সমকালীন প্রতিবেদন : পুরী বাঙালির চিরন্তন ভালোবাসার জায়গা। প্রকৃতি অনুরাগী মানুষ এবং ধর্মপ্রাণ মানুষের অমোঘ আকর্ষণ আছে পুরীর প্রতি। প্রথম দর্শনেই পুরীর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। তিনি পুরী দর্শনেই লিখেছিলেন 'সিন্ধুতরঙ্গ' কবিতা। কবি লিখেছেন - "প্রাণহীন এ মত্ততা না জানে পরের ব্যথা/না জানে আপন।/এমন জড়ের কোলে কেমনে নির্ভয়ে দলে/ নিখিল মানব।''
সত্যি পুরী অনন্য। ভারতের সমস্ত সমুদ্র সৈকতের মধ্যে পুরী সমুদ্র সৈকত অন্যতম। এখনো ওই সৈকতে ঝিনুক কুড়ানো যায়। পুরীর সমুদ্রে স্নান করার মজাই আলাদা। তবে অবশ্যই ছোটদের ও বয়স্কদের জলে নেমে বেশি ভেতরে না যাওয়াই উচিত। কারণ, এই সমুদ্রের উদ্দামতা অনেক বেশী।
সমুদ্র ছাড়াও পুরীর অন্যতম আকর্ষণ জগন্নাথ দর্শন। কয়েকশো বছর ধরে ধর্মপ্রাণ মানুষ জগন্নাথ দর্শন করে তৃপ্ত হচ্ছেন। এছাড়া আছে অজস্র মঠ-মন্দির। পুরীতে অন্তত ৪ দিন সময় দিতে হবে। সকালে পৌঁছে হোটেলে বিশ্রাম নিয়ে বিকেলেই চলে যান জগন্নাথ দর্শনে। পুজো দিয়ে অপেক্ষা করুন মন্দিরের চূড়ায় অবস্থিত পতাকা পরিবর্তনের জন্য।
পুরীতে বেড়াতে এসে অবশ্যই মন্দিরের চূড়ায় অবস্থিত পতাকা পরিবর্তনের দৃশ্য দেখা তেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন না। মন্দিরের খাঁজ ধরে ধীরে ধীরে একদম চূড়ায় উঠে প্রতিদিন নতুন পতাকা বদলানো হয়। সেই দৃশ্য দেখার মতো। তারপর সেই পতাকা টুকরো করে ভক্তদের মধ্যে বিক্রি করা হয়। অনেকে মনে করেন, ওই পতাকার টুকরো ঘরে রাখলে ঘরে শান্তি থাকে।
দ্বিতীয় দিন ঘুরে আসুন চিলকা। চিলকা হ্রদের মধ্যে আছে একটা ছোট দ্বীপ। সেই দ্বীপে অবস্থিত মন্দিরে অনেকে পুজো দেন। সকালে গিয়ে বিকেলে ফিরে আসুন চিলকা থেকে। তৃতীয় দিন ঘুরে নিন উদয়গিরি, খন্ডগিরি, ধবলগিরি, কোনারক মন্দির এবং নন্দন কানন। সকালে বেরিয়ে সন্ধ্যায় ফিরে আসুন হোটেলে।
আর চতুর্থ দিন পুরীতে যে অজস্র মঠ মন্দির আছে, তা দেখার জন্য একটা অটো ভাড়া নিয়ে সব দেখে বিকেলের মধ্যে ফিরে আসুন। খুব তাড়া থাকলে সেদিনই রাতের ট্রেনে ফিরে আসতে পারেন। আর হাতে যদি সময় থাকে, তাহলে একটা গোটা দিন সমুদ্রে স্নান করে, বসে কাটিয়ে দিন। বেশ ভালো লাগবে।
পুরীতে যাওয়ার অজস্র ট্রেন। তবে হাওড়া থেকে পুরী এক্সপ্রেস বা জগন্নাথ এক্সপ্রেস সবচেয়ে ভালো। বন্দে ভারতের মতো আধুনিক, আরামদায়ক ট্রেনের অভিজ্ঞতা নিতে হাওড়া–পুরী বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে চড়তে পারেন। এছাড়াও, দুরন্ত এক্সপ্রেস,শতাব্দী এক্সপ্রেস, ধৌলি এক্সপ্রেস তো আছেই। আর শিয়ালদা থেকে রয়েছে দুরন্ত এক্সপ্রেস।
থাকার জন্য পুরীতে রয়েছে অজস্র হোটেল, লজ, হলিডে হোম। এখন প্রায় সব হোটেল অন লাইনে বুকিং করার সুযোগ রয়েছে। প্রথমে ট্রেনের টিকিট কেটে গুগুল খুলে হোটেল বুক করে নিন। বিভিন্ন রেটের থাকার জায়গা মিলে যাবে। ৪/৫ দিন বড়ো আনন্দে কেটে যাবে। তাহলে চটপট সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন