Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২৫

কলকাতার ট্রাম নিয়ে কি ভাবনা রাজ্য সরকারের?

 

Trum-of-Kolkata

সমকালীন প্রতিবেদন : কোর্ট এর উপরে গেল রাজ্য? ট্রাম নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত মমতা সরকারের! এটাও সম্ভব? উঠলো বড়সড় অভিযোগ। কোর্টের নির্দেশের আগেই জানেন কোন সিদ্ধান্তটা নিয়ে নিল রাজ্য সরকার? ট্রাম থাকবে, নাকি উঠবে? ট্রামলাইনে পিচ! মহানগরীর বুকে জোর ধাক্কা।


শহরের রাস্তায় ট্রাম ফিরিয়ে আনার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল এক নাগরিক সংগঠন। সেক্ষেত্রে উচ্চ আদালত কি চাইছিল? কীভাবে বিভিন্ন জটিলতা কাটিয়ে ট্রাম চালানোর ব্যবস্থা করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে পুলিশ, পরিবহণ বিশেষজ্ঞ, কলকাতা পুরসভা, রাজ্য পরিবহণ নিগম-সহ বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিল উচ্চ আদালত। 

কিন্তু সেই মামলা চলার মধ্যেই রাজ্য সরকার বেঁকে বসলো। হ্যাঁ, যে বিষয়ে রাজ্য সরকার এই মুহূর্তে তৎপরতা দেখাচ্ছে, এটাকে অনেকেই বেঁকে বসাই বলছেন। রাজ্য সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তারা শহরে ট্রাম চালাতে বিশেষ আগ্রহী নয়। শুধু তাই নয়, মামলাকারী সংগঠনের অভিযোগ, হাতে গোনা চালু রুটগুলো থেকেও ট্রাম তুলে দিতে সরকার যে কতটা ‘তৎপর’ সেটা পরিষ্কার। আদালতের গড়ে দেওয়া কমিটির সুপারিশকেও উপেক্ষা করেছে তারা। এমনকি, ট্রাম যাতে না চলতে পারে, তার জন্য কালীঘাট, ভবানীপুর, জাজেস কোর্ট এবং খিদিরপুরে ট্রামলাইন ঢেকে দেওয়া হয়েছে পিচ দিয়ে। অনেক বড় অভিযোগ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। 

এবার অনেকেরই এক্ষেত্রে প্রশ্ন যে, তাহলে এই মুহূর্তে আদৌ কি ট্রাম চলছে কলকাতার বুকে? এক্সাক্ট স্ট্যাটাসটা কি? দেখুন, ট্রামের ক্ষেত্রে শহরের অন্যতম চালু রুট ছিল টালিগঞ্জ থেকে বালিগঞ্জ। গত অগস্টে ওই পথের রাসবিহারী মোড় সংলগ্ন অংশে জলের পাইপলাইন মেরামতির কথা বলে ২০ দিন ট্রাম পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। 


তিনটে ট্রামকে বালিগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন জায়গায় অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। অথচ, পাইপলাইন মেরামতি শেষ হলেও পুজোর সময়ে ওই পথে ট্রামের পরিষেবা শুরু করা হয়নি। সম্প্রতি ওই রুটের রাসবিহারী সংলগ্ন অংশে ট্রামলাইন মেরামতির কাজ সম্পূর্ণ করে পুরসভা। তারপরেও পরিষেবা স্তব্ধ রয়েছে টালিগঞ্জ থেকে বালিগঞ্জ পর্যন্ত পথে। 


এবার এটাও ইম্পর্টেন্ট যে, এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার ঠিক কি লজিক বা যুক্তি দেখাচ্ছে। রাজ্য পরিবহণ নিগম কর্তৃপক্ষের যুক্তি, লাইনের মেরামতি ঠিকঠাকভাবে না হওয়ায় তা ট্রাম চলাচলের জন্য যথেষ্ট সেফ নয়। একইভাবে, এসপ্লানেড-খিদিরপুর রুটে ট্রাম চলাচল শুরু করা নিয়ে একাধিকবার আলোচনা হলেও গত পাঁচ বছরে সদর্থক পদক্ষেপ করেনি রাজ্য প্রশাসন, সেটাও রয়েছে অভিযোগের তালিকায়। তা ঠিক এখানেই উঠে এসেছে সেই দুর্ঘটনা তত্ত্ব। হ্যাঁ, রাজ্য প্রশানের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ট্রাম চলাচল করছে না এমন রুটে দুর্ঘটনা এড়াতেই নাকি পুলিশ এবং পুরসভার সঙ্গে কথা বলে ট্রামলাইন পিচ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।


বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত, পরিবহন দপ্তরের আধিকারিকরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও ‘কলকাতা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশন’ বলছে, ‘‘রাজ্য প্রশাসন আদালতের নির্দেশ বা সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করেই জোর করে ট্রাম তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’


এদিকে, পরিবহন দপ্তরের ভেতরের খবর যা সামনে আসছে তাতে জানা যাচ্ছে, পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে ট্রাম চালানো নিয়ে অন্তত তাদের কোনো আপত্তি নেই। এখন কোনটা সত্যি আর কোনটা নয়, সেটা বোঝা যাবে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরেই। তাহলে কি ততদিন এইভাবেই চলবে অপেক্ষা? পুরো বিষয়টা দেখে আদালতের নির্দেশই বা কি হবে? উত্তরের অপেক্ষায় দিন গুনছে কলকাতা।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন