Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫

স্যালাইনকাণ্ডে তোলপাড় রাজ্য : প্রসূতির মৃত্যুর পেছনে চিকিৎসার গাফিলতি না নিম্নমানের স্যালাইন?

 ‌

Saline-scandal

সমকালীন প্রতিবেদন : মেদিনীপুরের মর্মান্তিক স্যালাইনকাণ্ডে রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য। প্রসূতির অকালমৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসা পদ্ধতি ও নিম্নমানের স্যালাইনের ব্যবহার নিয়ে উঠেছে একের পর এক প্রশ্ন, বৃহস্পতিবার সিআইডির জমা দেওয়া তদন্ত রিপোর্ট এবং নবান্নের বিবৃতি পুরো পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।

ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্যালাইন কাণ্ডের রিপোর্ট আলাদাভাবে পেশ করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব। সেই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের ১২ জন চিকিৎসককে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি, মৃতার পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা অর্থ সাহায্য এবং পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।

রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানিয়েছেন, এই ঘটনার তদন্তে সিআইডি এবং সিনিয়র চিকিৎসকদের একটি বিশেষ দলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য, সেদিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের দুটি অপারেশন থিয়েটারে প্রসূতির অস্ত্রোপচার হয়েছিল। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দায়িত্বে থাকা সিনিয়র চিকিৎসকরা ওটিতে উপস্থিত ছিলেন না। তাদের বদলে অপারেশন পরিচালনা করেন জুনিয়র ট্রেনি ডাক্তাররা।

সিআইডি জানিয়েছে, অস্ত্রোপচারের সময় ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোটোকল’ পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়। এছাড়াও, আরএমও এবং অন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা রোগীকে সঠিক সময়ে পর্যবেক্ষণ করেননি। ফলে, অস্ত্রোপচার-পরবর্তী সঠিক যত্নের অভাবে প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে।

সিআইডি তদন্তে উঠে এসেছে, নিম্নমানের স্যালাইনও প্রসূতির মৃত্যুর জন্য দায়ী হতে পারে, ডিএসপি পদমর্যাদার এক অফিসার তদন্তে গিয়ে হাসপাতালের আরএমও, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক এবং নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন,তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্যালাইনের মান পরীক্ষা এবং ব্যবহারের আগে প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেওয়া হয়নি।

নবান্নের নির্দেশে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে , এই ধরনের গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী আরও কঠোর বার্তা দিয়ে বলেছেন, “ওটি-র গেট পর্যন্ত সিসিটিভি থাকবে না কেন? এই গাফিলতি ফৌজদারি অপরাধের শামিল। যদি কেউ নিয়ম মানতে না চান, তবে অন্য রাজ্যে চলে যেতে বলব।”

এই ঘটনার পর, রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে ওটি পর্যন্ত সিসিটিভি স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। পাশাপাশি, চিকিৎসা পদ্ধতিতে গাফিলতি বন্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। এই ঘটনায় রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় নজিরবিহীন পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা নতুন করে সামনে এসেছে। তবে, সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও একটাই প্রশ্ন—এই মর্মান্তিক ঘটনার আসল দায় কার?‌




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন