সমকালীন প্রতিবেদন : সাইবার কাফের নামে জাল ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, কাস্ট সার্টিফিকেট, বার্থ সার্টিফিকেট তৈরি করে দেওয়া হতো। ৪ বাংলাদেশীকে গ্রেফতার করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই বনগাঁ শহরের বুক থেকে এমনই এক জালিয়াতের সন্ধান পেল বনগাঁ থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে দোকানের মালিককে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বনগাঁ শহরে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল একটি বিশেষ সূত্র মারফত পুলিশের কাছে খবর আসে যে, চারজন বাংলাদেশী বনগাঁ এলাকার একটি বাড়িতে লুকিয়ে রয়েছে। সেই খবরের ভিত্তিতে পুলিশ সেই নির্দিষ্ট বাড়িতে হানা দিয়ে চারজন বাংলাদেশী মহিলা সহ এক দালালকে গ্রেফতার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে আসে মারাত্মক তথ্য।
পুলিশ জানতে পারে যে, বনগাঁর গান্ধীপল্লী রোড এলাকায় রাকেশ ডিজিটাল নামে একটি কম্পিউটারের দোকান রয়েছে, যেখানে ট্রেন এবং প্লেনের টিকিট বুকিং, বিভিন্ন রকমের ট্যাক্স জমা করা, ট্রেড লাইসেন্স বানিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ভোটার কার্ড, আধার কার্ড তৈরি করে দেওয়ার মতো কাজ করা হয় বলে বোর্ডে লেখা আছে। কিন্তু এর আড়ালে চলত জালিয়াতির কারবার।
ধৃত বাংলাদেশীদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে যে, চোরাপথে যেসব বাংলাদেশী বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে, তাদের অনেকেই ওই দোকানে গিয়ে নিজেদের নামে নকল ভারতীয় ভোটার কার্ড, কাস্ট সার্টিফিকেট, বার্থ সার্টিফিকেট এর মতো বিভিন্ন নথি মোটা টাকার বিনিময় তৈরি করিয়ে নিত।। আর সেই নথি দেখিয়েই তারা নিজেদেরকে ভারতীয় হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করে।
এই খবরের ভিত্তিতে পুলিশ গতকাল রাতে রাকেশ ডিজিটাল নামের ওই দোকানে হানা দিয়ে সেখান থেকে বেশ কিছু জাল নথি উদ্ধার করে, যার মধ্যে রয়েছে জাল ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, বিভিন্ন রকম সার্টিফিকেট ইত্যাদি। গ্রেফতার করা হয় দোকানের মালিক রাকেশ মণ্ডলকে। দোকানের কম্পিউটার সহ অন্যান্য বেশ কিছু সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ।
ধৃত রাকেশকে মঙ্গলবার বনগাঁ আদালতে তোলা হয়। আদালতের নির্দেশে তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এব্যাপারে বনগাঁ পুলিশ জেলার সুপার দীনেশ কুমার জানান, ধৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে যে, সে এতদিনে কত জাল নথি তৈরি করেছে এবং সেগুলি কোথায় কোথায় অনৈতিকভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন