Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪

চিকিৎসার গাফিলতিতে অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুর অভিযোগ বনগাঁর এক নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে

 ‌

Medical-negligence

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌চিকিৎসার গাফিলতিতে এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলার মৃত্যু হয়েছে, এই অভিযোগ উঠল বনগাঁর একটি নার্সিংহোমের মালিক তথা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে ওই চিকিৎসক এবং নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হল থানায়। 

জানা গেছে, গাইঘাটা থানার গোয়ালবাগী গ্রামের যুবতী অন্তরা পালের বিয়ে হয় অশোকনগরের সেনডাঙ্গা এলাকার যুবক পলাশ পালের সঙ্গে। অন্তরা বর্তমানে ১৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে তিনি প্রচন্ড পেটের যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছিলেন। 

এই অবস্থায় বাপের বাড়ি থেকেই ৬ নভেম্বর, বুধবার চিকিৎসার জন্য তাঁকে বনগাঁর ড্রিমল্যান্ড নার্সিংহোমে আনা হয়। এই নার্সিংহোমের মালিক তথা চিকিৎসক মলয় সাহা তাঁর চিকিৎসা করেন। প্রাথমিকভাবে কাগজপত্র এবং অন্যান্য পরীক্ষা করে তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়ে নেন।

কিন্তু সেখানে তিনদিন কেটে গেলেও রোগীর শারীরিক অবস্থার কোন পরিবর্তন না হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েন পরিবারের লোকেরা। পরিবারের লোকেরা অন্তরাকে কোন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে দিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য ডাক্তার মলয় সাহাকে অনুরোধ করেন। 

পরিবারের লোকের অভিযোগ, তাঁদের অনুরোধে কর্ণপাত না করে মলয় সাহা নিজেই তাঁদের মেয়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। এই পরিস্থিতিতে তিন দিন কেটে যাওয়ার পর শনিবার সকালে হঠাৎ করেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ একটি অ্যাম্বুলেন্স ডেকে তাঁদের মেয়েকে বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়।

অভিযোগ, নার্সিংহোম থেকে হাসপাতলে রোগীকে পাঠানো হলেও কোন ট্রান্সফারের কাগজপত্র নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে পাঠায়নি। এই অবস্থায় শনিবার বিকেলে মৃত্যু হয় অন্তরা পালের। আচমকা অন্তরার মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে। 

মৃত অন্তরার মামা বিশ্বজিৎ পাল ওইদিনই বনগাঁ থানায় ডাক্তার মলয় সাহার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেখানে তিনি তাঁর ভাগ্নির এই অকাল মৃত্যুর জন্য মলয় সাহাকেই দায়ী করেছেন। তিনি চান তাঁর ভাগ্নির মৃত্যুর আসল কারণ উদ্ঘাটিত হোক এবং চিকিৎসার গাফিলতি হলে তার জন্য ডাক্তার মলয় সাহার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক প্রশাসন। 

মৃতার মায়ের অভিযোগ, ডাক্তার মলয় সাহা একজন গাইনোকোলজিস্ট না হয়েও অর্থের লোভে তিনি তাঁর মেয়ের ভুল চিকিৎসা করে গেছেন। তাঁরা তাঁদের মেয়ের চিকিৎসার জন্য একজন গাইনোকলজিস্টের পরামর্শ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও সেই অনুরোধ রাখেননি ডাক্তার মলয় সাহা, এমনই অভিযোগ মৃতার মায়ের।

যদিও চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ডাক্তার মলয় সাহা বলেন, '১৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন অন্তরা পাল। গর্ভাবস্থায় তার সন্তানের মৃত্যু হয়। ডাক্তারি কাগজপত্রে তার প্রমাণ রয়েছে। তা সত্ত্বেও বাড়ির লোকেরা অস্ত্রপচার করে মৃত বাচ্চা বের করাতে রাজি ছিলেন না। তাই নরমালে মৃত বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করানো হয়েছিল। কিন্তু আচমকা তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তখন আমরাই তাকে বনগাঁ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।'‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন