সমকালীন প্রতিবেদন : আচমকাই ভয়াবহ আগুন লাগলো প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভ মেলায়। রবিবার দুপুরে শাস্ত্রী ব্রিজের কাছে সেক্টর ১৯ চত্বরে এই আগুন লাগে। প্রথমে একটি তাঁবুতে এই আগুন লাগে। তারপর সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে একের পর এক তাঁবুতে। আর তাতেই পুড়ে গিয়েছে সন্ন্যাসীদের বহু তাঁবু। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, তাঁবুর ভিতরে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডার ফেটে বিস্ফোরণ হয়। আর তার থেকেই এই আগুন লেগেছে।
১৪৪ বছর পর শুধুমাত্র একবার এই মহাকুম্ভ অনুষ্ঠিত হয় প্রয়াগরাজে। ৪৫ দিনের এই মেলায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ভক্তদের নিরাপত্তার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিল। ঘোড়ায় চড়ে টহল দেওয়ার পাশাপাশি জলে মোতায়েন করা হয় ভাসমান পুলিশ চৌকি। গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতী নদীর ত্রিবেণী সঙ্গমে পবিত্র স্নান করতে দেশ বিদেশ থেকে দলে দলে ভক্তরা এসে উপস্থিত হন অমৃত কুম্ভের সন্ধানে।
কুম্ভমেলার জন্য প্রয়াগরাজে কোটি কোটি মানুষের ভিড় হয়েছে। বিস্তীর্ণ মেলা প্রাঙ্গণকে বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করে নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। সেক্ষেত্রে জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও করে রাখা হয়েছে আগে থেকে। এত নিরাপত্তার মধ্যে মুড়ে রাখার পরও এদিন ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটল। ইতিমধ্যেই প্রায় ২৫০টি তাঁবু পুড়ে গিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে খবর মিলেছে।
জানা গিয়েছে, শুরুতে একটি তাঁবুর ভিতরে গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ হয়। এরপরই দাউদাউ আগুনে জ্বলে ওঠে একটি তাঁবুতে। চোখের নিমেষে একাধিক তাঁবুতে ছড়ায় সেই আগুন। আপাতকালীন পরিস্থিতির সামলানোর জন্য মেলার মাঠেই ছিল দমকলের একাধিক ইঞ্জিন। আগুন লাগার খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ইঞ্জিনগুলি। তড়িঘড়ি কাজ শুরু করেন দমকল কর্মীরা।
গোটা এলাকা ফাঁকা করে দিয়েছে প্রশাসন। এখনও পর্যন্ত হতাহত হওয়ার খবর মেলেনি। আগুন ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা চত্বরে। খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর পাশাপাশি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-র একটি দল আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগায়। দুর্ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্সও রাখা আছে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, দমকলকর্মী এবং এনডিআরএফের চেষ্টায় আগুন ইতিমধ্যেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কথা পুলিশ জানালেও, কী থেকে আগুন ছড়াল তা এখনও স্পষ্ট নয়। আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে পুলিশ। কুম্ভমেলার জন্য তৈরি এই অস্থায়ী তাঁবুগুলিতে পুণ্যার্থীদের রান্নার ব্যবস্থা থাকে। সেই থেকেই কোনও ভাবে আগুন ছড়িয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে পৌঁছান উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন