সমকালীন প্রতিবেদন : একদম নিরিবিলি, নিঃশব্দের মধ্যে যদি ২/৩ দিন কাটাতে চান, তাহলে আদর্শ জায়গা সুন্দরবনের দক্ষিণে অবস্থিত হেনরি দ্বীপ। প্রকৃতপক্ষে হেনরি দ্বীপ সুন্দরবনের অংশ। তাই এখানে এখনো 'সুন্দরী', 'গড়ান', 'গেঁও' গাছের দেখা পাওয়া যায়। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায় যে, ব্রিটিশ আমলে একাই এই দ্বীপে পৌঁছে গিয়েছিলেন হেনরি নামে জনৈক সাহেব।
তারই উদ্যোগে এখানে গড়ে উঠেছিল কিছু মৎস্যজীবীর বাস। ম্যানগ্রোভের বনে তৈরি করেছিলেন সভ্যতা। তাঁরই নামানুসারে এই স্থানের নামকরণ। বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী সেই হেনরি আইল্যান্ডে নিরিবিলি, শান্ত এবং একাকী সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের টানে। ভোরে সেখান থেকে সূর্যোদয় দেখার অভিজ্ঞতাও মনোরম। সঙ্গী হয় লাল কাঁকড়ার পাল, শামুক, ঝিনুক।
রিসর্ট থেকে ইঁটের রাস্তা কিছুটা এগিয়ে অস্থায়ী, ভঙ্গুর বাঁশের সেতুতে গিয়ে মেশে। ঠিক সেখান থেকেই শুরু হয় ম্যানগ্রোভের বন। কাদায় মাখামাখি শ্বাসমূল, সুন্দরী, গেঁও, গরানের গন্ধ ও শীতল হাওয়ায় রোমাঞ্চিত হয় মন। ম্যানগ্রোভের বন ছাড়াও হেনরি আইল্যান্ড জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মাছ চাষের ভেড়ি স্বতন্ত্র শোভা বর্ধন করে।
হেনরি আইল্যান্ডের ম্যানগ্রোভ বনে শীতকালে পরিযায়ী পাখিরা গিয়ে ভিড় করে। তাদের কলরবে মুখরিত হয় আশপাশ। ওয়াচ টাওয়ার থেকে নানা রঙের পাখি এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখার মজা অন্যরকম। এখান থেকেই ঘুরে আসুন বকখালী, ফ্রেজারগঞ্জ।
হেনরি দ্বীপে থাকার জন্য অনেক ভালো জায়গা আছে। তবে বনদপ্তরের ওয়াচ টাওয়ারে ও পাশে সমুদ্র সৈকতে অনেক সুন্দর রিসর্ট আছে। এছাড়াও আছে বেশ কিছু প্রাইভেট হোটেল। তবে অনেকেই বকখালীতে থেকে এই দ্বীপে ঘুরতে আসেন। বনদপ্তরের রিসর্ট ও হোটেলে এখন on line booking হয়।
হেনরি দ্বীপে এখন যাতায়াত খুব সহজ হয়ে পড়েছে। ধর্মতলা থেকে বাসে কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে ডায়মন্ডহারবার রোড ধরে আগুয়ান হয়ে জেটিঘাট স্টপে পৌঁছে গেলেই কেল্লাফতে। সেখান থেকে ইঁটের রাস্তা কিছুটা এগিয়ে যেখানে গিয়ে নজর থামে, সেটাই হেনরি আইল্যান্ড।
পথিমধ্যে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদী পেরোনোর অভিজ্ঞতাও অসাধারণ। অনেকে শিলায়দা থেকে ট্রেনে নামেন নামখানা। এরপর নদী পেরিয়ে ভ্যান ধরে গন্তব্যে পৌঁছনো কেবল সময়ের অপেক্ষা। তাই চলুন দিন ২/৩ এর জন্য নৈসর্গিক জগৎ হেনরি দ্বীপে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন