সমকালীন প্রতিবেদন : আদালতের কাছে বেলবন্ডের আবেদন ছাড়াই জেলখানা থেকে মুক্তি পেয়ে গেল এক বিচারাধীন বন্দি। অথচ ওই বন্দির পক্ষের আইনজীবী কিছুই জানেন না। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন বনগাঁ আদালতের আইনজীবী মনোজ সাহা। এই ঘটনার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
জানা গেছে, অনুপ্রবেশকারী হিসেবে খলিল খালাসী নামে এক বাংলাদেশিকে গত ২১ অক্টোবর বাগদা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বাগদা থানা পুলিশ। পরদিন তাকে বনগাঁ আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালতে তার পরবর্তী হাজিরার দিন পরে ৪ নভেম্বর।
আইনজীবী মনোজ সাহা বুধবার সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন যে, মঙ্গলবার বনগাঁ আদালতের জিআর সেকশন থেকে তাকে জানানো হয় যে, তাঁর মক্কেল জামিন পেয়ে সংসোধনাগার থেকে বেরিয়ে গেছে। এমন ঘটনায় হতবাক্ হয়ে যান তিনি। কারণ, তিনি আদালতের কাছে ওই বন্দির জন্য জামিনের কোনও আবেদনই করেন নি।
মনোজ সাহার বক্তব্য, নিয়ম অনুযায়ী বিচারাধীন বন্দির জামিনের জন্য আইনজীবী মারফত আদালতের কাছে বেলবন্ডের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। এরপর বিচারক বিচার বিবেচনা করে সেই আবেদনের উপর তাঁর সিদ্ধান্ত জানান। অথচ এক্ষেত্রে তিনি আদালতের কাছে কোনও আবেদন না জানিয়েও ওই বিচারাধীন বন্দি কিভাবে জেলখানা থেকে বেরিয়ে গেল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
এব্যাপারে বনগাঁ ল ইয়ারস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সমীর দাস জানান, বেলবন্ড ছাড়াই একজন বিচারাধীন বন্দি জোলখানা থেকে মুক্তি পেয়ে যাওয়ার ঘটনা এর আগে তিনি কখনও শোনেন নি। এর পেছনে বড় কোনও চক্র কাজ করেছে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর কথা অনুযায়ী, বনগাঁ আদালতের জিআর সেকশন থেকেই কাগজপত্র রেডি করে বিচারকের সই হয়ে রিলিজ অর্ডার বেরিয়ে গেছে।
তাঁর আরও অভিযোগ, 'বিভিন্ন সূত্র মারফত খবর নিয়ে জানা গেছে, বনগাঁ আদালতে বিচারাধীন ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ ইত্যাদির মত বড় বড় প্রায় ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টি মামলার রেকর্ড বনগাঁ আদালত থেকে মিসিং হয়ে গিয়েছে। গত এক বছর ধরে সেই সব রেকর্ডের কোনও হদিস নেই। এই বিষয়টি আমরা কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্টারকে জানাচ্ছি।'
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় শুরু হয়েছে বনগাঁ আদালতের আইনজীবীদের মধ্যে। কিভাবে এমন ঘটনা ঘটলো, তার তদন্তের দাবি করেছেন আইনজীবীরা। বিচারাধীন বন্দি বর্তমানে কোথায় আছে, তার কোনও হদিশ এখনও মেলে নি। বাংলাদেশে তার পরিবারের সদস্যরা চিন্তিত। বাংলাদেশে তিনি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সন্দেহ আরও ঘনিভূত হচ্ছে আইনজীবীদের।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন