Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪

শক্তি বাড়িয়ে উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ডানা

 ‌

Cyclone-Dana-is-advancing

সমকালীন প্রতিবেদন : ঘন্টায় ১২ কিলোমিটার গতিবেগে উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ডানা। এই মুহূর্তে পারাদ্বীপ থেকে ২৬০ কিলোমিটার, ধামারা থেকে ২৯০ কিলোমিটার এবং সাগরদ্বীপ থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় ডানা। আজ রাতের দিকেই এই ঘূর্ণিঝড়টি তান্ডব শুরু করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কলকাতা সহ একাধিক জেলায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কোথাও বৃষ্টির দাপট বেশি, কোথাওবা কম। কোথাও কোথাও দমকা হাওয়া বইছে। ইতিমধ্যেই দিঘা, মন্দারমনির মতো সমুদ্র উপকুল এলাকায় ঢেউয়ের উচ্চতা বাড়তে শুরু করেছে। পর্যটকদের সমুদ্র এলাকা থেকে একেবারেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে দিঘা এলাকায় রাস্তার উপর বাঁশের ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে।

পূর্ব রেল সুত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব থেকে বিপদ এড়াতে শিয়ালদা শাখায় ১৯০ টি লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। এরমধ্যে শিয়ালদা উত্তর শাখার বনগাঁ ও হাসনাবাদ লাইনের ট্রেনও রয়েছে। এই দুই শাখায় আজ রাত আটটার পর আর কোন ট্রেন চলাচল করবে না। একইভাবে দূরপাল্লার ট্রেন এবং বিমান চলাচলের উপরেও নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ছটার পর দমদম বিমানবন্দর থেকে আর কোন প্লেন ওঠানামা করবে না। শুক্রবার সকাল ন'টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।

এখনো পর্যন্ত আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, আজ রাত থেকে শুক্রবার ভোর রাতের মধ্যেই উড়িষ্যার ধামারা থেকে ভিতরকণিকার মধ্যে আছড়ে পড়বে এই ঘূর্ণিঝড়। আর তখন তার সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘন্টায় ১২০ কিলোমিটার। দিঘা সহ পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র উপকূল এলাকায় এই ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। আর কলকাতায় হতে পারে ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। 

তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টি যে যথেষ্ট হবে, তার আভাস পাওয়া গেল বৃহস্পতিবার সকালেই। এদিন সকাল থেকে আকাশ কালো করে শুরু হয়েছে একটানা বৃষ্টি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই বৃষ্টির পরিমাণ আরো বাড়বে বলে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে বিভিন্ন নদীর ফেরিঘাটে নৌকা বা ভুটভুটি চালানোর উপরে নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে। নবান্ন থেকে জেলা এমনকি ব্লক এবং পুরসভা এলাকাগুলিতেও বিশেষ কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। 

ঘূর্ণিঝড় ডানার কারণে উড়িষ্যা এবং বাংলা জুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই পুরী সহ উড়িষ্যার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র থেকে প্রায় অধিকাংশ পর্যটককেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সমুদ্র উপকূল এলাকাগুলি থেকেও সরিয়ে আনা হয়েছে কয়েক লক্ষ মানুষকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নদী বাঁধগুলি নিয়ে চিন্তিত এলাকার মানুষজন। কারণ, ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে সমুদ্র এবং নদীগুলিতে জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

ইতিমধ্যে রাজ্যের বিপজ্জনক এলাকাগুলিতে বহু ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নেওয়া অসহায় মানুষদের জন্য রান্না করা খাবার, শুকনো খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে এই ত্রাণ শিবিরগুলিতে সরকারি উদ্যোগে রেখে দেওয়া হবে। তবে শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ডানা এই রাজ্যে কতটা প্রভাব ফেলবে, সেই আতঙ্কের প্রহর গুনছেন রাজ্যবাসী।‌




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন