সমকালীন প্রতিবেদন : বনদপ্তরের সমস্ত প্রচেষ্টাকে প্রতি মুহূর্তে ব্যর্থ করে খেল দেখাচ্ছে বাঘিনী। ল্যাজে গোবরে অবস্থা বনদপ্তরের। টোপ-জাল সব ফেইল! বাঘিনীর নাগাল পাওয়া আরো কঠিন হচ্ছে। অবশেষে ডেরা বদল! পুরুলিয়া ছেড়ে উইক এন্ডে বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরে? লোকালয়ের কতটা কাছাকাছি? আতঙ্কে সিঁটিয়ে যাচ্ছেন গ্রামের মানুষ।
ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ার পর এখন বাঘিনীর সঠিক লোকেশন বাঁকুড়া। ইতিমধ্যেই তাকে ধরতে বাঁকুড়ায় পৌঁছেছেন বন দফতরের কর্মী ও আধিকারিকরাও। জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে কুমারী নদী পার করে কাঁসাইয়ের পার ধরে পুরুলিয়ার মানবাজার-১ ব্লকের ধানাড়া পেরিয়ে বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর জলাধারের কাছাকাছি পৌঁছে যায় সে। লেটেস্ট আপডেট বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের গোপালপুর জঙ্গলে অবস্থান ওই বাঘিনীর।
এর ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই আশপাশের গ্রাম জুড়ে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। গ্রামের কাছাকাছি পাতা হয়েছে খাঁচা। গ্রামের সীমানা ঘিরে ফেলা হয়েছে নাইলনের জালে। বাঘিনীকে ধরতে কম চেষ্টা করছে না বনদপ্তর। কিন্তু সব প্রচেষ্টাই যেন ব্যর্থ হচ্ছে বারবার। রীতিমতো চড়কিপাক খাচ্ছে বনদপ্তর। এমনকি ফাঁদেও পা দিচ্ছে না বাঘিনী। ফলে বাড়ছে সাসপেন্স।
যেমন শুক্রবার সকাল থেকেই পুরুলিয়ার মানবাজার ২ নম্বর ব্লকের ডাঁগরডি বিটের পাঁইসাগোড়া জঙ্গলে জাল পাতা হয় বাঘিনীকে ধরতে। তবে, রাতের দিকে বন দফতরের সমস্ত প্রচেষ্টাকেই ব্যর্থ করে সে জাল টপকে পালিয়ে যায়। তারপর কুমারী নদী পার হয়ে বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরে উদ্দেশে রওনা দেয়। আজ সকালে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। যেহেতু বাঘিনীর গলায় রেডিয়ো কলার রয়েছে, তাই তার গতিবিধি ট্র্যাক করা যাচ্ছে।
বাঘিনী যেদিকে যাচ্ছে, তাকে ধাওয়া করছেন বন দফতরের কর্মীরা। কিন্তু পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছলো কি করে? প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অক্টোবর-নভেম্বরে মহারাষ্ট্রের তাডোবা-আন্ধারী টাইগার রিজার্ভ থেকে দুটি বাঘকে সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভে আনা হয়। জিনাত আর যমুনা। জিনাতকে ২৪ নভেম্বর সিমলিপাল নর্থের কোরে ছেড়ে দেওয়ার আগে ১০ দিনের জন্য একটি ঘরে রাখা হয়েছিল।
৯ ডিসেম্বর রাতে জিনাত পালিয়ে গিয়ে ৩৫ কিলোমিটার দূরে ঝাড়খণ্ডে পৌঁছে যায়। কিছু সময় তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ঝাড়গ্রামে তার খোঁজ মেলে। সেই থেকে চলছেই। ঝাড়গ্রাম টু পুরুলিয়া। পুরুলিয়া টু বাঁকুড়া। কিন্তু তারপরেও নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন যে, বাঘিনী বনদপ্তরের জালে কবে ধরা দেবে। বাঘিনীকে খাঁচাবন্দি করার চেষ্টা দিনরাত এক করে ফেলছে বনদপ্তর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন