Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫

স্যালাইন ‌কান্ডের ভিডিও ফুটেজ গোটা ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দিল?

Video-footage-of-saline-incident

সমকালীন প্রতিবেদন : স্যালাইন ‌কান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য তদন্তকারী অফিসারদের হাতে! একটা ভিডিও ফুটেজ গোটা ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দিল? সিনিয়র চিকিৎসকরা রাতে কি করেন? অভিষেক কিন্তু বলেছেন, গাফিলতি প্রমাণিত হলে মারাত্মক শাস্তি হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপর চাপ বাড়ছে। সামনে এলো এর মধ্যেই রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা। কোন কোন ওষুধ নিষিদ্ধ? ডিটেইলে জানুন পুরোটা।

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্যালাইন-কাণ্ডে প্রসূতি মামনি রুইদাসের মৃত্যুর কারণ হিসেবে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ‘মাল্টি অরগ্যান ফেলিওর’ এবং ‘সেপটিক শক’-এর কথা বলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত বলছে, ২০ বছর বয়সি মামনির শরীরে সেপটিকের কারণে বিষাক্ত দেহরস জমে গিয়েছিল। এটাই তাঁর মৃত্যুর মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় স্যালাইনের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু এর মধ্যে কোথাও লুকিয়ে নেই তো চরম গাফিলতি? 

শুরু হয়েছে সিআইডি তদন্ত। হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিক ও চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ কিন্তু অলরেডি জানিয়েছেন, প্রসূতিদের চিকিৎসার সময় প্রোটোকল মানাই হয়নি। অস্ত্রোপচারের সময় সিনিয়র চিকিৎসকের উপস্থিত থাকা উচিত ছিল, যা ঘটেনি। এছাড়াও, স্যালাইনের সঙ্গে নিয়ম অনুযায়ী অক্সিটসিন ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

মুখ্যসচিবের বক্তব্য, ‘গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’ অন্যদিকে, ঘটনার দিন হাসপাতাল এবং ওটির ভিডিও ফুটেজও খতিয়ে দেখেছেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্রে ওই দিন হাসপাতালে কোন চিকিৎসকদের উপস্থিত থাকার কথা ছিল, পরিবর্তে কারা ছিলেন, অপারেশনের দায়িত্ব কারা সামলেছেন? এসব বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে তদন্তকারীদের হাতে। 

হাসপাতাল সূত্রে খবর, মামনি রুইদাসের চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের ইউনিট ১ সি-এর চিকিৎসকরা। জানা যাচ্ছে, ঘটনার দিন অপারেশন থিয়েটারে থাকার কথা ছিল বিভাগের একজন আরএমও, দু’জন সহকারী অধ্যাপক এবং তিনজন সিনিয়র রেসিডেন্টের (এসআর)। এছা‌ড়াও অ্যানাস্থেসিওলজি বিভাগের একজন সিনিয়র রেসিডেন্টেরও উপস্থিত থাকার কথা ছিল।

কিন্তু ওই পাঁচজন চিকিৎসকের কাউকেই সেদিনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়নি বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর। অভিযোগ, শুধু ঘটনার দিনেই নয়, হামেশাই রাতের ডিউটিতে থাকেন না সংশ্লিষ্ট পাঁচ চিকিৎসক। শুধু ওই পাঁচজনই নন, সিনিয়র চিকিৎসকদের সিংহভাগকেই রাতে দেখা যায় না বলে ইতিমধ্যে তদন্তকারীদের কাছে অভিযোগ করেছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। 

শুধু তাই নয়, তদন্তে নেমে সিআইডি এও জানতে পেরেছে, সেদিন ডিউটিতে থাকাকালীন 'বিশ্রাম' নিচ্ছিলেন গাইনির আরএমও। প্রথম বর্ষের একজন পিজিটিকে দিয়ে প্রসূতিকে অচেতন করা হয়েছিল। অপারেশন করেছিলেন স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দু’জন পিজিটি। এই ধরনের তথ্য সামনে আসার পর বিরোধীরা এটাকে হাতিয়ার করে রাস্তায় নেমেছেন। বলছেন গাফিলতি থেকে ঘটেছে এই ঘটনা। 

এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাফ কথা, স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে সার্বিক তদন্ত হচ্ছে। দোষীদের কেউ ছাড় পাবে না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যেন হয়। সিনিয়র চিকিৎসকদের নাম উঠে আসছে! তদন্ত গভীরে যেতে আর কার কার নাম উঠে আসবে ঘটনায়? অলরেডি স্বাস্থ্য মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি উঠতে শুরু করেছে। স্যালাইন কান্ড নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় তখন, পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালসের ১৪টি ওষুধ নিষিদ্ধ করল রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতর। 

রাজ্যের সমস্ত জেলায় রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের সেই নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে। যে তালিকায় রিঙ্গার্স ল্যাকটেট-সহ আছে ১) ডেক্সট্রোস ইনজেকশন ১০% (৬৫০ এমওএসএম/লিটার) হাইপারটোনিক। ২) লেভোফ্লোক্সাসিন ইনফিউশন-৫ মিলিগ্রাম/১০০ মিলিলিটার বোতল। ৩) ম্যানিটল ইনফিউশন আইপি ২০% - ১০০ মিলিলিটার বোতল। ৪) অফলোক্সাসিন- ২০০ মিলিগ্রাম/১০০ মিলিলিটার। ৫) পেডিয়াট্রিক মেনটেনান্স ইলেক্ট্রোলাইট সলিউশন। ৬) প্যারাসিটামল ইনফিউশন- ১০০০ মিলিগ্রাম/১০০ মিলিমিটার। ৭) সোডিয়াম ক্লোরাইড ইনজেকশন আইপি ০.৯ শতাংশ (নর্ম্যান বা ইস্টোনিক স্যালাইন) (এনএ পজিটিভ ১৫৪ এমএমওএল/ আইসিএল ১৫৪ এমএমওএল/এল (এফএফএস প্রসেস)। ৮) ডেক্সট্রোস সলিউশন আইপি ৫% (ব্লো ফিল, সিল প্রসেস)। ৯) রিঙ্গার ল্যাকটেট সলিউশন আইপি ইনজেকশন (ব্লো ফিল এবং সিল প্রসেস)। ১০) রিঙ্গার ল্যাকটেট আইপি ইনজেকশন। ১১) সোডিয়াম ক্লোরাইড ইরিগেশন সলিউশন (এনএস- ৩ লিটার)। ১২) সোডিয়াম ক্লোরাইড ০.৯% + ডেক্সট্রস ৫% ইনজেকশন আইপি (ব্লো ফিল এবং সিল প্রসেস)। ১৩) সোডিয়াম ক্লোরাইড ইনজেকশন ০.৪৫% ডেক্সট্রোস ৫% পলিপ্রোপেলিন বটল ইন এফএফএস টেকনোলজি। ১৪) সোডিয়াম ক্লোরাইড ইনজেকশন ০.৯% নর্ম্যাল বা ইস্টোনিক স্যালাইন (এনএ পজিটিভ ১৫৪ এমএমওএল/ আইসিএল ১৫৪ এমএমওএল/এল (ব্লো ফিল এবং সিল প্রসেস)। 




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন