সমকালীন প্রতিবেদন : উড়িষ্যার দারিংবাড়িকে পূর্বঘাট পর্বতমালার একটা উপত্যকা বলা যায়। ছোট নগর কিন্তু স্বাদে, রূপে ও আভিজাত্যে সত্যি কাশ্মীরতুল্য। তাই যথার্থই 'উড়িষ্যার কাশ্মীর' এটি। আঞ্চলিক ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই অঞ্চলে মূলত কন্ধ উপজাতির মানুষেরা দীর্ঘদিন বসবাস করেন। তাদের নিজস্ব ভাষার নাম 'কুই'। সেই কুই ভাষায় 'দারিং' কথার অর্থ উপত্যকা। আর 'বাড়ি' একটি ইন্দো-ইরানীয় শব্দ - যার অর্থ 'ঘর'। তাই দারিংবাড়ি হলো 'উপত্যকার নিবাস।
উড়িষ্যার কন্ধমাল জেলায় এই পার্বত্যময় জায়গাটি সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ৯১৫ মিটার উচ্চতায় অবস্থান করছে। পূর্বঘাট পর্বতশ্রেণির বিভিন্ন শৃঙ্গগুলি উঁচুনিচু তরঙ্গায়িত ছন্দে শহরটিকে ঘিরে আছে। অপূর্ব নৈসর্গিক পরিমণ্ডল স্থানটিকে স্বর্গীয় মাধুর্য দান করেছে। এর চতুর্দিকে কোথাও পাইন জঙ্গল, কোথাও নিবিড় শালবন, কফি বাগিচা বা সবুজ উপত্যকা যেন প্রকৃতি প্রেমিক পর্যটকদের হাতছানি দিচ্ছে।
পাশাপাশি, আছে ঘন রেন ফরেস্ট আর বন্য জীবজন্তুর আনাগোনা। শীতের দিনে এখানে যথেষ্ট ঠাণ্ডা পড়ে। এখনও পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নথি অনুযায়ী -০.৫ ডিগ্রী সেণ্টিগ্রেড। শীতের দিনে কোনো কোনো সময় ঘাসের ডগায় বরফ জমে থাকতে দেখা যায়। মেঘ ও কুয়াশায় ঘেরা দারিংবাড়িতে রয়েছে লুদু জলপ্রপাত, মড়ুবান্দা জলপ্রপাত ও পুতুদি জলপ্রপাত।
চারিদিক ঘন অরণ্যে আবৃত পুতুদি জলপ্রপাত সবচেয়ে জনপ্রিয়। ঘুরে দেখে নিতে পারেন দুলুরি নদীও। পাইন জঙ্গলের মধ্য দিয়ে সশব্দে বয়ে চলেছে স্রোতস্বিনী দুলুরি। চুপ করে বসে থাকলে কানে আসবে পাখির ডাক ও নদীর বয়ে চলার শব্দ। রয়েছে লাভার্স পয়েন্ট, সাইলেন্ট ভ্যালি, হিল ভিউ পার্ক ও গোলমরিচের বাগানের মতো একাধিক দর্শনীয় স্থান।
যাওয়া আসা - দারিংবাড়ি যাওয়ার প্রধান দুটি পথ হলো ভুবনেশ্বর অথবা বেহরামপুর স্টেশন থেকে গাড়ি ভাড়া করে অথবা বাসে করে। ভুবনেশ্বর থেকে দূরত্ব ২৯০ কিমি ও বেহরামপুর থেকে ১৩০ কিমি।
থাকা খাওয়া - এখানে জঙ্গলের মধ্যে আকর্ষণীয় কিছু রিসর্ট ক্যাম্প হয়েছে। সবই এখন অন লাইন বুকিং হয়। কয়েকদিনের জন্য বন্ধুবান্ধব বা পরিবার নিয়ে মন ভোলানো পরিবেশে ঘুরে আসুন 'উড়িষ্যার কাশ্মীর' এই দারিংবাড়িতে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন