সমকালীন প্রতিবেদন : আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে উত্তেজক দ্বৈরথ যদি কিছু থেকে থাকে, তবে তা ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। প্রতিবারই এই দুই দল মুখোমুখি হলেই উত্তেজনা চরমে পৌঁছে যায়। ক্রিকেট বিশ্বের চোখ এখন রবিবারের দিকে, যখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মহারণে ফের একবার একে অপরের বিরুদ্ধে নামবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল।
এক সময় একদিনের ক্রিকেটে ভারতের উপর আধিপত্য বিস্তার করত পাকিস্তান। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ছবি বদলেছে। পরিসংখ্যান বলছে, শেষ ছ’টি একদিনের ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিই জিতেছে ভারত। পাকিস্তানের শেষ জয় ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে। সেই সাফল্যের পর ভারতীয় দল নিজেদের আরও শক্তিশালী করে তুলেছে, যেখানে পাকিস্তান সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিকতা হারিয়েছে।
তবে এই ম্যাচ শুধুমাত্র দুই দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, বরং বেশ কিছু ব্যক্তিগত দ্বৈরথেও নজর থাকবে ক্রিকেটবিশ্বের। কোন লড়াই সবচেয়ে উত্তেজক হতে পারে? বাঁহাতি পেসারদের বিরুদ্ধে রোহিতের দুর্বলতা অনেক পুরনো। তাই পাকিস্তানের অন্যতম সেরা অস্ত্র শাহিন আফ্রিদির বিরুদ্ধে ভারত অধিনায়কের ব্যাটিং কেমন হয়, সেটা দেখার।
পরিসংখ্যান বলছে, শাহিনের বিরুদ্ধে ৫৬ বলে ৪৮ রান করেছেন রোহিত। দু'বার আউট হয়েছেন তিনি। ফলে লড়াই জমজমাট হতে বাধ্য। শাহিনের আগ্রাসী বোলিং আর রোহিতের স্ট্রোক প্লের টক্কর রবিবারের অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে। শুভমন গিল ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন প্রজন্মের পোস্টার বয়, অন্যদিকে পাকিস্তানের তরুণ প্রতিভা নাসিম শাহ। নাসিম ১৬ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গতি ও ধারাবাহিকতা হারিয়েছেন। অন্যদিকে, শুভমন গিল ক্রমশ নিজেকে একদিনের ক্রিকেটে ভারতের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনো পর্যন্ত নাসিমের ১৭টি বল খেললেও একবারও আউট হননি শুভমন। এই লড়াইয়ে কে এগিয়ে থাকবে, সেটাই দেখার।
২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হ্যারিস রউফকে পরপর দুটি ছক্কা মেরে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। সেই দৃশ্য এখনও ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে গেঁথে রয়েছে। কিন্তু একদিনের ক্রিকেটে রউফের বিরুদ্ধে খুব বেশি বল খেলার সুযোগ পাননি বিরাট—মাত্র পাঁচ বল খেলে করেছেন দু’ রান। এই ম্যাচে তাদের মুখোমুখি সাক্ষাৎ কতটা জমবে, সেটাই দেখার।
কোহলি এই মুহূর্তে বড় রান পাননি, তাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রানে ফেরার সেরা সুযোগ তাঁর সামনে। অন্যদিকে, রউফ চাইবেন পুরনো হিসেব চুকিয়ে দিতে। ভারতের তারকা পেসার মহম্মদ শামি এখনও একদিনের ক্রিকেটে বাবর আজমকে বল করেননি। তবে এই ম্যাচে তাদের দ্বৈরথ নিশ্চিত। বাবর পাকিস্তানের অন্যতম ভরসাযোগ্য ব্যাটসম্যান হলেও সম্প্রতি তাঁর মন্থর ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।
অন্যদিকে, শামি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুরন্ত পাঁচ উইকেট নিয়ে ছন্দে ফিরেছেন। বাবর যদি দ্রুত রান তুলতে চান, তবে শামিকে সামলানোর কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ মানেই আবেগ, উত্তেজনা আর নাটকীয়তা। একদিকে ভারতীয় দল তাদের ধারাবাহিক ফর্ম ধরে রাখতে চাইবে, অন্যদিকে পাকিস্তান তাদের সাম্প্রতিক ব্যর্থতা ভুলে জয়ের খোঁজে নামবে। ব্যক্তিগত দ্বৈরথগুলোর মধ্যে কে কাকে টেক্কা দেয়, সেটাই এবার দেখার বিষয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন