সমকালীন প্রতিবেদন : দিল্লি ঢাকার আপত্তি! স্ট্র্যাটেজি বদলে রাজনীতির ময়দানে শেখ হাসিনা। ডিরেক্ট ঢুকবেন বাংলাদেশে? "দাঁতভাঙা জবাব"! ইউনুস প্রশাসনকে টার্গেট! কাদেরকে জড়ো করার আহ্বান? ভারতে বসে কি চাইছেন হাসিনা?
হাসিনার চোখে "জঙ্গিদের উর্বর লীলাভূমি" বাংলাদেশ! তাই, ভারতের আশ্রয়ে থেকেই ইউনুস সরকারকে "দাঁতভাঙা" জবাব দিতে ঘুটি সাজাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। ভারতে বসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের বিরোধিতা করাকে ভাল ভাবে নিচ্ছে না ঢাকা! ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীকে সে কথা জানিয়েওছিলেন বাংলাদেশের বিদেশসচিব। এ বিষয়ে ভারত সরকারের অবস্থানও স্পষ্ট করেছেন বিক্রম। তিনি জানান, ভারতে থেকে আওয়ামী লীগের নেত্রীর বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বিবৃতি দেওয়াকে সমর্থন করে না নয়াদিল্লি!
তাহলে কি সেই জন্যই দিল্লি-ঢাকার আপত্তির পর এবার নাম না করে ইউনূস প্রশাসনকে নিশানা করলেন হাসিনা? উত্তর অধরা। কিন্তু এটা পরিস্কার, রাজনীতি থেকে সরে যাননি মুজিব কন্যা। সময় সুযোগ মতো বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁর অস্তিত্ব। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চাপে রাখতে দিচ্ছেন হুঁশিয়ারিও। সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচারের বিষয়টাও হাইলাইটেড হাসিনার লেখায়। যারা অবৈধভাব ক্ষমতা দখল করে সাধারণ মানুষের ওপর অমানবিক নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে, তাঁদেরকে রীতিমতো দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার ডাক দিয়েছেন শেখ হাসিনা। ছেলে সজীব ওয়াজেদের এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করা হয়েছে হাসিনার এই বিবৃতি।
তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে ইউনূস সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন শেখ হাসিনা। লন্ডনে ভার্চুয়াল সমাবেশে কার্যত বর্তমানকে তুলোধনা করে ছেড়েছিলেন প্রাক্তন। বাংলাদেশের মাটিতে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের আইনি সহায়তা না পাওয়া নিয়ে আক্রমণ শানান ইউনূস সরকারের উদ্দেশ্যে। নোবেলপ্রাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। আবারও ৫ দিনের মাথায় কড়া বার্তা হাসিনার। যাকে বলে "ব্যাক টু ব্যাক"!
এদিকে, বাংলাদেশও চুপ করে বসে নেই। শুধুমাত্র সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস কে জেলে ভরে রাখা, এতদূর পর্যন্ত এসেই সীমাবদ্ধ নেই বাংলাদেশ। হাসিনাকে বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করেও শান্তি হয়নি ইউনুস সরকারের। ভারতে হাসিনার সেফ গার্ডে থাকা মোটেই বিষয়টাকে ভালোভাবে নিচ্ছে না অন্তর্বর্তী সরকার। আর তাই বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে তারা রীতিমতো মরিয়া। এবার শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে।
ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, কিছু আইনি প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। ভারতকে প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধ জানানো হবে। উল্লেখ্য, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে তৈরি হওয়া জনবিক্ষোভের জেরে গত ৫ অগস্ট দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে গোপন আস্তানায় রয়েছেন। হাসিনা দেশ ছাড়ার পরে এখন বাংলাদেশ সামলাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যুতে প্রায়ই সুর চড়াতে শোনা গিয়েছে হাসিনাকে। কখনও আমেরিকার আওয়ামী লীগের সভায়, কখনও আবার লন্ডনে।
‘ভার্চুয়াল মাধ্যমে’ উপস্থিত হয়ে ইউনূস প্রশাসনের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। দাবি করেছেন, ‘‘বাংলাদেশে অরাজকতা চলছে। বাংলাদেশের মানুষের এখন ন্যায়বিচার চাওয়ার অধিকার নেই।’’ হাসিনার দাবি, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ায় না।
কিন্তু এবার অন্তর্বর্তী সরকার প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে ভারতের কাছে হাসিনাকে চেয়ে বসলে, সেক্ষেত্রে হাসিনার নেক্সট প্ল্যান কি? বা ভারত কিভাবে বিষয়টাকে রুখবে, তা নিয়ে অলরেডি জল্পনা শুরু হয়ে গেছে। "ভারত বন্ধু" হাসিনাকে এত সহজে বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে রেডি ভারত? নাকি নতুন কোনো প্ল্যান ছকা হচ্ছে হাসিনাকে বাঁচাতে ভারতের অন্দরে? সেটাই এখন দেখার বিষয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন