Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪

আরজি কর-কাণ্ডের আবহে ফের পথে নেমে প্রতিবাদ

 

RG-Kar-Case

সমকালীন প্রতিবেদন : সব খারাপ সময় কাটিয়ে, তৃণমূলের হাসি চওড়া হওয়ার এটাই হাই টাইম! বছর শেষের আগেই ফের দপ করে জ্বলে উঠলো আরজি কর ইস্যু। এবার কলকাতা পুলিশ নয়, টার্গেটে সিবিআই। ২৫শে ডিসেম্বর, ১লা জানুয়ারি। উৎসবের মরশুমে রাস্তাজুড়ে ধর্না, আন্দোলন, প্রতিবাদের জন্য ফুঁসছে রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ। "নতুন নাটক"?। সুবিচার চেয়ে চিকিৎসকদের পাশাপাশি বিরোধীরাও পথে‌। একেই বোধহয় বলে সময়।

একটু খোলসা করে বলা যাক! আরজি কর-কাণ্ডের আবহে ফের পথে নেমে প্রতিবাদের কর্মসূচি নেন চিকিৎসকেরা। ধর্মতলায় ধর্নায় বসতে চেয়ে পুলিশের অনুমতি না পেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ চিকিৎসকদের সংগঠনের মঞ্চ ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’। হাইকোর্টে মামলা দায়েরের অনুমতি চায় তারা। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ চিকিৎসকদের মামলা করার অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু শুধু চিকিৎসকরা তো নন, আর জি কর-কাণ্ডে সিবিআইয়ের ‘ব্যর্থতা’ আর কেন্দ্র-রাজ্যের আঁতাঁতের অভিযোগ তুলে এবং বিচারের দাবিতে অলরেডি রাজ্যের নানা প্রান্তে পথে নেমে প্রতিবাদ আন্দোলনে সামিল বিরোধীরা। টানা যাতে সিবিআইয়ের উপরে চাপ বজায় রাখা যায়, সেই জন্য আর্জিও জানিয়েছেন আরজি করের নিহত ডাক্তারি পড়ুয়ার বাবা-মা। 

কিন্তু, সময়টা কখন? বছর শেষ হওয়ার ঠিক আগে। যখন বড়দিন আর নতুন বছরের উদযাপনে গোটা কলকাতা ব্যস্ত। ঠিক সেই দুর্গাপুজোর মতোই। আর এই টাইমটাই বোধহয় বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে রাজ্য সরকারের জন্য। উৎসব অনুষ্ঠানকে ভেস্তে দেওয়ার জন্যেই বিরোধীদের এই চক্রান্ত? কি মনে হচ্ছে রাজ্য সরকারের? এই বিষয়ে আন্দোলনের কর্মসূচিকে ‘নতুন নাটক’ বলে কটাক্ষ করেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেটাও কি এমনি এমনি? 

কেউ কেউ বলছেন, রাজ্য সরকারের এমন ভাবনার পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এটা তো ফ্যাক্ট, এই আরজি কর ইস্যুতে একসময় পুলিশ-প্রশাসনকে অপদার্থ বলেছে বিরোধীরা। কলকাতা পুলিশের দিকে আঙুল উঠেছে। রাজ্য সরকারের উপর আস্থা রাখতে পারেনি নির্যাতিতার পরিবারও।‌ ভরসা করেই সিবিআইকে দেওয়া হয় মামলা। এখন সিবিআই এর উপর থেকেও আস্থা হারিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচার প্রক্রিয়া নিয়েও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কেন্দ্র আর রাজ্যকে এক করে দেওয়া হচ্ছে। 

বলা হচ্ছে, দেশ ও রাজ্য সরকার যখন অপরাধকে পিঠ চাপড়ে প্রশ্রয় দেয়, তখন আইন-শৃঙ্খলার এমন হাল এবং রায় তো চোখে দেখতেই হবে। এমনকি কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের বোঝাপড়ার বিরুদ্ধে সরব শুধু সিপিএম নয়, কংগ্রেসও। নির্যাতিতার পরিবার থেকে চিকিৎসক, এমনকি বামেরা। সকলেই চাইছেন সিবিআইকে চাপিয়ে রেখে কাজ করাতে। কিন্তু শুধুই কি সিবিআই? সিবিআই এর পাশাপাশি রাজ্য সরকারকেও কি চাপে রাখার স্ট্র্যাটেজি লুকিয়ে নেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ আন্দোলনের মধ্যে? উৎসবের মরশুমে ধর্মতলায় ধর্নায় বসার মধ্যে? 

আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং কর্তব্যে গাফিলতি মামলায় ৯০ দিন পেরিয়ে গেলেও চার্জশিট দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। চার্জশিট না দেওয়ায় এই মামলায় ধৃত আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের জামিন মঞ্জুর করে আদালত। যার বিরোধিতায় বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, আন্দোলন সবটাই প্রয়োজন। 

কিন্তু রাজ্য বা কেন্দ্রকে কোণঠাসা করার জন্য নিশ্চয়ই নয়, প্রশ্ন বিশ্লেষকদের একাংশের। এভাবে কি আদৌ আরজিকর কাণ্ডে নির্যাতিতা ন্যায় বিচার পাবেন? নাকি সময়ে সময়ে শুধুমাত্র প্রতিবাদ আন্দোলনকে হাইলাইট করে কিছু রাজনৈতিক দল এবং সেই দলকে সমর্থনকারীদের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টাই জারি থাকবে আগামীদিনেও? প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।‌‌





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন