Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২৫

কেন কাঁপল তিব্বত? এত বড় ভূমিকম্পের আসল কারণটা কি?

 ‌

Earthquake-in-Tibet

সমকালীন প্রতিবেদন : মাঝখান থেকে ভাগ হয়ে যাবে পৃথিবী? কেন কাঁপল তিব্বত? ভয়াবহ ভূমিকম্প, মৃত্যু মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। "লাসা"ই কালপ্রিট? জানেন, লাসার গর্ভে লুকিয়ে কোন বিপদ সংকেত? এভারেস্টের একেবারে কাছেই এত বড় ভূমিকম্প, ভেঙে পড়ার চান্স আছে কি? 

মঙ্গলের ভূমিকম্পে উৎসস্থল তিব্বত। মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে ৬ বার কম্পন অনুভূত হয় নেপাল‌–তিব্বত সীমান্তে। দুই দেশের বিশাল এলাকা বিপর্যস্ত হয়। ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছে বাড়ি। হওয়ারই কথা। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.১। মানে এই ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, আশেপাশের ৫ টা দেশ কেঁপে ওঠে। উত্তরে দিল্লি থেকে পূর্ব ভারতের কলকাতা, এমনকী উত্তরপূর্ব ভারতেও এই কম্পন অনুভূত হয়। বহু মানুষের মৃত্যু, আহত হওয়ার খোঁজ মেলেছে। 

কিন্তু এত বড় ভূমিকম্পের আসল কারণটা কি? তথ্য বলছে, এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল তিব্বতের টিংরি কাউন্টি। এখান থেকে মোটামুটি ৮০ কিমি দূরেই বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। আগে বুঝতে হবে, এই গোটা অঞ্চলটাই ভূমিকম্পপ্রবণ। তাই এখানে ভূমিকম্পের আশঙ্কা বেশি থাকে সব সময়ই। এমনকি যদি গত শতাব্দী থেকে ধরা হয় তাহলে দেখা যাবে, বহু ভয়াবহ ভূমিকম্পের সাক্ষী এই অঞ্চল। বেসিক্যালি দুটো প্লেটের সংঘর্ষ থেকেই কিন্তু এই ঘটনা। 

আসলে ভারতীয় ও ইউরেশিয়ান টেকটনিক প্লেটের মধ্যে চলতে থাকা সংঘর্ষের জন্যই এমন পরিস্থিতি। এখানে একটা কথা মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে, এই টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলেই কিন্তু হিমালয় পর্বতমালা গঠিত হয়েছে। অতএব এই টেকটোনিক প্লেট খুব গুরুত্বপূর্ণ। কী এই টেকটনিক প্লেট? পৃথিবীর উপরিতলের ভূত্বক বা পাত তথা প্লেটকে টেকটনিক প্লেট বলা হয়। আর এক্ষেত্রে সেই প্লেটের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষই ঘটায় ভূকম্পন।

এবার আসা যাক টিংরিতে। এখানে এদিন যে কম্পন অনুভূত হল, তার পিছনে রয়েছে উত্তর-দক্ষিণ সঙ্কোচন এবং পশ্চিম-পূর্ব চাপের ফলে লাসা ব্লকের তৈরি হওয়া একটি ফাটল। এই লাসা ব্লক দক্ষিণ তিব্বতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক ভৌগলিক অঞ্চল। ক্রিটেসিয়াস যুগে অস্ট্রেলিয়া ও পূর্ব আফ্রিকা থেকে উদ্ভূত হয়ে এটা জুড়ে দেয় ইউরেশিয়ান প্লেটকে। 

আর এই অস্থিরতার কারণেই এখানে বারবার ঘটে চলে ভূমিকম্প। মোদ্দা কথা ওই অঞ্চলটাই ভূমিকম্প প্রবণ। আর ঠিক এই কারণেই বারবার ওই অঞ্চল জুড়ে সাংঘাতিক রকমের ভূমিকম্প হয়। তবে আগে থেকে কিছু ব্যবস্থা নিলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা হলেও কমতে পারে। 

বুঝতে হবে জাপানও কিন্তু ভূমিকম্পপ্রবণ। কিন্তু ওখানকার মানুষ সুরক্ষার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে। তাই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক কম। তাই বিজ্ঞানীরা অনেক আগেই সতর্ক করে জানিয়ে দিয়েছেন আগাম প্রস্তুত নেওয়ার কথা। তাহলে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষতি অন্তত কমানো সম্ভব। 

ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার মানুষদের নিয়মিত ট্রেনিং দেওয়া, জনসচেতনতা বাড়ানো, পাহাড়ি এলাকায় নির্মাণ কাজ যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে করা, এগুলোর প্রয়োজন আছে। কিন্তু তারপরেও এরকম সাত বা তার বেশি মাত্রার কম্পন হলে সেই ক্ষয়ক্ষতি থেকে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে চলা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।‌




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন