সমকালীন প্রতিবেদন : ঘূর্ণিঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে যায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের টিনের চালা। এই ঘটনার পর কেটে গেছে কয়েকটি বছর। সেই টিনের চালা আর লাগানো হয়নি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিতে। ভগ্নদশায় পড়ে রয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি। নেই রাধুনিও। কোনওরকমে পাশের একটি স্কুলঘরে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পড়াশোনা। এমন পরিস্থিতি বনগাঁর একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের।
বনগাঁ ব্লকের ঘাটবাওর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বোয়ালদহ আইসিডিএস সেন্টারটির এখন বেহাল দশা। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, আমফান ঝড়ের সময় উড়ে যায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের টিনের চালা। সেইসময় বেশ কিছুদিন খোলা আকাশের নিচে পড়াশোনা চলতো শিশু শিক্ষার্থীদের। এরপর বহুদিন কেটে গেলেও এখনও সেই অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে এই সেন্টারটি।
শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে আসা বাচ্চাদের কথা ভেবে এবং তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে এরপর থেকে পাশের বোয়ালদহ জুনিয়র হাইস্কুলের একটি ঘরে এই সেন্টারের ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছে এই কেন্দ্রের শিক্ষিকা বিশাখা প্রামানিক। তিনি জানালেন, শিক্ষাকেন্দ্রের ছাউনি না থাকায় সমস্যা হচ্ছিল। আর তাই পাশের স্কুলের একটি ঘরে কোনওরকমে বাচ্চাদের পড়াশোনার কাজটি চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এই কেন্দ্রে অনেকদিন হলো কোনও সহায়িকা নেই। ফলে সমস্যা হচ্ছে। একদিকে যেমন সহায়িকা নেই, তেমনই রান্না করার জায়গাও নেই। এই অবস্থায় এই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে আসা বাচ্চাদের জন্য গ্রামের একটি পরিবার বাচ্চাদের জন্য খাবার রান্না করে দিতে রাজি হন। স্কুলের শিক্ষিকা রান্নার সামগ্রী প্রতিদিন ওই বাড়িতে দিয়ে যান। রান্না হয়ে গেলে স্কুলের শেষে ওই শিক্ষিকাই বাচ্চাদের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
কিন্তু এভাবে আর কতদিন? এই প্রশ্নের উত্তরে বোয়ালদহ আইসিডিএস সেন্টারের সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে বনগাঁ ব্লকের সিডিপিও সঞ্জয় পোদ্দার জানান, এই সমস্যার কথা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে। আপাতত পাশের একটি স্কুলে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি সংস্কারের পাশাপাশি সেখানে রান্নার কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
তবে এবার ওই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রটির সংস্কার শুধু নয়, এব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে স্থানীয় ঘাটবাওড় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান আনিসুজ্জামান মন্ডল জানান, ঘাটবাওড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে নতুন তিনটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। সেগুলি হবে বোয়ালদহ, হাজিপাড়া এবং ভাসানপোতা গ্রামে। এইগুলি তৈরি হয়ে গেলে আপাতত আর কোনও সমস্যা থাকবে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন