সমকালীন প্রতিবেদন : কলকাতায় শুরু হয়েছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন ২০২৫। রাজ্যের শিল্পায়নকে আরও শক্তিশালী করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই সম্মেলন জমজমাট হয়ে উঠেছে। দেশ-বিদেশের নামীদামি শিল্পপতিদের ভিড়ে নজর কাড়লেন ভারতের শীর্ষ শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি। এক ঐতিহাসিক ঘোষণায় তিনি জানিয়ে দিলেন—বাংলায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে রিলায়েন্স!
বাঙালির ঐতিহ্যে আস্থা আম্বানির, বিশ্বমঞ্চে উঠবে জামদানি শাড়ি
বক্তব্যের শুরুতেই বাংলার মণীষীদের প্রণাম জানিয়ে মুকেশ আম্বানি বলেন, "বাংলায় শিল্পের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। লগ্নির পরিবেশ ভালো। মমতা মানেই বিজনেস!" তাই রিলায়েন্স গ্রুপ এখানে দ্বিগুণ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এনার্জি সেক্টর থেকে টেক্সটাইল—বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগের ঘোষণা করলেন তিনি। বিশেষ করে বাংলার ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়িকে বিশ্ববাজারে তুলে ধরার প্রতিশ্রুতি দিলেন আম্বানি।
জিও গ্রাহকদের জন্য সুখবর, আসছে নতুন ৪০০ স্টোর
শুধু বিনিয়োগই নয়, জিও-র গ্রাহকদের জন্যও বড় ঘোষণা করলেন মুকেশ আম্বানি। তিনি বলেন, "কলকাতা জিওর অন্যতম প্রধান বাজার। এখানকার মানুষ আমাদের সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করেন।" তাই রাজ্যে ১৩০০ রিলায়েন্স স্টোরের সঙ্গে আরও ৪০০টি নতুন স্টোর চালু করা হবে। এই উদ্যোগে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
৯ মাসের মধ্যেই বাংলায় তৈরি হবে এআই সেন্টার!
প্রযুক্তির ভবিষ্যত নিয়ে রিলায়েন্স পিছিয়ে নেই। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে বড় পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করলেন মুকেশ আম্বানি। বাংলায় আগামী ৯ মাসের মধ্যেই তৈরি হবে অত্যাধুনিক এআই সেন্টার। এটি দেশের অন্যতম সেরা এআই গবেষণা কেন্দ্র হয়ে উঠবে।
কালীঘাট মন্দির সংস্কারে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি
শিল্প বিনিয়োগের পাশাপাশি বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিও শ্রদ্ধা জানালেন মুকেশ আম্বানি। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে তিনি ঘোষণা করেন, "কালীঘাট মন্দিরের সংস্কারের জন্য রিলায়েন্স আর্থিক সাহায্য করবে। বাংলার আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।"
বিশ্ববঙ্গ সম্মেলনে বিনিয়োগের ঢল, কলকাতায় হাজির বিশ্বের শিল্প নেতৃত্ব
এই বাণিজ্য সম্মেলনে ৪০টি দেশের ২০০ জন প্রতিনিধি-সহ মোট ৫ হাজারের বেশি বিশিষ্ট শিল্পপতি ও বিশেষজ্ঞ উপস্থিত। শিল্পের বিকাশ ঘটাতে ক্ষুদ্র শিল্প থেকে তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষিভিত্তিক পণ্য থেকে পর্যটন—সব কিছুর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নিউটাউনের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে বসেছে সিআইআই এবং ফিকির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক।
বাঙালির ঐতিহ্য ও ব্যবসায়িক দক্ষতার প্রতি বিশ্বাস রেখে মুকেশ আম্বানির এই বিনিয়োগ ঘোষণা নিঃসন্দেহে বাংলার শিল্প ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। এখন দেখার, এই বিপুল লগ্নি রাজ্যের অর্থনীতিকে কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন