সমকালীন প্রতিবেদন : খেজুর প্রধানত উষ্ণঅঞ্চলের ফল। নিরক্ষীয় ও মৌসুমীজলবায়ু অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খেজুরের উপযোগিতা সবচেয়ে বেশি। এটি প্রাচীন এবং পুষ্টিকর ফল, যা আরব দেশগুলো থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মিষ্টি স্বাদ এবং স্বাস্থ্যকর উপাদানের জন্য এটি অনেক দেশে জনপ্রিয়। তাই পুষ্টিবিদদের পরামর্শ মেনে বলা হয়, রোজ খেজুর খান আর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখুন। এই প্রতিবেদনে খেজুরের স্বাস্থ্যগুণ এবং উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
খেজুরে আছে অজস্র পুষ্টিগুন। আছে ভিটামিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, লিউটেন ও জিকসাথিন, পটাশিয়াম, খনিজ, ম্যাগনেশিয়াম ও জিঙ্ক। আর আছে গ্লাইসেমিন - যা রক্তের শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। খেজুরের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বলা হয়, চারটি বা ৩০ গ্রাম পরিমাণ খেজুরে আছে ৯০ ক্যালোরি, এক গ্রাম প্রোটিন, ১৩ মিলি গ্রাম ক্যালসিয়াম, ২.৮ গ্রাম ফাইবার এবং আরও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস।
১. পুষ্টিগুণে ভরপুর খেজুরে রয়েছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যেমন –
কার্বোহাইড্রেট : শরীরের তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়।
ডায়েটারি ফাইবার : হজম শক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম : হৃদযন্ত্রের কার্যক্ষমতা উন্নত করে।
আয়রন : রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়ক।
ভিটামিন বি ৬ : মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
২. তাৎক্ষণিক শক্তি প্রদান –
খেজুর প্রাকৃতিক চিনি (গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, এবং সুক্রোজ) সমৃদ্ধ। এটি শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে, তাই রোজা ভাঙার জন্য এটি জনপ্রিয়।
৩. হজমশক্তি উন্নত করে –
খেজুরে থাকা ফাইবার এবং অন্যান্য উপাদান অন্ত্রের কার্যক্ষমতা উন্নত করে। এটি হজমে সহায়তা করে এবং পেটের গ্যাস বা অন্যান্য সমস্যা দূর করতে কার্যকর।
৪. হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা –
খেজুরে থাকা পটাশিয়াম এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হৃদযন্ত্রকে শক্তিশালী করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
৫. রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ –
আয়রন সমৃদ্ধ খেজুর রক্তশূন্যতা দূর করতে সহায়ক। এটি হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাড়ায় এবং রক্তের ঘাটতি পূরণ করে।
৬. অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস –
খেজুরে পাওয়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেহের ফ্রি র্যাডিক্যাল দূর করে। এটি বার্ধক্যের প্রভাব কমায় এবং ত্বক ও চুল সুন্দর রাখে।
৭. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় –
খেজুরে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি সর্দি-কাশি বা সাধারণ সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক।
৮. হাড় শক্তিশালী করে –
খেজুরে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, এবং ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে যা হাড় মজবুত করে। এটি অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে কার্যকর।
খেজুর শুধু মিষ্টি স্বাদের জন্য নয়, বরং এর অসংখ্য পুষ্টিগুণের জন্যও অমূল্য। নিয়মিত খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি সবার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। প্রতিদিন ৩/৪ টে খেজুর খেলে শরীর সুস্থ ও সবল থাকবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন