সমকালীন প্রতিবেদন : রাশিয়ান চা দিদি পাপিয়া ঘোষাল। হাওড়ার অঙ্কুরহাটিতে তাঁর চায়ের দোকান "তে আমো"র গায়ে সাঁটানো হয়েছে পোস্টার। সেই পোস্টারই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় রকেটের গতিতে ভাইরাল। কেন, কি লেখা আছে ওই পোস্টারে? কেনই বা ভিডিও পোস্ট করে অঝোরে কাঁদছেন পাপিয়া?
অল্প দিনেই দারুন জনপ্রিয়তা! প্রতিদিনই ক্রেতাদের ঢল ওই ছোট্ট চায়ের দোকানে। বহুদূর থেকেও রাশিয়ান চা দিদির টানে মানুষ ছুটে যান 'তে আমো'তে! শীতের সন্ধ্যায় ছোট্ট দোকানের সামনে কম বয়সী ছেলেমেয়েদের ভিড়, আড্ডা। মাত্র তিনমাসেই স্বপ্ন পূরণের ইচ্ছা আরও দৃঢ় হয়েছিল পাপিয়া ঘোষালের। কিন্তু সেই সাজানো স্বপ্ন এবার বোধ হয় খান খান হয়ে গেল!
সবটা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল। ভাইরাল রাশিয়ান চা দিদি পাপিয়া ঘোষাল নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। যেখানে দেখা যায়, পাপিয়া অঝোরে কাঁদছেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হতে বসেছে। স্বপ্নের দোকান বন্ধ হতে চলেছে চিরকালের জন্য। দোকানের ওপর লাগানো হয়েছে পোস্টার। পোস্টারে লেখা রয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ দোকান। ব্র্যাকেটে "চিরদিন"।
আর এই পোষ্টার দেখে রীতিমতো আঁতকে উঠেছিলেন বর্তমান প্রজন্মের মহিলাদের স্বনির্ভরতার পথ দেখাতে আসা হাওড়ার পাপিয়া ঘোষাল। কিন্তু কি এমন হলো যে, একেবারে রাতারাতি দোকান বন্ধের পোস্টার সাঁটানো হলো ভাইরাল রাশিয়ান চা দিদির দোকানে? কারাই বা সাঁটালো পোস্টার?
এক সময় ছেড়েছেন মডেলিং। ছেড়েছেন এয়ার হোস্টেজের চাকরিও। আশুতোষ কলেজের ছাত্রী পাপিয়া ঘোষাল নিজের আইডেন্টিটি তৈরি করতে চেয়েছিলেন। সংসারে ব্যাকআপ দেওয়ার মতো তাঁর কেউ নেই। ২০২০ সালে পাপিয়া তাঁর বাবাকে হারান। মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়ে। সংসারের হাল ধরতে নানা ভাবনা চিন্তার পর আর কোথাও কারও অধীনে কাজ করার ইচ্ছে হয়নি।
তাই নিজে ব্যবসা শুরু করার চিন্তাভাবনা নেন। ঠিকই এগোচ্ছিলেন। কিন্তু সমাজের কিছু মানুষের পেছন থেকে টেনে ধরার অদম্য ইচ্ছে, কটুক্তি, সুন্দরী মেয়ের চায়ের দোকান চালানো নিয়ে হাজার একটা কথাকে উপেক্ষা করেই রাশিয়ান দিদি খুব অল্প সময়ে সুপারহিট হয়েছিলেন। অল্প পুঁজির ব্যবসা চা দোকান "তে আমো"র পরিচিতি বাড়ছিল।
আর এই জনপ্রিয়তাই কি তাঁর সর্বনাশ ডেকে আনলো? আন্দুল বকুলতলা থেকে কিছুটা দূরে অঙ্কুরহাটি চেকপোস্ট সংলগ্ন জাতীয় সড়ক লাগোয়া সার্ভিস রোডের পার্শ্ববর্তীতে সেই দোকান ঘিরে দেখা পাপিয়া ঘোষালের সব স্বপ্ন, আর তা পূরণের ইচ্ছে তাহলে কি অধরাই থেকে গেল? উত্তর দেবে সময়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন