সমকালীন প্রতিবেদন : এই রাজ্যেরই একটি গ্রাম, যে গ্রামটি শুধুমাত্র পরিচিতি পেয়েছে রাবরির জন্য। হ্যাঁ, এই বিশেষ গ্রামটির নাম আঁইয়া। যে গ্রামে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে থরে থরে সাজানো থাকে রাবরি। আর এই সময় মেলে গুড়ের রাবরি। একেবারে জিভে জল আনার মতো ব্যাপার। আর এই কারণেই লোকমুখে এই গ্রামের এখন পরিচিত 'রাবরি গ্রাম' হিসেবে।
এমনিতে খুব একটা কেউ চিনবে না, যতক্ষণ না বলা হচ্ছে রাবরি গ্রাম নামটি। এই শীত এলে মন হারিয়ে যেতে চায় হুগলির চণ্ডীতলার এই রাবরি গ্রামে। সময়ের সাথে সাথে, মিষ্টির মম করা গন্ধের মতো দ্রুত ছড়িয়েছে রাবরি গ্রামের কথা। কি অদ্ভুত! এই গ্রামের প্রতিটা বাড়িতে প্রতিদিন কুড়ি থেকে ত্রিশ কিলো রাবরি তৈরি হয়। যার অধিকাংশটাই যায় মিষ্টির দোকানে!
আবার কিছু মানুষ সস্তায় রাবরি পাওয়ার আশায় এই রাবরি গ্রামে এসে বাড়ির জন্য কিনে নিয়ে যান। দোকানের থেকে দামে একটু সস্তাই হয়। শুধু চিনি না, শীত এলে নলেনের সুবাসে ভরে ওঠে এই গ্রাম। নলেন গুড়ের রাবরি, এর স্বাদই আলাদা। বলছিলেন ক্রেতারা।
আগে কাঠের উনুন বা কয়লার ব্যবহার হলেও সময়ের সাথে সাথে গ্যাস ওভেনের ব্যবহার শুরু হয়েছে। না কোনো কারিগর নেই। ৭-৮ লিটার দুধ জাল দিয়ে রাবরি তৈরি করে চলেছেন ব্যবসায়ীরা। জানেন তো, এই আঁইয়া গ্রামের একশোরও বেশি বাড়িতে রাবড়ি তৈরি হয়। এই রাবরি তৈরি করাই ওই মানুষগুলোর প্রধান জীবন জীবিকা। আসলে রাবরির সঙ্গে তাদের এক অদ্ভুত ভালবাসা লেগে আছে।
কিভাবে রাবরি তৈরি হয় জানা আছে? সাত আট লিটার দুধ জাল দিয়ে ঘন করতে করতে দুই লিটার করা হল। তা থেকেই তৈরি হয় রাবরি। দুধ জাল দিয়ে তৈরি হওয়া সর দিয়ে সরভাজাও তৈরি করা হয়। রাবরির পাশাপাশি সরভাজারও চাহিদা সাঙ্ঘাতিক। রাবরি কেজি দরে ও সরভাজা প্রতি পিস হিসেবে বিক্রি করা হয়। সাধারণত গরমকালের থেকে শীতকালে রাবড়ির চাহিদা থাকে বেশি।
শীতের মরসুমে বিশেষ করে নলেনগুড়ের রাবরির ডিমান্ডই আলাদা। দামটাও জেনে যাবেন। কিনে আনতে সুবিধা হবে বৈকি। আঁইয়া গ্রামে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি হয় রাবরি। কি এই শীতে, একবার ঢু মেরে আসবেন নাকি আঁইয়াতে? থুরি সকলের প্রিয় রাবরি গ্রামে?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন