সমকালীন প্রতিবেদন : দাদুর সঙ্গে ব্যাঙ্কে গিয়েছিল ছেলে। আর সেই 'অপরাধে' ছেলেকে শেকল দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধোর করে পিলারের সঙ্গে সারারাত আটকে রাখলো বাবা। আর স্বামীর এই অমানবিক কান্ডের কথা বাধ্য হয়ে পুলিশকে জানালে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেল পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে গোপালনগর থানার শুল্ক দুর্গাপুর এলাকায়।
জানা গেছে, এই গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় কর্মকার পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। কাজের সূত্রে মাঝেমধ্যেই বাড়ির বাইরে যেতে হয়। বাড়িতে স্ত্রী, দুই সন্তান এবং অন্যান্যরা রয়েছেন। ছেলে স্থানীয় একটি হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। অভিযোগ, সঞ্জয় মাঝেমধ্যেই নেশা করে। আর তার জেরে স্ত্রীকে মারধোরও করে, এমনই অভিযোগ তার স্ত্রী সোমা কর্মকারের।
বুধবার ছেলে তার দাদুর সঙ্গে ব্যাঙ্কে যায়। বাড়িতে ফেরার পর মা তাকে পড়তে বসতে বললেও সে গাফিলতি করছিল। কথায় কথায় সেই বিষয়টি ফোন করে স্বামীকে জানিয়ে দেন সোমাদেবী। কিন্তু বাড়ি ফিরে স্বামী যে ছেলের উপর অমানবিক আচরণ করবে, তা বুঝতে পারেন নি তিনি। ফলে স্বামীর কান্ডে হতবাক হয়ে যান। বাধ্য হয়ে স্বামীর আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন।
সোমা কর্মকার জানান, স্বামী বাড়ি ফেরার পর ছেলেকে ঘরের একটি পিলারের সঙ্গে শেকল দিয়ে বেঁধে ইলেকট্রিকের তার দিয়ে বেধড়ক মারতে থাকে। স্বামীর এমন আচরনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিনিও আক্রান্ত হন। এইভাবে ছেলেকে সারারাত শেকল দিয়ে বেঁধে রাখে তার বাবা। সকালে স্বামী কাজে বেরিয়ে গেলে অন্যদের সহযোগিতায় শেকলের তালা ভেঙে ছেলেকে মুক্ত করেন মা সোমা কর্মকার।
এরপর ছেলেকে নিয়ে বনগাঁয় বাপের বাড়িতে আশ্রয় নেন সোমাদেবী। পাশাপাশি, স্বামীর বিরুদ্ধে গোপালনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সঞ্জয় কর্মকারকে গ্রেপ্তার করেছে।
সোমা কর্মকারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে মাঝেমধ্যেই নেশা করে এসে তাঁকে মারধোর করতো স্বামী সঞ্জয়। কিন্ত সেইভাবে প্রতিবাদ করার সাহস পান নি। এদিন ছেলের উপর এমন অত্যাচার হতে দেখে আর চুপ থাকতে পারেন নি তিনি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন