সমকালীন প্রতিবেদন : কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে আজ সন্ধে ৬টায় আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারকে মেল করে জানানো হয়েছে যে, স্বচ্ছতা বজায় রেখে খোলা মনে ৫ দফা দাবিকে সামনে রেখে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি আরজিকর কাণ্ডে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকেরা। ধর্না মঞ্চে আচমকা মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতির পর এমনই জানিয়েছিলেন এই আন্দোলনের অন্যতম মুখ অনিকেত মাহাতো।
আর জি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত তরুণী চিকিৎসকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনার পর বিচারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসাকেরা। একটি ফ্রন্ট তৈরি করে এই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। গত চার দিন ধরে ঝড়, বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন তাঁরা।
গোটা আন্দোলনের আজ ছিল ৩৫ দিন। আর সেদিনই দুপুর ১টা নাগাদ আচমকাই রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে সঙ্গে নিয়ে ধর্না মঞ্চে হাজির হন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেখানে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বেশকিছু প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের কাজে ফেরার জন্য আবেদন জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি আপনাদের প্রতি কোন অবিচার করব না। আমি আপনাদের ডিমান্ডগুলো ভাববো, চিন্তা করব। কাজে ফিরতে চাইলে সহানুভূতির সঙ্গে আপনাদের দাবি নিয়ে বিবেচনা করা হবে।' আজই রাজ্যের সমস্ত রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রোগী কল্যাণ সমিতিতে কলেজের প্রিন্সিপালকে চেয়ারম্যান করে জুনিয়র ও সিনিয়র চিকিৎসক, পুলিশ এবং জনসাধারণের প্রতিনিধিদের রেখে কমিটি করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন ধর্না মঞ্চ থেকে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আন্দোলনে অংশ নেওয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আমি কোনও ব্যবস্থা নেব না। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, দিদি হিসেবে আপনাদের কাছে এসেছি। একটু সময় দিন। দোষীরা অবশ্যই সাহায্য পাবে। সিবিআইকে অনুরোধ করবো, তিন মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে দোষীদের বিরুদ্ধে যাতে ফাঁসির সাজা হয় তার ব্যবস্থা করুন।'
মুখ্যমন্ত্রী ফিরে আসার পর নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসাকেরা। পাশাপাশি, তাঁরা এদিন বিকেল ৪টে ২৯ মিনিট নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে একটি ইমেইলও পাঠান। সেখানে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারপর থেকে তাঁরা নবান্নের উত্তরের আশায় বসে থাকেন।
এব্যাপারে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের পক্ষে অনিকেত মাহাতো সাংবাদিকদের বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর আজ এই ধর্না মঞ্চে আসাটাকে আমরা পজিটিভ পদক্ষেপ হিসেবে দেখতে চাইছি। আমরা তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাই। তবে অবশ্যই স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং পাঁচ দফা দাবির সমর্থনে বৈঠকের সময় এবং জায়গা চেয়ে আমরা তাঁর দপ্তরে মেইল পাঠিয়েছি। আশা করি খোলা মনে আলোচনার মাধ্যমে জট কাটবে।'
এরপর বিকেল ৫টা ৯ মিনিট নাগাদ রাজ্য সরকারের পক্ষে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ আন্দোলনকারীদের মেল করে জানান যে, সন্ধে ৬টা কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে বৈঠক হবে। ১৫ জনের প্রতিনিধিদল এই বৈঠকে থাকতে পারবেন। এই মেল পাওয়ার পর জুনিয়র চিকিৎসকেরা ঠিক করেন যে, ১৫ জন নয়, তাঁরা ৩০ জনের প্রতিনিধিদল এই বৈঠকে অংশ নিতে চান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন