সমকালীন প্রতিবেদন : ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে চুনকাম। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা। হাজারো সমস্যার বোঝা মাথায় নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পা রেখেছিল ভারত। অনুশীলনে চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছিলেন শুভমন। ব্যক্তিগত কারণে দেশে থাকতে হয়েছিল রোহিতকেও। সমস্যা কবলিত এই টিম ইন্ডিয়া স্রেফ উড়ে যাবে মিচেল স্টার্ক-প্যাট কামিন্সদের আগুন বোলিংয়ের সামনে, এমনটাই মত ছিল বিশেষজ্ঞদের।
প্রথম ইনিংসে অবশ্য সেই আতঙ্কই তাড়া করছিল ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের। মাত্র ১৫০ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পরে ভারত পার্থ টেস্ট জিততে পারবে, অতি বড় ভক্তও সেটা ভাবতে পারেননি। কিন্তু অধিনায়ক বুমরাহ আশা ছাড়েননি। প্রথম ইনিংসে অজি পেসারদের পালটা আগুনে বোলিং শুরু করেন সিরাজ-হর্ষিতরা। মাত্র ১০৪ রানে গুটিয়ে দেন অজি ব্যাটিংকে।
সেখান থেকেই শুরু হয় ভারতের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। বোলারদের দুর্দান্ত লড়াইয়ের পর ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের তাণ্ডব দেখল পার্থের অপ্টাস স্টেডিয়াম। যশস্বী জয়সওয়ালের নজিরকাড়া ১৬১, বিরাট কোহলির ৩০তম সেঞ্চুরি, ফর্মে ফেরা কে এল রাহুলের ৭৭ রান- সব মিলে ৪৮৭ পর্যন্ত পৌঁছে যায় ভারত। ৫৩৪ রানের পাহাড় চাপে অজি ব্যাটসম্যানদের ঘাড়ে। রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ১২ রানের মাথায় তিন উইকেট খুইয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় অজিরা।
তবে অস্ট্রেলিয়া মানেই শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়াই। পার্থ টেস্টের চতুর্থ দিন দুরন্ত ব্যাটিং শুরু করেন ট্র্যাভিস হেড, মিচেল মার্শরা। ৮৯ করা হেডকে প্যাভিলিয়নে ফেরান বুমরাহ। জীবনের প্রথম টেস্ট উইকেট হিসাবে মিচেল মার্শকে তুলে নেন নীতীশ রেড্ডি। এই দুই ব্যাটসম্যান আউট হতেই ভারতের জয়ে কার্যত সিলমোহর পড়ে যায়। লোয়ার অর্ডারে অ্যালেক্স কেরি চেষ্টা করলেও, ম্যাচ ড্র করা তাঁর একার পক্ষে সম্ভব ছিল না।
শেষমেষ ২৯৫ রানের বিরাট ব্যবধানে পার্থ টেস্টে জিতে যায় টিম ইন্ডিয়া। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে মাত্র একবার পার্থে গিয়ে জিতেছিল ভারত। ২০০৭-০৮ মরশুমে জেতে অনিল কুম্বলের টিম ইন্ডিয়া। সেই ইতিহাস আরও একবার ছুঁয়ে দেখলেন বুমরাহরা। এবার সামনে অ্যাডিলেড টেস্ট। আবারও দিনরাতের ম্যাচে অজিদের মুখোমুখি ভারত। ৩৬ অলআউটের শাপমোচন করতে পারবে গৌতম গম্ভীরের ‘নতুন’ ভারত? উত্তর দেবে সময়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন