সমকালীন প্রতিবেদন : একটা সময় সব কিছু ড্রয়িং রুমে রাখা বোকাবাক্সতে বন্দী থাকলেও, বর্তমানে ছবিটা কিছুটা অন্যরকম। এখন মুঠো ফোনেই বন্দী জীবন। এই সময় এসে দেখা যাবে, বেশিরভাগ শিশুর হাতেই মোবাইল ফোন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ইনস্টা রিল, বাড়ির খুদেও সারাদিন ধরে ঘাঁটাঘাটি করছে ফোন। ফোন থেকে দূরে রাখলেও বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে তারা।
বর্তমানে শিশুরাও রীতিমতো আসক্ত মোবাইল ফোনে। মোবাইল থেকে সন্তানকে দূরে রাখাই যেন বাবা-মায়েদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। বাড়িতে বসেই মোবাইলের মাধ্যমে সব পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে, আমরা বড়রাও মোবাইলের উপর একটু বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি যে, এখন একটু অবসর মানেই মোবাইল ঘাঁটা।
বড়দের পাশাপাশি ছোটদের ক্ষেত্রেও মোবাইল নিয়ে নাড়াচাড়ার এমন দৃশ্য ট্রেনে, বাসে, অফিসে, খেলার মাঠে, সিনেমা হলে, শপিং মলে, রাস্তাঘাটে, স্কুল-কলেজে, এমনকি চিকিৎসাকেন্দ্রেও এখন স্বাভাবিক দৃশ্যে পরিণত হয়েছে। যার ফলে রীতিমতো চিন্তায় বাচ্চাদের মা-বাবারা।
স্কুল, কলেজগামী কিশোর-কিশোরী এবং যুবক- যুবতীদের পাশাপাশি, ২-৩ বছর বয়সী খুদেরাও ফোনের নেশায় বুঁদ। মোবাইলেই পড়া, মোবাইলেই খেলা। কেউ ফোন ছাড়া মুখে তোলে না খাবার, তো কারও ফোন হাতে না পেলেই কান্না। অনেক বাবা-মাই সন্তানের এহেন ফোনের নেশায় বিব্রত।
আবার জোর করে বাচ্চাদের ফোন থেকে দূরে রাখাও কঠিন। এতে অনেক সময় জেদ বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, মোবাইলের নেশা বাচ্চাদের মানসিক বিকাশের ব্যাপক ক্ষতি করছে। সেইসঙ্গে অত্যধিক স্ক্রিন টাইমের কারণে চোখেরও দফারফা হচ্ছে। বাচ্চাদের ফোন থেকে দূরে কি ভাবে রাখবেন?
যখনই বাবা-মা সন্তানদের সঙ্গে থাকবেন, ফোনকে নিজেদের থেকে দূরে রাখুন। বাচ্চার সঙ্গে কথা বলুন, খেলুন, গল্প বলুন। এতে করে শিশুরাও নিজে থেকেই ফোন থেকে দূরে থাকবে। শিশুদের ছোট ছোট দায়িত্ব দিন। ঘরের কাজে ওদেরও নিজের সঙ্গী করুন, যাতে তাৎক্ষনিকভাবে মোবাইলের কথা ভুলে যায়।
জন্মদিন, ফাংশন ইত্যাদিতে বাচ্চাদেরকে কিছু ছোট ছোট বিশেষ কাজ দিন। গাছে জল দেওয়া, খেলনা গুছিয়ে রাখা, আলমারি পরিষ্কারে সাহায্য, ঘর সাজানোর মতো কাজে বাচ্চাদের যুক্ত করুন। আর এভাবেই বিভিন্ন সময় আপনার সঙ্গে আপনার খুদেকেও কাজে লাগান। সেই দায়িত্ব ভালবেসেই নেবে ছোটরা। আর এভাবেই একটু একটু করে মোবাইল আসক্তি কমবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন