Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২৫

‌গুলেন বেরিতে মৃত্যু এই রাজ্যে?

Death-in-Gulen-Beri

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌হাতের বাইরে "গুলেন বেরি" সিনড্রোম? রাজ্যে প্রথম মৃত্যু? হুগলি ধনেখালিতে এক ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ করছেন চিকিৎসক। তাঁকে কলকাতায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জিবিএস এ আক্রান্ত হলে কিভাবে হবে ট্রিটমেন্ট? খরচ কত? বেসিক্যালি কাদের ক্ষেত্রে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার চান্স থাকছে? ইন ডিটেইলস জানুন এই প্রতিবেদন থেকে।

পুণে তো ছিলই, এবার জিবিএস এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা রাজ্যের বুকে। গুলেন বেরি সিনড্রোমে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যালে মৃত্যু এক কিশোরের। ডেথ সার্টিফিকেটে সেপটিক শক, জিবি সিনড্রোমের উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু, যখন জিবি সিনড্রোম শনাক্ত হয়, সেই সময় যে বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল বা ইঞ্জেকশন দেওয়ার দরকার ছিল, সেটা সেই সময় দেওয়া হয়নি। সেই ওষুধ সেই সময় ছিল না বলে পরিবারকে জানানো হয়। এমনই অভিযোগ উঠছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, প্লাজমা থেরাপি হবে। প্লাজমা থেরাপি হয়ও। কিন্তু, ওই কিশোরকে বাঁচানো যায়নি। 

এখন প্রশ্ন হল, কোন ইনজেকশন এর কথা বলা হচ্ছে? এই রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে কি জানা যাচ্ছে? চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন(বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী), এই রোগ ধরা পড়লে দ্রুত ইমিউনো গ্লোবিউলিন ইনজেকশন দিতে হয়। কী এই ইনজেকশন? এক দুই নয়, প্রায় ২০ হাজার টাকা দামের একটা ইনজেকশন। মূলত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। 

প্রথমে নিম্নাঙ্গে বা পায়েই হতে পারে প্যারালিসিস। শেষ পর্যায়ে ফুসফুসে আক্রমণ করে। তখন শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, গুলেন বেরি সিনড্রোম নতুন নয়। বহু বছর আগেও ছিল। জিবিএস এর উপসর্গগুলো কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হয়। শুরুতেই চিহ্নিত হলে সঠিক চিকিৎসায় রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। তবে শেষ পর্যায়ে ধরা পড়লে রোগীকে ভেন্টিলেটরের সাপোর্টেও রাখতে হয়। যে কোনও বয়সেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।  

কী এই গুলেন বেরি সিনড্রোম? জিবি সিনড্রোম আসলে অটোইমিউন ডিসঅর্ডার। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাই রোগীর স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে। এক কথায় স্নায়ুর এক বিরল রোগ। এই রোগে পা বা কোমর অবশ হয়ে যায়। একে একে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অসাড় হয়ে পড়ে। কথা বলার শক্তি চলে যায়। দুর্বল হয়ে যায় স্নায়ু এবং ফুসফুসের পেশি। 

শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট হয় এবং প্যারালাইসিস হওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়। অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জয়েন্টের সমস্যা, মুখের নড়াচড়ায় অসুবিধা (কথা বলা, খাওয়ার), অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন বা রক্তচাপ। এই লক্ষণগুলো প্রায় কয়েক ঘন্টার মধ্যে বা সপ্তাহের মধ্যেও বেড়ে যেতে পারে। তাই, প্রাথমিকভাবে এইসব লক্ষণ দেখলেই দ্রুত চিকিত্‍সকের পরামর্শ নিন।

কি কি খাবার এইসময় অ্যাভয়েড করবেন? চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, পনির, রাইস, চিজ এই খাবারগুলোতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়ার গ্রোথ দেখা যায়। পনির, চিজ এইগুলো সব দুগ্ধজাত পণ্য। এইগুলোতে লিস্টেরিয়া, সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ বেশি থাকার সম্ভাবনা থাকে। তাই এখন এই খাবারগুলো স্টোরেজ করে না খাওয়াই উচিত্‍। 

তাছাড়া, বাসি জল খাবার খাওয়ার ফলে অন্ত্রের নানা রকম সমস্য দেখা যায়। যার জন্য ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, জ্বর এবং বমি বমি ভাব দেখা দেয়।  রাস্তার খোলা খাবার খাওয়া যাবে না, বেশি করে গরম জল খেতে হবে। শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার বজায় রাখতে হবে। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন