Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

দিল্লির ফলাফলে উজ্জীবিত বঙ্গ বিজেপির টার্গেট বাংলা দখলের

 ‌

BJP-in-power-in-Delhi

সমকালীন প্রতিবেদন : ২৭ বছরের 'বনবাস'‌ কাটিয়ে দিল্লির বুকে ক্ষমতায় বিজেপি। নেক্সট টার্গেট বাংলা? বাংলাতেও তৃণমূলকে ধরাশায়ী করার ইঙ্গিত। শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি শুনেছেন? ২৬ এর নির্বাচন কি ঘনিয়ে আনছে শাসকদল তৃণমূলের জন্য? গেরুয়া শিবিরের কনফিডেন্স বাড়ছে। আপ কে পারলে, তৃণমূল নয় কেন? জোর জল্পনা শুরু। একের পর এক দুর্নীতি থেকে আরজিকর কাণ্ড, স্যালাইন কাণ্ড! ২৫০র বেশি আসন সত্যিই কি থাকবে মমতার দখলে? 

দিল্লিতে বিজেপি-র সদর দফতর এবং কার্যালয়ে অলরেডি সেলিব্রেশন শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজধানী জুড়ে বিজয় উল্লাসে ফেটে পড়েছেন বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। দীর্ঘদিন ধরে দিল্লিতে পদ্ম শিবির তার ভোটব্যাঙ্কের অঙ্কের খরা কাটিয়ে শেষমেশ দেখালো চমক। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, দিল্লিতে আপকে সরিয়ে বিজেপির ক্ষমতায় ফেরা, সাঙ্ঘাতিক ইঙ্গিত দিচ্ছে বাংলার শাসকদল তৃণমূলকে। 

কারণ, দিল্লিতে রাজনৈতিক সমীকরণ পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে যা ঘটলো, সেটা আপের কাছেও অপ্রত্যাশিত ছিল। এমনকি আজ সকাল পর্যন্ত জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল আম আদমি পার্টি। তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে অরবিন্দ কেজরিওয়াল হ্যাট্রিক গড়তে চলেছেন বলে দাবি করছিল দলীয় নেতৃত্ব। কিন্তু শনিবার দিল্লিতে ভোটগণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই ছবিটা স্পষ্ট হতে শুরু করে। বেলা ১০.৩০টা পর্যন্ত ভোটগণনা যতদূর এগিয়েছে, তাতে বিজেপি-ই রাজধানীতে সরকার গড়ার পথে এগিয়ে থাকে। 

বেলা ১০টা বেজে ৩৫ মিনিটে আপ ২৮টি আসনে এগিয়ে, বিজেপি এগিয়ে ৪২টি আসনে। কংগ্রেস শূন্য। অর্থাৎ ৭০ আসনের বিধানসভায় সরকার গড়তে প্রয়োজনীয় ম্যাজিক সংখ্যা পার করে গিয়েছে বিজেপি। আম আদমি পার্টির ভোটে প্রায় ১০ শতাংশ ধস দেখা যাচ্ছে। যে বিজেপি গতবার ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল, এবার প্রায় ৪৮ শতাংশ ভোট ঢুকেছে তাদের ঝুলিতে। শেষপর্যন্ত বুথফেরত সমীক্ষাকেও ছাপিয়ে গেল বিজেপি। দিল্লির কুর্সি দখলের লড়াইয়ে পরাজিত আপ, জয়ী বিজেপি। বিজেপির ঝুলিতে ৪৮ আসন। আর আপের ২২।

এই জয়ের পর যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলছেন, "দিল্লির মানুষ বুঝিয়ে দিলেন বারবার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনতাকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।" ঠিক তখনই বাংলা দখলের ডাক দিল উজ্জীবিত পদ্মশিবির। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সাফ বলে দিলেন, 'দিল্লি কা জিত হামারি হ্যায়, ২৬ মে বঙ্গাল কি বারি হ্যায়'। না অবশ্য চুপ থাকেনি ঘাসফুল শিবির। জবাবে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। বলেন, আড়াইশোর বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসবে তৃণমূল। চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

যদিও, বাংলার অন্দরে শাসকদলের ভেতরে কাজ করছে চাপা টেনশন, এমনটাই মত রাজনীতিকদের। শনিবার দিল্লির বিধানসভা ভোটে গেরুয়া ঝড়, ২৭ বছর পর বিজেপির ক্ষমতায় ফেরা– এগুলো বাংলা দখলের আগে, দিল্লি দেখিয়ে বিজেপির ট্রেলার নয় তো? কেনই বা এমনটা ঘটলো দিল্লিতে? কি বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা? দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে এবার গোড়া থেকেই নজর ছিল সকলের। কেজরিওয়াল তৃতীয়বারের জন্য জয়ী হয়ে হ্যাট্রিক গড়েন কি না, এই প্রশ্ন সবচেয়ে বড় হয়ে ধরা দেয়। 

কিন্তু গোড়া থেকেই তাল কাটতে শুরু করেছিল। আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরিওয়ালের জেলযাত্রার পর থেকেই দিল্লিবাসীর মনের পরিবর্তন ঘটে যায় বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের। ভোটবাক্সেও তার প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন তারা। এর ফলে, ১৯৯৮ সালে সুষমা স্বরাজের পর দিল্লিতে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী মসনদে আসীন হতে চলেছেন এবার। আর ঠিক এখানেই বাংলাকে নিয়ে চিন্তা। 

কারণ, তৃণমূলের আমলে একের পর এক ঘটনায় যেভাবে শাসক দল কোণঠাসা হয়ে চলেছে, সেখানে ২৬ এর নির্বাচনে মমতা সরকারের টিকে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে অলরেডি। আর ঠিক এই স্কোপটাকে কাজে লাগিয়েই দিল্লির মতো বাংলাতেও পদ্ম ফোটাবে না তো গেরুয়া শিবির? দিল্লি জয়ের পর বিজেপির কলকাতা দফতরেও উৎসবের ছবি। ফেসবুকে খোঁচা দিয়ে পোস্ট বঙ্গ বিজেপির। ২৬ নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসে শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার।

বিজেপি ওয়েস্টবেঙ্গল পেজেও লেখা হয়েছে, 'দিল্লিতে বিদায় হল আপ। এবার যাবে পশ্চিমবঙ্গের পাপ।' কিন্তু তৃণমূল সেসবে কান দিতে নারাজ। সত্যিই দিল্লির ভোটের ফলাফলের কোনও প্রভাব বাংলায় পড়বে না? কিসের ভরসাতেই বা এতটা কনফিডেন্ট রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল? কথায় বলে, "দিল্লি অনেক দূর!" সত্যিই, দিল্লির ব্যাপার দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে তো? সেই রেশ বা প্রভাবে প্রভাবিত হবে না তো বাংলা? উত্তর দেবে সময়।‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন