সমকালীন প্রতিবেদন : প্যারিস অলিম্পিক গেমসে ইতিহাস তৈরি করে কুস্তির ৫০ কেজির ফাইনালে উঠেছিলেন বিনেশ। তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন আর এক ইতিহাস তৈরির মুখে। প্যারিস থেকে ভিডিও কলে মাকে জানিয়েছিলেন, সোনা জিতেই ফিরবেন। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচের আগে অন্ধকার নেমে আসে তাঁর স্বপ্নের মাঠে।
দেখা যায়, ৫০ কেজি ১০০ গ্রাম ওজন হচ্ছে তাঁর। ওই ১০০ গ্রাম বেশি ওজন থাকায় তাঁকে বাতিল করা হয়েছে। ওজন বেশি হওয়ায় ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড রেসলিং জানিয়ে দেয়, সেমিফাইনালে জেতা রুপোর পদকও তিনি পাবেন না, কারণ, ৫০ কেজির ক্যাটেগরি থেকেই ডিসকোয়ালিফায়েড হয়ে যাচ্ছেন তিনি।
এই ঘটনার পরেই বিশ্বজুড়ে চর্চায় চলে আসেন তিনি। কেউ বলেন ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন তিনি, কেউ বা বলেন বিনেশেরই দোষ ছিল ওই অতিরিক্ত ১০০ গ্রাম না কমাতে পারার পিছনে।
এদিকে, সাধারণত ৫৩ কেজির ক্যাটেগরিতে খেলে আসা বিনেশ এবার ৫০-এ নামার কারণে, ওই অতিরিক্ত ওজনটুকু কমাতে তাঁকে প্রাণপাত পরিশ্রম করতে হয়েছে প্রতিটি ম্যাচের আগেই। শেষ ফাইনালের আগেও তাঁর ওজন ছিল ৫২ কেজি।
সেই ওজন কমাতে সারারাত ধরে প্রাণপণে চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু ১.৯ কেজি কমাতে পারলেও, শেষ ১০০ গ্রাম আর পারেননি। তবে খাবার, জল না খেয়ে, ক্রমাগত ঘাম ঝরিয়ে এই ওজন কমাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাঁকে।
এই টানাপড়েনের মাঝে অবসর ঘোষণা করলেন বিনেশ। তাঁর পোস্ট দেখে জল এসেছে গোটা দেশের। কুস্তিকে বিদায় জানিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন তিনি। বলেছেন, শক্তি, সাহস, স্বপ্ন- কিছুই আর বাকি নেই। তাই ছুটি নিলেন, কেরিয়ারের লড়াই থেকে।
বৃহস্পতিবার সকালে এক্স হ্যান্ডেলে বিনেশ লিখেছেন, 'মা কুস্তির কাছে হেরে গেলাম। মা তোমার স্বপ্ন, আমার স্বপ্ন সব শেষ হয়ে গিয়েছে। আমার আর শক্তি নেই। কুস্তি তোমাকে বিদায়। ক্ষমা করে দিও তোমার কাছে ঋণী থাকব।'
ওই খবর পেয়ে বিনেশের কোচ মহাবীর সিং ফোগাট বলেন, বলার মতো কিছু নেই। কী বলব। গোটা দেশের আশা ছিল সোনা পাবে। তা আর হল না। এদিকে, দেশের ক্রীড়াবিদদের একাংশ মনে করছেন, ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিনেশ।
কিন্তু বিনেশের মনের খবর কেউ রাখেনি। কতটা হতাশা জন্মালে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, তা হয়তো লড়াইয়ে ছিটকে যাওয়া মানুষরাই অনুধাবন করতে পারেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন