সমকালীন প্রতিবেদন : সাধারণভাবে 'কচু' জাতীয় সব্জিকে আমরা অনেকেই ততটা গুরুত্ব দিই না। কিন্তু মানকচু প্রচুর খাদ্যগুনে সমৃদ্ধ। মানকচু বাংলার গ্রামীণ এলাকায় খুবই পরিচিত ও জনপ্রিয় একটি সবজি। এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। মানকচু কেবল স্বাদের জন্য নয়, বরং এর পুষ্টিগুণ ও ওষধি গুণাগুণের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলেন, অন্তত সপ্তাহে একদিন খাদ্যসূচিতে মানকচু রাখা উচিত।
মানকচুর খাদ্যগুন –
মানকচুতে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম। এছাড়াও, মানকচুতে পাওয়া যায় অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটারী বৈশিষ্ট্য। আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও প্রচুর ফাইবার। এই সমস্ত পুষ্টিগুনের কারণেই মানকচু বিভিন্ন রোগ থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে হার্ট ভালো রাখে। মানকচুতে প্রচুর শর্করা থাকে, যা শরীরের শক্তি সরবরাহ করে। মানকচুতে থাকা আঁশ হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। হজমশক্তি বাড়ায়। রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে বলে সুগারের রুগীরা স্বচ্ছন্দে মানকচু খেতে পরেন। ভিটামিন এ, বি ৬, এবং সি-এর ভালো উৎস এই মানকচু।
মানকচু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজ পদার্থ বিদ্যমান। মানকচুতে থাকা আঁশ হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে। মানকচু ক্যান্সার প্রতিরোধক। আমাশয় ভোগা রুগীদের মানকচু মহৌষধের কাজ করে। মানকচু স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
স্বাস্থ্য উপকারিতা –
মানকচুতে থাকা পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, যা হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। হজমে সাহায্য করে। মানকচুর কম ক্যালোরি ও বেশি আঁশযুক্ত হওয়ার কারণে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এতে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভিটামিন এ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। মানকচুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, ফলে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ।
রান্না ও ব্যবহারে সাবধানতা –
মানকচু সঠিকভাবে রান্না না করলে চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে। তাই রান্নার আগে লবণ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মানকচু একটি পুষ্টিকর ও বহুমুখী খাদ্য উপাদান, যা শরীরের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপকার সাধন করে। সঠিক উপায়ে রান্না ও গ্রহণ করলে এটি দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে। পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী তাই সপ্তাহে অন্তত একদিন খাদ্যে মানকচু রাখুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন