Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪

উড়িশাতেই আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় 'ডানা'

 

Cyclone-Dana-landfal

সমকালীন প্রতিবেদন : বাংলাকে কিছুটা রক্ষা করে অবশেষে ওড়িশার উপকূলেই আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় ডানা। রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারের মধ্যবর্তী স্থানেই আছড়ে পড়ল এই ঘূর্ণিঝড়। ল্যান্ডফলের সময় তার গতিবেগ ছিল প্রায় ১১০ কিলোমিটার। ল্যান্ডফলের কিছু আগে থেকেই অবশ্য প্রকৃতি তার তান্ডব শুরু করে দেয়। 


আবহাওয়া দপ্তরের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত ১১ টা ১২ মিনিট নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ডানার ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শুরু হয় এটি স্থলভাগে প্রবেশ করার সময় গতিবেগ ছিল ঘন্টা প্রতি ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। পরে সেটি বেড়ে সর্বোচ্চ একশ কোটি কিলোমিটার হয়। এরপর গোটা প্রক্রিয়া শেষ হতে আরো প্রায় চার ঘন্টা লেগে যায়। 


তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু অংশে পড়েছে।  রাজ্যের বাকি অংশে বড় কোন প্রভাব এখনো পর্যন্ত নেই। পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা, মন্দারমনি সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার সমুদ্র উপকূল এলাকায় প্রবল বেগে ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। এইসব এলাকায় বেশ কিছু গাছ উপড়ে গেছে। টিনের চালা উড়ে গেছে। সমুদ্রের ঢেউ বেশ কয়েক ফুট উচ্চতায় আছড়ে পড়ে গার্ডওয়ালের গায়ে।


ঘূর্ণিঝড়ে অবশ্য বড় কোনো প্রভাব কলকাতা সহ অন্যান্য জেলাতে এখনো পর্যন্ত দেখা যায়নি। তবে ভোররাত থেকে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে বহু জায়গায়। আকাশ কালো করে রয়েছে। সারা দিনে সূর্যের দেখা মেলা ভার। বৃষ্টির জের শুক্রবার দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম এইসব জেলাগুলিতে গোটা দিন চলবে বলেই জানা গেছে।


তবে এখনো সম্পূর্ণ বিপদমুক্তি ঘটে নি বলে জানাচ্ছেন আবহবিদেরা। কারণ, ঘূর্ণিঝড়ের শেষ অংশ অর্থাৎ লেজ এখনো দাপট দেখাচ্ছে। লেজের দাপট এখনো চলছে এবং বাংলার কোন কোন এলাকা দিয়ে এর প্রভাব শেষ পর্যন্ত যাবে, তা এখনো বোঝা যাচ্ছে না। হলে এই সময়কালে সাধারণ মানুষদের বাইরে বের না হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে প্রশাসন।


উড়িশার যে অংশে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে, তার প্রভাব ওড়িশার ভিতরকনিকা এলাকাটি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা এখনো জানা যাচ্ছে না। ভিতরকণিকা এলাকায় অনেক পরিযায়ী পাখি এবং অলীভ রিডলে প্রজাতির কচ্ছপ আশ্রয় নেয়। এই ঝড়ের দাপটে তাদের কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা দেখা হচ্ছে।


এই রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা, মন্দারমনি ইত্যাদি সমুদ্র উপকূলগুলিতে সবথেকে বেশি ঝড়ের প্রভাব পড়েছে। এখনো পর্যন্ত সেখানে সমুদ্র উত্তাল হয়ে রয়েছে। প্রবল বেগে বৃষ্টি হচ্ছে। অধিকাংশ পর্যটককে এই এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও ঝড় দেখার জন্য নতুন করে দিঘা এলাকায় হাজির হয়ে যান কিছু পর্যটক। তাদেরকে অবশ্য সমুদ্রের ধারে কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।


ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ সকাল ১০ টা পর্যন্ত শিয়ালদা দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। এর কারণে অবশ্য যথেষ্ট ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। উত্তরবঙ্গ থেকে যেসব ট্রেন এদিন শিয়ালদায় এসে পৌঁছেছে, সেইসব ট্রেনের যাত্রীরা এখন শিয়ালদা স্টেশনে বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়টি আস্তে আস্তে তার শক্তি ক্ষয় করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। আর তার জেরে আজ সারাদিন বৃষ্টি চলবে।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন