সমকালীন প্রতিবেদন : নথি জাল করে সরকারি চাকরি করার অভিযোগে ডাক বিভাগের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। বনগাঁর প্রধান ডাকঘরে এই কান্ড ঘটেছে। দপ্তরের প্রধানের অভিযোগের ভিত্তিতে এই গ্রেপ্তার। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ধৃত ব্যক্তি বিজেপি নেতার আত্মীয় বলে দাবি করেছে তৃণমূল। আর তাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্কও।
জানা গেছে, মাস কয়েক আগে বনগাঁ শহরের প্রধান ডাকঘরে গ্রামীন ডাক সেবক পদে চাকরিতে যোগ দেয় বনগাঁ থানার রামচন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা সরজিৎ মন্ডল নামে এক যুবক। অভিযোগ, চাকরিতে যোগদানের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র হিসেবে ওই যুবক যে কাগজপত্র জমা দিয়েছিল, সেগুলি জাল। দপ্তরের এক পদস্থ আধিকারিক নিজে এই অভিযোগ করেছেন।
এব্যাপারে বনগাঁ আদালতের সরকার পক্ষের আইনজীবী প্রসেনজিৎ বিশ্বাস জানিয়েছেন, সম্প্রতি বনগাঁর প্রধান ডাকঘরের সুপারিনটেনডেন্ট গোপাল মজুমদার বনগাঁ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, তাঁর দপ্তরে সরজিৎ মন্ডল নামে এক যুবক রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশের সার্টিফিকেট দাখিল করে গ্রামীন ডাক সেবক পদে চাকরি করছে। কিন্তু তার দাখিল করা ওই সার্টিফিকেটটি জাল।
এই অভিযোগ পাওয়ার পর বনগাঁ থানার পুলিশ সোমবার রাতে বনগাঁর রামচন্দ্রপুর এলাকা থেকে অভিযুক্ত ডাক বিভাগের কর্মী সরজিৎ মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে। সোমবার তাকে বনগাঁ আদালতে তোলা হয়। এই জাল সার্টিফিকেট সে কোথা থেকে সংগ্রহ করেছিল, তাকে জিঞ্জাসাবাদ করে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। আইনজীবী প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের অভিযোগ, শুধু এটাই নয়, বনগাঁতে জাল জাতিগত শংসাপত্র দাখিল করে তার অপব্যবহার হচ্ছে। তারও তদন্ত হওয়া উচিৎ।
এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বনগাঁয় রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস এব্যাপারে অভিযোগ করে বলেন, ধৃত সরজিৎ মন্ডল বনগাঁ ব্লকের ঘাটবাওড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি নেতা কর্ণ ধরের নিকট আত্মীয়। এইভাবেই বিজেপি যেখানে সুযোগ পাচ্ছে, সেখানেই জালিয়াতি করে তাদের নিজেদের লোককে চাকরি দিচ্ছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মন্ডলের পাল্টা বক্তব্য, বিজেপি নেতা কর্ণ ধরের সঙ্গে ধৃত সরজিৎ মন্ডলের চাকরি পাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। তৃণমূল রাজনৈতিক স্বার্থে এই অভিযোগ তুলছে। আসলে তৃণমূল নিজেরাই একটা দুর্নীতিতে ভরা দল। নিজেদের বহু দোষ ঢাকতে অন্যদের উপর মিথ্যা দোষ চাপায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন