভান্ডারের ভাতা বৃদ্ধি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করতেই ঘুরে গেল খেলা। ঠিক কি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী? আশায় বুক বাঁধছেন কোটি কোটি মহিলা। ভাতাতেই খোঁড়া? চাকরি কোথায়? একের পর এক ইস্যু তুলে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটকে তুলোধনা বিরোধীদের।

রাজনৈতিকভাবে মমতা অনেক দিন ধরেই মহিলাদের বাড়তি গুরুত্ব দেন। কিন্তু কোথায় কি? "অর্ধেক আকাশের জন্যই অর্ধেক বাজেট"! যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার রাজ্য বাজেট সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন, "এই বাজেটের অর্ধেকটাই মহিলাদের জন্য", তখন সেই বাজেটে বাংলার মহিলাদের জন্য "লক্ষ্মীর ভান্ডার" এ ভাতা বৃদ্ধি নিয়ে কি আপডেট মিললো? রাজ্য সরকারের বাজেট বইয়ে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ এর উল্লেখ থাকলো। ওই প্রকল্পের জন্য কত মহিলা উপকৃত হয়েছেন, তার উল্লেখ থাকলো। কিন্তু ওই প্রকল্পের জন্য বাড়তি অর্থ বরাদ্দ বা মাথাপিছু অর্থ বাড়ানোর কথার কোনও উল্লেখই রইলো না। 

তাই রাজ্য বাজেট পেশ হওয়ার পর গোটা রাজ্যের মহিলাদের প্রত্যাশা পূরণ তো দূরের কথা, কেন লক্ষ্মীর ভান্ডারের ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টা এই পূর্ণাঙ্গ বাজেটে "আনটাচড" থেকে গেল, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। যে লক্ষ্মীর ভান্ডার ভোট বাক্সে বারবার সাফল্য দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে, সেই প্রকল্পে বাংলার মহিলারা এবারের পূর্ণাঙ্গ বাজেটে রীতিমতো যে বঞ্চিত থাকবে, তা আশাই করেনি রাজ্যবাসী। আর তাই বাজেট পেশের পর থেকে, এক নয় একাধিকবার বিরোধীরা এই নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে রাজ্য সরকারের দিকে। 

রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, লক্ষ্মীর ভান্ডারে ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টা যদি এবারের বাজেটে জোর দিত তৃণমূল সরকার, তাহলে শুভেন্দু অধিকারীরা এটা বলতে পারতেন না যে "মহিলাদের জন্য বাজেটে একটা শব্দও খরচ করা হলো না"। হ্যাঁ, রাজ্য বাজেটে এবার যে যে ক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম নারী ও শিশুকল্যাণ দফতর। বাজেটে এও ঘোষণা করা হয়েছে যে, রাজ্যের ৭০ হাজার আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী যারা সকলেই মহিলা, তাঁদেরকে স্মার্টফোন দেবে সরকার। তার জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বাজেটে। 

কিন্তু মমতা সরকারের মোস্ট পপুলার প্রকল্প লক্ষ্মীর ভান্ডার? সেটাকে স্পর্শই করা হলো না? ২০২৬ সালের ভোটের আগে শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে মহিলাদের উপর গুরুত্ব আরোপের কথা উল্লেখ করলেও, কাজের কাজ হলো কতটা? যখন এই প্রশ্ন তুলে রীতিমতো রাজ্য সরকারের তুলোধনা চলছে চারিদিকে, ঠিক তখনই লক্ষ্মীর ভান্ডারে মাথাপিছু অর্থ বৃদ্ধি করা হবে কি না, সে বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানান, সেটা পরবর্তী সময়ে দেখা হবে। 

আর এরপরেই অনেকে মনে করছেন, বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে এবং রাজ্যের মহিলাদের প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি ভোট বাক্সে নিজেদের সাফল্য ধরে রাখতে ২০২৬ সালের ভোটের আগে লক্ষ্মীর ভান্ডারের ভাতার পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে। হ্যাঁ অনেকেরই ধারণা, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ভোটের ছ’মাস আগে ওই বর্ধিত পরিমাণ ঘোষণা করতে পারেন। অনেকের আবার বক্তব্য, তার আগেও আলাদা করে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে মাথাপিছু অর্থের পরিমাণ বাড়াতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

যদিও বলাই বাহুল্য, অনেকেই এই ভাতা বৃদ্ধির ব্যাপারে আগ্রহ না দেখিয়ে বেকারত্ব মেটাতে চাকরি বা কর্মসংস্থান নিয়ে রাজ্য সরকার বাজেটে নতুন কোন পরিকল্পনা সামনে আনবে বলে আশাবাদী ছিল। সেই চাকরি নিয়েও বাজেটে এদিন একটা শব্দও খরচ করা হয়নি। এই বিষয়টাও বিরোধীদের নজর এড়ায়নি। বাজেট পেশ শুরু হতেই বিজেপিকে "চাকরি চাই, চাকরি চাই" বলে স্লোগান তুলতে দেখা গেছে। কিন্তু লাভের লাভ কিছু হয়নি। ফ‌লে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট থেকে সাধারণ মানুষের প্রাপ্তির ঝুলি কতটা পূরণ হল, তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই যাচ্ছে।‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন