সমকালীন প্রতিবেদন : গঙ্গাসাগরের ভিড় কাজে লাগিয়ে বড় প্ল্যান বাংলাদেশের। জলপথেই সাজানো হচ্ছে অনুপ্রবেশের ছক! বাড়তি নজরদারি শুরু হয়েছে। গোয়েন্দাদের হাতে সাঙ্ঘাতিক তথ্য। ঠিক কি জানা যাচ্ছে?
গঙ্গাসাগর মেলা ঘিরে তোড়জোড় শুরু। আর তার মধ্যেই নদীপথে কড়া নজরদারি শুরু করেছে রাজ্য পুলিশ। কারণ, অলরেডি রাজ্য পুলিশ ইঙ্গিত পেয়েছে, গঙ্গাসাগর মেলার ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে নদীপথে হতে পারে বেআইনি অনুপ্রবেশ। আর সেই আভাস পেয়েই মেলা শুরুর আগে গঙ্গা এবং সাগরের মিলনস্থলে বাড়ানো হয়েছে পুলিশি নিরাপত্তা।
রাজ্যের তরফে মূলত এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুন্দরবন জেলা পুলিশ-প্রশাসনকে। সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা পুলিশের তরফে এ বিষয়ে নিজেদের স্ট্যান্ড পয়েন্ট স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আসলে, বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতে সীমান্তবর্তী এলাকায় এমনিতেই বেড়েছে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা। বাংলাদেশ থেকে যাতে কোনও ভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ না হয়, সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বার্তা পাঠিয়েছে রাজ্য সরকারকে।
নবান্ন সূত্রে খবর, তার পর থেকেই অনুপ্রবেশ রুখতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসন। এই যে বৈঠক করা হয়েছে, তার নেপথ্যেও রয়েছে বড় কারণ। রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর, সুন্দরবন জেলা পুলিশ-প্রশাসনের ওই সাংবাদিক বৈঠকের মূল লক্ষ্য বাংলাদেশের অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের কড়া মেসেজ দেওয়া।
জলপথে অনুপ্রবেশের চেষ্টা হলে যে রাজ্য পুলিশ ছেড়ে কথা বলবে না, সে কথা সাংবাদিক বৈঠকের স্পষ্ট করে দিয়েছেন সুন্দরবন জেলা পুলিশের সুপার কোটেশ্বর রাও। তিনি বলেছেন, ‘‘গঙ্গাসাগর মেলায় মোট ১২ হাজার পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নদীপথে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেই জন্য বিশেষভাবে নজরদারি চালানো হচ্ছে।’’
এখানে একটা বিষয় উল্লেখ করতে হচ্ছে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। মুর্শিদাবাদ ছাড়াও, হাবড়া ও ক্যানিং এলাকা থেকেও কিছু ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাঁদের সঙ্গে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনের যোগসূত্র থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। যে গ্রেফতারির মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয়তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। জঙ্গি সংগঠনগুলির ক্রিয়াকলাপ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
আর ঠিক এই কারণেই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বেআইনি অনুপ্রবেশ নিয়ে কোনরকম রিস্ক নিতে চাইছে না। আর এরমধ্যেই আগামী ১০ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সাগরদ্বীপে বসতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলার আসর। গঙ্গাসাগর মেলার মতো এত বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, তাও নিশ্চিত করতে চাইছে পুলিশ-প্রশাসন। তাই প্রথম থেকেই শক্ত হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে তৎপর পুলিশ।
মেলার সময় বঙ্গোপসাগরে উপকূলরক্ষী বাহিনী ও নৌবাহিনী কড়া নজরদারি চালানো শুরু করেছে। মৎস্যজীবীদের ট্রলারেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। জলপথে অচেনা কিছু চোখে পড়লে পুলিশকে খবর দিতে বলা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। উপকূলরক্ষী বাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিএসএফের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন